বিজেপি বিরোধিতা ছাড়া কিছু নেই, ফ্রন্টের লাগবে ইতিবাচক কিছু
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধী বিজেপি জোট ধরে রাখতে গেলে ইতিবাচক কিছু প্রয়োজন।
কর্ণাটকের ভোট পথ দেখিয়েছে। নরেন্দ্র মোদির অশ্বমেধের ঘোড়া কে আটকে দেওয়া গেছে। আর এতে ২০১৯-এ বিজেপিকে পরাস্ত করার রাস্তা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছে আঞ্চলিক থেকে জাতীয় বিজেপি বিরোধী সব দলই। একটাই মন্ত্র, সবাইকে জোটবদ্ধ ভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি বিরোধী ভোটকে এক জায়গায় জড়ো করতে হবে। তবে এ জোটের ভবিষ্যত নিয়ে সন্দিহান বিশ্লেষকরা।
এ নিয়ে দারুণ উৎসাহিত আঞ্চলিক দলগুলি। বি এস ইয়েদুরাপ্পার সরকারের পতনের সম্ভাবনা দেখা দিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী থেকে শুরু করে, অন্ধের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, আরজেডির তেজস্বী যাদব বিএসপি প্রধান মায়াবতী, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, ডিএমকে নেতা এস কে স্তালিন, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রত্যেকেই বিজেপি তথা মোদী-অমিত শাহ জুটির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। ফলে বিজেপি বিরোধী একটি জাতীয় জোট গড়তে যে সবাই আগ্রহী তা বোঝা যাচ্ছে।
কিন্তু এই নেতাদের মতো অতটাও উৎসাহিত নন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বরং তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন জোটের ভবিষ্যত নিয়ে। তাঁদের দাবি এ জোট মোটেই মজবুত নয়, বরই লজ্ঝড়ে। তাঁরা বলছেন জোট - রাজনীতি ভারতে নতুন নয়। ২০১৫তেই ১০ কোটি জনসংখ্যার বিহারে বিজেপিকে হারিয়েছিল জেডি (ইউ) - আরজেডি জোট। কিন্তু গত বছরই দুর্নীতির অভিযোগে সে সরকার ভেঙে যায়। বিজেপি জেডিইউ-এর সঙ্গে ক্ষমতা দখল করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় জোটের দলগুলির নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বেই ভেঙে যায় জোট। এর অন্যতম কারণ হিসেবে তাঁরা চিহ্নিত করছেন জোটের দলগুলির নীতিহীনতা। সত্যি বলতে জোটগুলির কোনও অর্থনৈতিক নীতি নেই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁদের অবস্থানও নির্দিষ্ট কিছু নেই। তার এপর কংগ্রেস কর্ণাটক রাজ্যের ক্ষেত্রে মাথা নত করে জোটে সামিল হলেও পরবর্তিকালে একই অবস্থানে থাকবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। জাতীয় দল হিসেবে আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি বারুক এটা তারা নিশ্চই চাইবে না।
তবে এই মুহুর্তে জোটকে বেশ ঐক্যবদ্ধ লাগছে, তার একমাত্র কারণ প্রতিটি দলের চরম বিজেপি বিরোধিতা। এই প্রবল বিরোধী মনোভাবই তাদের এক সুতোয় গেথেছে এখন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুধুমাত্র এই নেতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গী দিয়ে বেশিদিন জোট ধরে রাখা যাবে না। যদি সত্যি সত্যিই জোট গড়তে হয়, দলগুলিকে শীঘ্রই নিজেদের মধ্যে বসে কিছু ইতিবাচক দিক তুলে আনতে হবে। নইলে জোটের ভবিষ্যত এর আগেও যেমন সঙ্গীন ছিল, সেরকমই থাকবে।