সিপিআইএম-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত ত্রিপুরার চারিলাম! এক বাম সমর্থকের মৃত্যুর পরে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়
সিপিআইএম-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত ত্রিপুরার চারিলাম! এক বাম সমর্থকের মৃত্যুর পরে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড়
সিপিআইএম-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত পশ্চিম ত্রিপুরার সিপাহীজালার চারিলাম। বুধবার হওয়া সংঘর্ষে এক বাম সমর্থয়কের মৃত্যু হয় এবং অন্তত কুড়ি জন আহত হন। তাঁদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। এরপরেই এলাকায় ধরপাকড় শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
যুদ্ধক্ষেত্র চারিলাম
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সিপিআইএম এবং বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয় চারিলাম। এই ঘটনায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় বাম সমর্থন শহিদ মিয়ার। বুধবারের ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজনকে আগরতলার একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন সিপিআইএম বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ভানুলাল সাহা এবং জেলা নেতা প্রদেশ রায়।
পুলিশের পদক্ষেপ
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় দুদলের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের তরফে তিনটি এফআইআর করা হয়েছে। সংঘর্ষে যুক্ত বাকিদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা। সংঘর্ষের সময় পুলিশ কর্মীদের ওপরে হামলার অভিযোগে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা নথিভুক্ত করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের ওপরে হামলার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
হামলা, পাল্টা হামলার অভিযোগ
রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা চারিলামের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিআইএম নেতা ভানুলাল সাহা বলেছেন, বিভিন্ন দাবিতে বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিতে শত শত সিপিআইএম সমর্থক চারিলামের পার্টি অফিসে জড়ো হয়েছিলেন। সেই সময় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাঠি ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালায় এবং বোমা ছোঁড়ে। যদিও সিপিআইএম-এর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন, চারিলামের বিধায়ক তথা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছেন, আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে হিংসায় নেতৃত্বে দিয়েছেন ভানুলাল সাহা। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, সিপিআইএম-এর হামলায় তাদের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিজেপি মুখপাত্র অভিযোহ করেছেন, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিপিআইএম-সহ বিরোধী দলগুলি ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি করছে।
ঘটনার নিন্দায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
আগরতলার জিবিপি হাসপাতালে আহত দলীয় কর্মীদের দেখতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ত্রিপুরায় জঙ্গলরাজ চলেছে। বিরোধী দলগুলির কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও তিনি করেছেন। গত চার-পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সাধারণ মানুষ উপযুক্ত জবাব দেবেন বলেও মনে করেন তিনি।
ত্রিপুরায় সন্ত্রাসের স্থান নেই
আগরতলার ডিবিপি হাসপাতালে ভর্তি সংঘর্ষে আহত বিজেপি সমর্থকরাও। তাদের দেখতে গিয়ে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন, বুধবার সিপিআইএম সমর্থিত দুষ্কৃতীরা পূর্ব পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। ত্রিপুরায় সন্ত্রাস ও হিংসার কোনও স্থান নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এই ধরনের হিংসার ঘটনা ঘটনো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্যের মানুষ এই ধরনের ঘটনার জবাব দেবে বলেও দাবি করেছেন ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী।
'মোদীর আগে ইডির হানা ভোটমুখী রাজ্যে', বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ কেসিআর কন্যার