#UnionBudget2016: বাজেট নিয়ে কী বলছেন রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা?
নয়াদিল্লি, ২৯ ফেব্রুয়ারি : সংসদে কেন্দ্রীয় বাজেট ২০১৬-১৭ পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বাজেটে করছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা অপরিবর্তিতই রইল।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, বিরোধীরা বারবার এই সরকারকে 'স্যুট বুট কি সরকার' বলে খোঁচা দিয়েছে। এই বাজেটের মাধ্যমে সেই ধারণাই ভাঙার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে মোদী সরকার। এই বাজেটে কৃষক ও কৃষিক্ষেত্রেই মূলত জোর দেওয়া হয়েছে, এবং এই বাজেট সংস্কারমূলক বলে মোদী সরকারের পক্ষে দাবি করলেও এ বাজেট অর্থনীতিকে কতটা চাঙ্গা করতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে অর্থনীতিবিদদের একাংশ। [#UnionBudget2016 : কোন জিনিসের দাম বাড়ল-কমল, দেখে নিন একনজরে]
আসুন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক কে কী বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
কৃষিক্ষেত্র, কৃষক, মহিলা, এবং গ্রাম্য এলাকায় বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য এই বাজেটে আমি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে অভিনন্দন জানাই। ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুন করার পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ২০১৮ সালের মধ্যে গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার যে অঙ্গীকার নিয়েছি তার প্রতিরূপ রয়েছে এই বাজেটে। এই বাজেট থেকে সীমান্তে কর্তব্য পালন করা নিরাপত্তা বাহিনী জওয়ানরাও উপকৃত হবেন। আমাদের পূর্ব সরকার প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ জোর দিয়েছিল, আমরা আরও এগিয়ে উচ্চমানের শিক্ষায় জোর দিচ্ছি। আয়করের জটিলতা থেকে মুক্তি পাবে সাধারণ মানুষ। আমি দেশবাসীকে আশ্বাস দিতে চাই, এই বাজেট দেশবাসীর স্বপ্নের কাছাকাছি আছে।
পি চিদাম্বরম, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী
এই বাজেট দিশাহীন। এই বাজেট রাজনৈতিক হবে আশা করেছিলাম, তাই হয়েছে। আমি একেবারেই অবাক হইনি। কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল অর্থমূল্য বা দাম। আমার মনে হয় গতবছর কৃষকরা প্রতারিত হয়েছিল। গরীবদের স্বার্থে এই বাজেটে অনেক আঁটঘাঁট লুকিয়ে রয়েছে। আমি জানতে চাই এই বাজেটে কারা খুশি। করদাতারা? বাজার? মধ্যবিত্ত শ্রেণী? আমার তো মনে হয় না।
আহমেদ পটেল, আইএনসি নেতা
বিমা ঠিক আছে কিন্তু কৃষি ও স্বাস্থ্যে বিনিয়োগ ব্যায়ের ক্ষেত্রে কোনও বিকল্প নেই। রপ্তানি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি নিয়ে নীরবতা আমাকে অবাক করেছে।
জয়ললিতা, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী
এই বাজেটের এমন কোনও প্রকল্প বা নির্দিষ্ট কোনও ঘোষণা নেই যার ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্র সহ রাজ্যগুলি উৎসাহ পাবে। গত বছর যে প্রকল্পগুলি ঘোষণা করা হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন বা কী অবস্থায় রয়েছে তা নিয়েও কিছু বলা হয়নি। তামিলনাড়ুর মানুষের এই বাজেট থেকে অনেক আশা ছিল, যা পূর্ণ হয়নি।
রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী
এই বাজেট কৃষক, গরীবদের পক্ষে এবং সংস্কারের পক্ষে বাজেট। এই বাজেট এই সরকারের প্রাধান্য এবং প্রধানমন্ত্রীর দিশাকে তুলে ধরেছে। এই বাজেট অর্থনৈতিক ভিত্তিকে আরও শক্ত করতে সাহায্য করবে এই বাজেট। একইসঙ্গে দেশের পকিকাঠামো নেটওয়ার্ককেও বিস্তৃত করবে। এই বাজেটে বলা হয়েছে বিপিএল তালিকাভুক্তদের স্বাস্থ্যবিমা ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আনা হচ্ছে। এই পদক্ষেপই ইঙ্গিত দিচ্ছে এই সরকার গরীব ও দুঃস্থদের কথা ভাবে। এছাড়াও এমন কিছু ঘোষণা করা হয়েছে এবং কিছু সংস্থান রাখা হয়েছে যা উৎপাদন ক্ষেত্রকে উৎসাহিত করবে এবং নয়া কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।
তৃণমূল কংগ্রেস
আমাদের কাছে অন্য কোনও বিকল্প নেই এই বাজেটকে হতাশাজনক বলা ছাড়া। শিল্পক্ষেত্রে কোনও আশা নেই, কৃষকদের জন্য কোনও আশা নেই, গরীবদের জন্য কোনও আশা নেই, মধ্যবিত্তের জন্য কোনও আশা নেই। আশা নেই সেনসেক্সের জন্যও। এই বাজেট গঠনমূলক নয়, না সৃজনমূলক। এই বাজেট নিয়মমাফিক।
দীনেশ ত্রিবেদী, তৃণমূল কংগ্রেস
এই বাজেট উন্নয়ন বা বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে না, না তো শিল্পের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
বীরভদ্র সিং, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী
স্বচ্ছ ভারত, রাস্তা, এমএনজিইআরএ -তে অতিরিক্ত বরাদ্দ এই ধরণের কিছু ঘোষণাগুলি ভাল। এছাড়া এই বাজেট খুবই সাধারণ বাজেট। আশা ছিল বৈপ্লবিক কোনও বাজেট হবে। তেমনটা হল না।
নীতিশ কুমার, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী
সরকার বলছে কৃষি ও কৃষকদের উন্নতি হবে, তবে যে বাজেট অরুণ জেটলি পেশ করেছেন তাতে নির্দিষ্টভাবে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না।
দেবেন্দ্র ফাডনবিশ
এই বাজেট দেশের উন্নয়নের পক্ষে, দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এই বাজেট উপযোগী।
মল্লিকার্জুন খার্গে, লোকসভার বিরোধী নেতা
এই বাজেট একমাত্র সরকারের ঘণিষ্ঠ শিল্পপতিদের জন্য। আর কারোর জন্য নয়।
ডি রাজা, সিপিআই
এই বাজেটে চমকপ্রদ কিছুই নেই।
লালুপ্রসাদ যাদব, রাষ্ট্রীয় জনতা দল
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুন হয়ে যাবে। কিন্তু এর নিশ্চয়তা কোথায়? আসলে সরকার ২০২২ সাল পর্যন্ত নিজেদের জায়গা নিরাপদ রাখতে চাইছে। কিন্তু সরকার ২০১৯ সালেই ধসে যাবে।
সেলিম
অর্থনৈতিক চ্যাালেঞ্জ গ্রহণে ব্যর্থ সরকার।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
মধ্যবিত্তের কথা ভাবা হয়নি এই বাজেটে।
কমল নাথ, কংগ্রেস
দুর্ভাগ্যবশত, এই বাজেটে যা যা থাকা উচিত ছিল তার কিছুই নেই এই বাজেটে।
যশবন্ত সিং, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী
হ্যাঁ, অর্থমন্ত্রী পরীক্ষায় পাশ করেছেন। এই বাজেটে সবার জন্যই কিছু না কিছু রয়েছে। আপনি যদি ধনীদের থেকে কিছু নিয়ে গরীবদের দেওয়ার কাজ করছেন তাহলে তো সেটা ভাল।
শশী থারুর, কংগ্রেস
বাজেটের খুব সাধারণ একটা চিত্র তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী। ইউপিএ সরকারের অনেক পুরনো নীতি অবলম্বন করেছেন।