বন্যায় কেরলে ৫০০ কোটি টাকার সাহায্যের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর,মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩০০
কেরলের বন্য়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেরলের বন্য়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সকালে কোচিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে একথা জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে আপতকালীন পরিস্থিতিতে মৃতদের পরিবারকে ২০০,০০০ টাকা এবং গুরুতর আহতদের ৫০,০০০ টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি।
In Kerala, I took stock of the situation arising in the wake of the devastating floods across the state.
— Narendra Modi (@narendramodi) August 18, 2018
Joined a review meeting and undertook an aerial survey to assess the damage caused by flooding.
The nation stands firmly with Kerala in this hour. pic.twitter.com/PFeWTTZAwl
শনিবার সকালেই তিরুঅনন্তপুরম থেকে কোচিতে চলে আসেন নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে প্রথমে আকাশপথে বন্যা পরিদর্শনের কথা থাকলেও তা বাতিল করে তিনি বৈঠকে বসেন। যাতে উপস্থিত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, রাজ্যপাল সাথাশিবম এবং রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী থেকে শুরু করে তিন বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ আধিকারীরিকরা।
PM conducted aerial survey to get first-hand knowledge about flood. Our helicopter could not go to some places due to inclement weather. He has announced Rs500 crore&all possible help. We thanked him & demanded more helicopters & boats: Kerala CM Pinarayi Vijayan on #KeralaFloods pic.twitter.com/kdy9wsJdvj
— ANI (@ANI) August 18, 2018
এই বৈঠকেই ৫০০ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণার পরই আকাশপথে বন্যা পরিদর্শনে বের হন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং রাজ্যপাল।
পরে প্রধানমন্ত্রী জানান পরিস্থিতি মোকাবিলায় এনডিআরএফ, বিএসএফ, সিআইএসএফ, রাফ নামানো হয়েছে। এরা সকলেই নানাভাবে উদ্ধারকাজে এবং দুর্গত এলাকায় যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কাজ করছেন। এমনকী কেরলের একটা অংশে বায়ু সেনা ও নৌসেনা, কোস্ট গার্ডও কাজ করে চলেছে। বিভিন্ন স্থানে যে সব মানুষ গুরুতর অবস্থায় জলবন্দি হয়ে আছে তাদের আগে নিরাপদ স্থানে সরানোটাই লক্ষ্য বলেও জানা ন নরেন্দ্র মোদী।
#WATCH Navy delivers relief material to stranded people in a flooded area of Kochi. #Keralafloods pic.twitter.com/dC8Lp78e8q
— ANI (@ANI) August 18, 2018
কেরলের বন্যা পরিস্থিতিতে আর্থিক সাহায্যের সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকারী দলকেও পাঠিয়েছে ওড়িশা। যার মধ্যে রয়েছেন ২২৫জন দমকল কর্মী, ৭৫টি লাইফ সেভিং পাওয়ার বোটের সঙ্গে ১৫ জন সুপারভাইজার। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফেও কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২ কোটি টাকা দান করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর ইরোডে থেকে শুক্রবার বিকেলে কেরলের বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় ২.৮ লক্ষ পানীয় জল পাঠানো হয়।
Visuals of flooding and submerged houses from Chengannur. #KeralaFloods pic.twitter.com/ldG0zAp28J
— ANI (@ANI) August 18, 2018
সামান্য হলেও কিছু কিছু জায়গা থেকে স্বস্তির খবর মিলেছে। কোচির পুলিনচোদু-তে ১ফিট করে জল কমেছে বলে জানা গিয়েছে। জলের স্তরে কিছুটা কমতি এসেছে কোম্পানিপ্যাডি ও কালামাসেসারি-তেও। কেরলের দুর্গত পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তেলেঙ্গানাও। সেখান থেকে আজ প্যাকেটবন্দি খাবার কেরলে পাঠানো হয়। তবে আলাপ্পুঝায় বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সেখানকার থান্নিমুক্কুম-এ জলের স্তর আরও বাড়ছে বলে খবর। চেঙ্গানুরের পানদানারে নৌসেনা শনিবার সকাল থেকে অন্তত ২০০ জনকে উদ্ধার করেছে।
#WATCH: Rapid Action Force (RAF) personnel distribute relief material to stranded people in flood affected Palakkad's Mangalam Dam village. #KeralaFloods pic.twitter.com/2WvqDsflrn
— ANI (@ANI) August 18, 2018
কেরলে বন্যায় প্রভাবিত ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এদের মধ্যে অনেককেই ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবু এখন বহু স্থানে জলবন্দি হয়ে রয়েছে মানুষ। চেঙ্গান্নুরের মান্নার শহরে অন্তত ১০ হাজার লোক জলবন্দি। বন্যায় এই শহরে ঢোকার সমস্ত রাস্তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর যে ৩.৩ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ মানুষেরই ভিটে-মাটি জলে ধুয়ে গিয়েছে। আলাপ্পুঝা শহরের ভিতরে জল ঢুকে পড়েছে। এই শহরে এখন কোথাও কোথাও বুক সমান জল। এই পরিস্থিতি শুক্রবার শহরের মধ্যে নৌকা নামিয়ে চলে উদ্ধার কাজ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে পাঠানো হয়েছে ত্রাণ সাহায্য। ১৩০০ লাইফ জ্যাকেট, ৫৭১টি লাইফবয়, ১০০০ রেনকোট, ১৩০০ গামবুট, ১২০০- রেডি টু ইট মিল, ১৫০০টি ফুড প্যাকেট, ২৫টি মোটোরাইসড বোট-সহ আরও বিভিন্ন সরঞ্জাম কেরলে পাঠানো হয়। কেরলে বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে নৌসেনার জাহাজও নামানো হয়েছে। শুক্রবারই মুম্বই থেকে আরও একটি নৌসেনা জাহাজকে কেরল উপকূলের উদ্দেশে পাঠানো হয়। কোচিতে নৌসেনা ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৩১৫ জন। এর মধ্যে ৩৫ জন পরে তাঁদের নিকটবর্তী আত্মীয়দের বাড়িতে চলে গিয়েছে।
Special aircraft of Indian Army reaches Thiruvananthapuram with food and basic amenities for flood affected areas. #KeralaFloods pic.twitter.com/33zudY6d6n
— ANI (@ANI) August 18, 2018
এদিকে, ডিজিসিএ জানিয়েছে তিরুঅনন্তপুরমমুখী বা তিরুঅনন্তপুরম থেকে আসা ৩২টি রুটের বিমান ভাড়ায় নজরদারি রাখা হয়েছে। এই রুটগুলিতে যাতে বিমানভাড়া স্বাভাবিক রাখা হয় তার জন্য বিমান পরিষেবা দেওয়া সংস্থাগুলো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিরুঅনন্তপুরম, এরনাকুলাম ভায়া আলাপ্পুঝা দিয়ে বিশেষ ৩২টি ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছে রেল। শুক্রবার থেকে কর্ণাটক ও কেরলের মধ্যে যাতায়াত করা ১৭টি ট্রেনকে বাতিল করে দেওয়া হয়। ৮টি ট্রেনের গন্তব্যস্থল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২টি ট্রেনের রুট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।