করোনা থেকে বাঁচতে ক্লোরোকুইন ফসফেট খেয়ে মৃত এক ব্যক্তি
করোনা থেকে বাঁচতে ক্লোরোকুইন ফসফেট খেয়ে মৃত এক ব্যক্তি
করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে নিজেকে বাঁচাতে ক্লোরোকুইন ফসফেট খেয়ে নেন অ্যারিজোনা ফোনেক্সের এক ব্যক্তি। যার ফলে অকালেই মারা গেলেন তিনি। ওই মৃত ব্যক্তির স্ত্রীও একই কাজ করেছেন এবং সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
ট্যাঙ্ক পরিস্কার করার ক্লোরেকুইন খেয়ে মৃত
জানা গিয়েছে, মাছেদের ট্যাঙ্ক পরিস্কার করার জন্য এই ক্লোরোকুইন ফসফেট ব্যবহার করা হয়। সাফাই কর্মীদের কাছে ওষুধের মতোই ক্লোরোকুইন রয়েছে, যদিও সেটা আলাদা পদ্ধতিতে তৈরি করা। ফোনেক্সের ব্যানার হেল্থ কেয়ার পয়জন কেন্দ্রের চিকিৎসক ডাঃ ড্যানিয়েল ব্রুকস সকলের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ যেন তাঁরা না খান। তিনি বলেন, ‘শেষ বিষয়টি হল যা আমরা এখন চাই তা হল এমন সব রোগীদের সঙ্গে কাজ করা যাঁরা মনে করছেন যে করোনা থেকে বাঁচার সমাধান রয়েছে, যদিও তা ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আমাদের জরুরি বিভাগ তাঁদের সঙ্গে কাজ করবে।'
করোনা নিরাময়ে হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইনের প্রমাণ কম মিলেছে
ম্যালেরিয়ার ওষুধে করোনা ভাইরাস নিরাময় হচ্ছে বিশ্বজুড়ে, এ ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে একেবারেই ক্ষীণ। কিন্তু যাদের বাতের রোগ রয়েছে তাদের পক্ষেও এই ওষুধ পাওয়া এখন সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লোরোকুইন ও একই ধরনের ড্রাগ হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন এর আগে করোনা ভাইরাস নিরাময়ের ক্ষীণ আশা দেখিয়েছিল। কিন্তু এই দুই ড্রাগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিশাল, এই একটা কারণেই বৈজ্ঞানিকরা এই ওষুধদুটির কোনও সেরকম প্রমাণ না পাওয়ায় তা প্রয়োগ করতে নিষেধ করছেন। জরুরি সময়েও যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করে জানান যে হাইড্রোঅক্সিক্লোরেকুইন জীবনদায়ী ওষুধ মেডিসিনের ইতিহাসে খেলা বদল করতে পারে এবং জরুরি সময়ে তা ব্যবহার করা যেতে পারে, তারপরও বিশেষজ্ঞরা ঝুঁকি নিতে ভয় পাচ্ছেন।
নিরাপদ নয় হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন
যদিও জানা গিয়েছে যে কিছু ফরাসি চিকিৎসক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এই হাইড্রোঅক্সিক্লোরেকুইন ব্যবহার করতে চাপ সৃষ্টি করছেন। ফরাসি শহর নাইসের মেয়র ক্রিস্টিয়ান এসট্রোসি সোমবার টিভিতে বলেন, ‘আমি আমার চিকিৎসার ষষ্ঠ দিনে রয়েছি এবং আমার মনে হচ্ছে আমি সুস্থ হয়ে উঠছি।' যদিও এতসবের পরও বিজ্ঞানীরা মানুষকে সতর্ক করে জানিয়েছেন যে কোনও ভুয়ো আশ্বাসে বিশ্বাস না করতে এবং করোনা ভাইরাসের জন্য যে এই ওষুধ নিরাপদ ও কার্যকর তার জন্য অনেক গবেষণার দরকার।
২টি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
১৯৩০ সাল থেকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয় এই ক্লোরোকুইন। এক দশক পর ক্লোরোকুইনের পাশাপাশি আসে হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন, যার একটু হলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এটি আগে জেনেরিক ফর্মে বিক্রি হলেও পরে তা প্ল্যাকুইনিল ব্র্যান্ডের অন্তর্গত চলে আসে এবং তা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে একই সঙ্গে এই হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন হৃদযন্ত্রের ছন্দপতনের সমস্যা, মারাত্মকভাবে কম রক্তচাপ ও পেশি বা স্নায়ুর ক্ষতিও করতে পারে। প্ল্যাকুইনিলের লেবেলে সতর্ক হিসাবে বলা হয় অতিরিক্ত ডোজ দিলে চোখের রেটিনা নষ্ট করে দিতে পারে।