করোনা ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিয়ে আট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কী বললেন মোদী, দেখে নিন
মঙ্গলবার কোভিড ভ্যাকসিন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সহ আটটি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক সারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকে তিনি ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও দ্রুত উপলব্ধ উভয় বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে বলেন, 'ভারত তার নাগরিকদের যে ভ্যাকসিনই প্রয়োগ করুক না কেন তা যেন সব বৈজ্ঞানিকভাবে সুরক্ষিত হয়। আমাদের অগ্রাধিকার হল সকলের জন্য ভ্যাকসিন যাতে উপলব্ধ হয়। রাজ্যগুলি ঠাণ্ডা সংরক্ষণ স্থান সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’ এদিন আটটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ও ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন। বেশ কিছুদিন ধরে যখন দেশজুড়ে সংক্রমণের হার ৫০ হাজারের নিচে রয়েছে, সেখানে দিল্লি সহ বেশ কিছু রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রের। মোদী বৈঠকে জানিয়েছেন করোনা টেস্ট বাড়াতে হবে। এই বৈঠকের আরও দশটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এক নজরে দেখে নেওয়া যাকঃ


ভ্যাকসিনের সুরক্ষা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘ভ্যাকসিন দ্রুত উপলব্ধের পাশাপাশি সুরক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ, ভারতের নাগরিকদোর যে ভ্যাকসিনই দেওয়া হোক না কেন তা যেন বৈজ্ঞানিকভাবে সুরক্ষিত হয়। রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে ভ্যাকসিন সরবরাহের কৌশল তৈরি করতে হবে। ঠাণ্ডা সংরক্ষণ ঘরের ব্যবস্থা এখন থেকে শুরু করে দিক রাজ্যগুলি।'

ভ্যাকসিন প্রথম কারা পাবে
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খুব স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে প্রথম ভ্যাকসিন পাওয়ার অধিকার সামনের সারির স্বাস্থ্য কর্মীদের। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে পাবেন পুলিশের কর্মীরা সহ অন্যান্যরা এবং তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছেন ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে যাদের বয়স তারা এবং চতুর্থ পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাবেন কো-মরবিড পরিস্থিতিতে যাঁরা রয়েছেন।'

বৈঠকে কোন কোন রাজ্য
এই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়েছিল কোভিড-১৯ ক্ষতিগ্রস্ত আটটি রাজ্য। সেগুলি হল মহারাষ্ট্র, কেরল, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়।

করোনা ভাইরাস টেস্ট
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এই বৈঠকে জানিয়েছেন যে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ফলাফল সসময় যথাযথ আসেনা। রাজ্যে যদিও সব টেস্ট হচ্ছে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে এবং দৈনিক ৩০ হাজারের বেশি টেস্ট হয় রাজ্যে। রাজস্থান এও জানিয়েছে যে বাজি নিষিদ্ধ সহ মাস্ক ব্যবহারের আইন, রাত্রিকালীন কার্ফু সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

দিল্লির পরিস্থিতি
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রাজ্যে ক্রমবর্ধমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির জন্য বায়ু দূষণকে দায়ি করেছেন এবং প্রতিবেশী রাজ্যে খড় পোড়ানো বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন। কেজরিওয়াল বৈঠকে বলেন, ‘দিল্লিতে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পেছনে বহু কারণ রয়েছে। যার মধ্যে দূষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।'

রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করেন। রাহুল সম্প্রতি সরকারের ভ্যাকসিন ইস্যু নিয়ে নন্দায় সরব হন। নাম না নিয়ে মোদী রাহুল গান্ধীকে উল্লেখ করে বলেন, ‘রাজনীতি করছেন ভ্যাকসিন নিয়ে।'

কি বললেন রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে
মোদী বৈঠকে বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না যে কবে ভ্যাকসিন আসবে। এটা আমাদের হাতে নেই, এটা সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিকদের হাতে যাঁরা এটা নিয়ে কাজ করছেন। তবে কিছুজন এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন। রাজনীতি খেলার জন্য কাউকে কোনওভাবেই থামানো যায় না।'

দিল্লির পরিস্থিতি
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে দিল্লিতে কোভিঢ-১৯ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে ৪,৪৫৪টি কেস ধরা পড়েছে এবং করোনা টেস্টও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। জাতীয় রাজধানীতে দৈনিক মৃত্যু ১২১-এর নীচে কমছে না, যা মোট মৃত্যুর সংখ্যাকে নিয়ে গিয়েছে ৮,৫১২-তে। গত ১২দিনে টানা ছ'দিন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা একশোরও বেশি দেখা দিয়েছে।

মোদীর নির্দেশ
মঙ্গলবারের বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভ্যাকসিনের দ্রুততম নিয়ন্ত্রক ছাড়পত্র এবং সময়মতো সংগ্রহের জন্য একটি সময়সীমা অ্যাকশন পরিকল্পনার নির্দেশনা জারি করেছিলেন। সরকার ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যকর্মী ও সামনের সারির যোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করছে এবং ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য যা যা সরঞ্জাম প্রয়োজন তা সরবরাহ করছে।

দেশের করোনা পরিস্থিতি
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৩৭,৯৭৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যা সোমবারের চেয়ে ১৩ শতাংশ কম। এই সময়ের মধ্যে দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮০ জনের। সোমবার যা ছিল ৫১১। মোট করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা ৯১.৭৭ লক্ষ এবং ১,৩৪,২১৮ জনের মৃত্যু।
শুভেন্দু-গড়ে পদত্যাগের ইচ্ছাপ্রকাশ অনুগামীর! একুশের আগে বিড়ম্বনা বাড়ছে তৃণমূলে