'উচ্চবর্ণ'-এর বালতি ছোঁয়ার শাস্তি, পিটিয়ে মারা হল অন্তঃসত্ত্বা দলিতকে
৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দলিত মহিলাকে পিটিয়ে মারল তথাকথিত উচ্চ বর্ণের 'ঠাকুর'। নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে।
৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দলিত মহিলাকে পিটিয়ে মারল তথাকথিত উচ্চ বর্ণের 'ঠাকুর'। নৃশংস এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে। ওই মহিলার 'অপরাধ', তিনি ভুল করে জলভরা বালতি ছুঁয়ে ফেলেছিলেন। সাবিত্রীদেবী নামে ওই মহিলাকে গত ১৫ই অক্টোবর মারধর করা হয়। দিন সাতেক পর মৃত্যু হয় তাঁর। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত অঞ্জু ঠাকুর ও তাঁর ছেলের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৫ই অক্টোবর বুলন্দশহরের খেতলপুর গ্রামে অঞ্জু ঠাকুরের বাড়ির কাছে কাজ করছিলেন কাগজ কুড়ানি সাবিত্রীদেবী। সেসময়ে পাশ দিয়ে রিক্সা যাওয়ায় ভারসাম্য রাখতে না পেরে অঞ্জু ঠাকুরের জলের বালতির ওপর পড়ে যান সাবিত্রী। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করতে থাকেন অঞ্জু ঠাকুর। কিছুক্ষণের মধ্যেই অঞ্জুর ছেলে রোহিতও লাঠি দিয়ে মারধর করতে থাকেন সাবিত্রীকে। সেসময়ে সাবিত্রীর সঙ্গেই ছিলেন তাঁর ৯ বছরের মেয়ে। সেই দৌড়ে গিয়ে পাশের দলিত বস্তিতে খবর দেয় বলে জানিয়েছেন সাবিত্রীর প্রতিবেশী কুসুমা দেবী। কোনওমতে সাবিত্রীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর স্বামী।
কিন্তু বাইরে থেকে কোনও চোট আঘাত না থাকায় জেলা হাসপাতাল তাঁকে ভর্তি নেয়নি বলে অভিযোগ। এরপর সাবিত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসা হলে, তাঁর পেটে ও মাথায় প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয়। সাবিত্রীর স্বামী জানিয়েছেন, কেন সাবিত্রীকে মারধর করা হল তা জানতে চাওয়া বলে অঞ্জু তাঁকেও মারধর করে তাড়িয়ে দেন। এরপরই তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি। পুলিশ প্রথমেই তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করালে কোনও চোট আঘাত পাওয়া যায়নি। ফলে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। কিন্তু ২০ অক্টোবর গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে তাঁরা আসল ঘটনা জানতে পেরে অঞ্জু ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার এসএইচও তপেশ্বর সাগর।
এরপর ২১শে অক্টোবর সাবিত্রীর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, সাবিত্রীর মাথায় আঘাত লেগেছিল কিন্তু পেটে আঘাত পাওয়ায় ওইদিনই তাঁর গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত অঞ্জু ঠাকুর ও তাঁর ছেলে রোহিত।