স্ট্র্যাটেজিস্ট নাম না পসন্দ, নিজেকে রাজনৈতিক সহযোগী বলে দাবি, বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা নিয়ে কী বললেন পিকে
বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা নিয়ে কী বললেন পিকে
বাংলায় বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে বাজিমাৎ করেছেন প্রশান্ত কিশোর। আইপ্যাকের কর্ণধার প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না। তবে নিজেেক স্ট্র্যাটেজিস্ট বলতে নারাজ তিনি। নিজেকে তিনি ভোট সহযোগী বলে দাবি করেছেন প্রশান্ত কিশোর। গত কয়েকদিন ধরেই তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেটা তিনি খারিজ করে দিয়েছে। এই রকম কোনও জল্পনা নেই বলে জানিয়েছে প্রশান্ত কিশোর।
তৃণমূলের জয় তাঁর রণকৌশলেই
প্রথম জীবনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভোটকুশলী ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর রণকৌশলের জেরেই গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছিলেন মোদী। তারপর আর বিজেপির সঙ্গে তেমন সুসম্পর্ক তৈরি হয়নি। ধীরে ধীরে জেডিইউর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছিল প্রশান্ত কিশোরের। নীতিশকুমারের ভোট কুশলী হয়েছিলেন তিনি। এমনকী জেডিইউতে যোগও দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নীতীশের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরে। এবং তিনি জেডিইউ ছেড়ে ভারও ভোটকুশলীর ভূমিকায় ফিরে আসেন। এবার তাঁর সাহায্য নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। গোটা দেশে গেরুরা ঝড়ে মধ্যে বাংলায় সবুজের সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার বড় চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর রণকৌশলেই শেষ পর্যন্ত বাংলায় পরাস্ত হয় বিজেপি।
বিজেপিতে যোগদান নয়
গোয়ায় গিয়ে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তারপরেই জল্পনা উড়তে শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাহলে কি এবার ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর। এই জল্পনার অবসান ঘটিয়েছেন ভোটকুশলী নিজেই। তিনি বলেছেন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কোনএ পরিকল্পনাই নেই তাঁর। তিনি বলেছেন তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা রয়েছে ঠিকই তবে তার জন্য তিনি কোনও ভাবই বিজেপিতে যোগ দেবেন না। তিনি দাবি করেছেন জনতাদল ইউনাইটেডে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। তখনই বুঝেছিলেন রাজনীতিক হিসেবে তিনি কাজ করতে পারবেন না। অর্থাৎ কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে তিনি কাজ করতে পারবেন না। তার চেয়ে রণকৌশল নির্ধারণ করাটাই তার পক্ষে সুবিধাজনক। কোনওদিনই বিজেপির রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে তাঁর মতাদর্শ মিলবে না বলে দাবি করেছেন প্রশান্ত কিশোর।
স্ট্র্যাটেজিস্ট নাম পছন্দ নয়
প্রশান্ত কিশোরকে স্ট্র্যাটেজিস্ট বলেই দাবি করে চলেছেন সকলে। কিন্তু ভোট কুশলী নিজেকে স্ট্র্যাটেজিস্ট বলতে নারাজ। তিনি দাবি করেছেন, স্ট্র্যাটেজিস্ট তিনি নন। উল্টে নিজেকে রাজনৈতিক সহযোগী বলতেই বেশি পছন্দ করেন তিনি। কারণ কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোটে জয় পেতে সহযোগিতা করেন তিনি। একে রাজনৈিতক সহযোগী বলাই বেশি পছন্দের তাঁর। তিনি রাজনৈতিক সহযোগী হিসেবেই সেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য প্রশান্ত কিশোরকে ২০২৪-র লোকসভা ভোট পর্যন্ত সঙ্গে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
কংগ্রেসকে নিয়ে অসন্তোষ
একাধিকবার প্রকাশ্যে কংগ্রেসকে নিশানা করেছেন প্রশান্ত কিশোর। ২০২১-র বিধানসভা ভোটের পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধীএবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তারপরেই উত্তর প্রদেশ ভোট নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কাজ করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর কিন্তু সেই কাজ ভাল হয়নি। কংগ্রেসের বিপুল পরাজয় হয়েছিল। তাই নিয়ে কংগ্রেসের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। গোয়া থেকে প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেসকে নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন রাহুল গান্ধী মনে করেন মোদীকে দেশবাসী নিজে থেকেই সরিয়ে দেবে। কিন্তু সেটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। যতক্ষণ না মোদীর যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রকাশ্যে আসছে। রাহুল গান্ধী যতটা হাল্কা ভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিচ্ছে ততটা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।