কী হবে রণকৌশল, রাজধানীতে উত্তর প্রদেশের ৪০ সাংসদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক মোদীর
ফোকাস উত্তর প্রদেশের বিধানসভা ভোট। তাই আর কোনও দিকে না তাকিয়ে যোগীর প্রশাসনের উপর পাখির চোখ রেখেছেন নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার রাজধানী দিল্লিতে উত্তর প্রদেশের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রাতঃরাশে এই বৈঠক সারেন তিনি। সেই বৈঠকে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা ভোটের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক
সামনেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। কিন্তু বিজেপি বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিন্তু বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন উত্তর প্রদেশকে। যোগীর শাসন কায়েম রাখতে একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করে চলেছেন তিনি। সেখানে মাসে ২ থেকে তিনবার সফর করতে দেখা যাচ্ছে মোদীকে। উত্তর প্রদেশের বিশেষ নজর দেওয়ায় সেখানকার সাংসদ থেকে বিধায়ক সকলের উপরেই বিশেষ নজর রয়েছে মোদীর। সেকারণেই শুক্রবার রাজধানী দিল্লিতে একেবারে সক্কাল সক্কাল উত্তর প্রদেশের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ৪০ জন বিজেপি সাংসদ উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে।

কী নিয়ে আলোচনা
উত্তর প্রদেশের ৪০ জন সাংসদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে মানেই সেখান ভোট নিয়ে আলোচনা হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সেটাই হয়েছে। কোন রণকৌশলে লোকসভা কেন্দ্রগুলিতে বিধানসভা গুলির কাজ এগোবে তাই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে উত্তর প্রদেশে ৩১২টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। একেবারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। ৪৭টি আসন পেয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি পেয়েছিল ১৯টি আসন। আর কংগ্রেসের ভাগ্যে জুটেছিল মাত্র ৫টি। এবার কংগ্রেসকে একেবারে ধুয়ে মুছে সাফ করে গিতে মরিয়া বিজেপি। উত্তর প্রদেশে উন্নয়নে বন্যা বইয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। একের পর এক প্রকল্পের উদ্বোধন করে মোদী সরকার বারবার বার্তা দিয়েছেন বিজেপি ছাড়া উন্নয়ন কেউ করতে পারবে না। ২০২৮-র লোকসভা ভোটের আগে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা ভোটে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে বিজেপি শিবির। কারণ সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার রাজ্য উত্তর প্রদেশ। উত্তর প্রদেশে ভোটে জিততে পারলে ২০২৪-র ভোট ব্যাঙ্ক দখলের লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে বিজেপি।

একের পর এক প্রকল্পের উদ্বোধন
যোগী আদিত্যনাথ নিজে দাবি করেছেন উত্তর প্রদেশে এবার ৩৫০-র বেশি আসন পাবে বিজেপি। কাজেই জয় তার নিশ্চিত। আবার গেরুয়া শিবিরই সরকার গড়বে উত্তর প্রদেশে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এমনই দাবি করেছেন তিনি। সেকথা মাথায় রেখেই কুশীনগরে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্বোধন থেকে শুরু করে এক্সপ্রেস ওয়ের উদ্বোধন। তাও আবার সেই এক্সপ্রেস এয়েতে হেলিকপ্টারে অবতরণ করে মোদী বুঝিয়ে দিয়েছেন কতটা উন্নত মানের সড়ক নির্মাণ করছে তার সরকার। তারপরেই কাশীতে বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধন। একের পর বড় উদ্বোধন করে মোদী বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপিই পারে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। উত্তর প্রদেশে দ্রুত টিকাকরণেও জোর দেওয়া হচ্ছে।

কাশীই রোড ম্যাপ দেশের উন্নয়নে
বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধনে একের পর এক চমক দিয়েছেন মোদী। ক্রুজে গঙ্গা বক্ষে সফর। তারপর গঙ্গায় স্নান সেরে হেঁটে বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো। সেদিন রাত ১টাতে আবার মেট্রো স্টেশনে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। উত্তর প্রদেশ জয়ে কোনও ফাঁক রাখতে রাজি নন তিনি। বাংলায় বিধানসভা ভোটের বিপুর পরাজয় হয়েছে বিজেপির। তার পরেই উত্তর প্রদেশে জয় টিকিয়ে রাখতে বাড়তি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোদী সরকার। মেয়রদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বার্তা দিয়েছেন কাশীর উন্নয়নই গোটা দেশে উন্নয়নের রোজ ম্যাপ তৈরি করে দেবে। কাশী ছাড়াও উত্তর প্রদেশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির তুরুপের তাস অযোধ্যার রামমন্দির। সেদিকেও বিশেষ নজর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
