দু'বার সফর বাতিলের পর আজ শেষ পর্যন্ত অসম যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
শেষ পর্যন্ত অসম যাচ্ছেন প্রানমন্ত্রী। আজ অসমের কোকরাঝাড়ে বোড়ো শান্তি চুক্তি উজ্জাপন করতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে অসমে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ চলায় বাতিল হয়েছিল মোদীর সফর।
এর আগে দুই বার অসম সফর বাতিল করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
এর আগে টানা সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল অসম। গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে দুই বার পরিকল্পনা ঘোষণা হলেও অসম সফর বাতিল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে অসমে এক সফর ও বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তা বাতিল করেছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। যদিও সেবার নির্দিষ্ট কারণ নিয়ে মুখ খোলেনি প্রধানমন্ত্রীর দফতর। সেই ঘটনার পর এই প্রথম অসম সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই স্বভাবতই এই সফর নিয়ে টানটান উত্তেজনা সব ক্ষেত্রেই। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে আশান্বিত রাজ্যের শাসকদল।
সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৫ জন
সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে এতটাই উত্তাল হয়ে উঠেছিল উত্তর-পূর্বের রাজ্যটি যে আইনের বিরোধিতার ফলস্বরূপ অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল নিজের বাড়িতেই ঘেরাও হয়েছিলেন। অশান্তির ঘটনায় পাঁচজন প্রাণও হারিয়েছিলেন।
সফরের আগে সংসদে উত্তর-পূর্ব নিয়ে বক্তব্য রাখেন মোদী
এদিকে বৃহস্পতিবারই সংসদে বোড়ো শান্তি চুক্তি ও উত্তর-পূর্ব নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, 'শেষ পাঁচ বছরে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে দিল্লির দূরত্ব কমে এসেছে। আগে উত্তর-পূর্বের মানুষের কাছে দিল্লিকে খুব দূরের বলে মনে হত। আজ তাদের দ্বারে দ্বারে দাঁড়িয়ে আছে কেন্দ্রের প্রকল্প ও উন্নয়ন। বিদ্যুৎ হোক, রেল বা বিমানবন্দর, মোবাইল সংযোগ, আমরা এই সমস্ত বিষয়ে উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি।'
বোড়ো শান্তি চুক্তি নিয়ে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী
বোড়ো ইস্যু সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা বোড়ো চুক্তি সই করে সেই অঞ্চলে শান্তি আনার চেষ্টা করছি। বোড়ো ইস্যু সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে এই শান্তি চুক্তি প্রথমবার হয়নি। আমরা বলিওনি যে এটি প্রথমবারের মতো হয়েছে। আমরা বলছি, অনেক চেষ্টা হয়েছে, কিছু এখনও চলছে, তবে যা ঘটেছিল (আগে), রাজনীতি মাথায় রেখেই হয়েছিল। আর আমরা সেই এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্যে এসব করছি।'
কয়েকদিন আগেই স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক বোড়ো শান্তি চুক্তি
কয়েকদিন আগেই স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক বোড়ো শান্তি চুক্তি। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, ১৯৮৬ সাল থেকে চলা অসমের অশান্তি ও বিচ্ছিনতাবাদ শেষ হবে। কেন্দ্র নিষিদ্ধ সংগঠনের দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্ববানন্দ সোনোয়াল উপস্থিত ছিলেন। পৃথক বোড়োল্যান্ড রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির সংগঠনের মূল দাবি থেকে সরে আসার কথা সংগঠনগুলি মেনে নেওয়ায় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
দীর্ঘ রক্তপাতের পর শান্তির পথে অসম
গতবছরের ২৫ নভেম্বর অসমের বোড়ো জনগোষ্ঠীদের বিদ্রোহী সংগঠন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অফ বড়োল্যান্ডের উপর আরও পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। ১৯৯০ সালে প্রথমবার এই সংগঠনটির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এরপর থেকে প্রতি পাঁচ বছর অন্ত এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর সংগঠনটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় কেন্দ্র।