শিনা বোরা কাণ্ডে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার পিটার মুখার্জী, নজরে এই চার তথ্য
মুম্বই, ২০ নভেম্বর : শিনা বোরা হত্যাকাণ্ড রহস্য গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দেওয়ার পর কিছুটা থিতিয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছি এই রহস্য হত্যা তদন্ত। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় শিনার হত্যায় মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখার্জীর স্বামী পিটার মুখার্জী। তথ্যগোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। [ শিনা বোরা হত্যা কাণ্ড: খুন হওয়ার সময় ইন্দ্রাণীর 'খুব খুব ঘণিষ্ট' এক ব্যক্তির সন্তান শিনার গর্ভে ছিল!]
কিন্তু শুক্রবার এই তদন্তে নয়া মোড় আসে যখন পিটার মুখার্জীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়। শিনার হত্যা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণীর বিরুদ্ধে যে যে ধারা আনা হয়েছিল, সেই একই ধারা আনা হয়েছে পিটারের বিরুদ্ধে।
শিনা বোরা হত্যা কাণ্ডের তদন্তে সর্বশেষ যে চারটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সামনে এসেছে
পিটার অনেক কিছুই জানেন এবং জানতেন
মিডিয়া সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সিবিআই-এর জেরার মুখে অত্যন্ত চতুরতা দেখাচ্ছিলেন পিটার। সেখান থেকেই সিবিআইয়ের সন্দেহ তীব্র হয়, এবং পরিণতি গ্রেফতার। সিবিআই তদন্তাকারী আধিকারিকদের প্রশ্নের বিভ্রান্তিকর উত্তর দিচ্ছিলেন পিটার বারবার। [শিনার দাদুই কি শিনার বাবা?]
অন্যদিকে একটি ইংরাজি দৈনিক সংবাপত্রের কথায়, জেরার মুখে ইন্দ্রাণী একাধিকবার ভেঙেছেন। এবং পিটার যে এই খুনের বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন সে বিষয়ে ইন্দ্রীণী একাধিক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। [(ছবি) শিনা বোরা হত্যা কাণ্ড নিয়ে ছবি তৈরি হলে কাকে কোন চরিত্রে নেওয়া হতে পারে!]
দ্য হিন্দু পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, পিটার যে শুধু শিনার হত্যার বিষয়ে জানতেন তা নয়, শিনা যে ইন্দ্রাণীর বোন নয় বরং মেয়ে তাও ২০০৩ সালে ইন্দ্রাণীর সঙ্গে তার বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই জানতেন পিটার। গুয়াহাটির বাসিন্দা ইন্দ্রণীর বাবা-মা যখন তাঁর দুই ছেলেমেয়ে শিনা ও মিখেইলের জন্য আর্থিক সাহায্যের জন্য চিঠি লিখেছিলেন ইন্দ্রাণীকে তা প্রথমে পিটারের কাছেই এসে পৌঁছেছিল। ['আমার মা-ও ইন্দ্রাণী মুখার্জীর মতো একাধিক পুরুষের শয্যাসঙ্গী', দুঃখপ্রকাশ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের]
আর্থিক কলকাঠি
ডিএনএ সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, শিনা হত্যাকাণ্ডে বিশাল সম্পত্তি যোগের কারণেও পিটারকে গ্রেফতার করা হতে পারে। কারণ আগেই তদন্তে সামনে এসেছিল পিটার এবং ইন্দ্রাণী ৮৭ কোটি টাকার একটি ঋণ নিয়েছিলেন। যার অর্ধেক টাকা মাত্র আইএনএক্স মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের শেয়ার কিনতে খরচ হয়েছিল।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
শিনা বোরা হত্যা কাণ্জের তদন্তে আর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল পুলিশের ভূমিকা। সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রের আইপিএস আধিকারিকরা এখন সিবিআই-এ কড়া নজরে রয়েছে। কিন্তু কোন কোন আধিকারিককে সিবিআই সন্দেহ করছে সে নামগুলি স্বাভাবিকভাবেই সামনে আনা হয়নি। [ঠিক কী কারণে শিনাকে খুন করে ইন্দ্রাণী? জেনে নিন ড্রাইভারের বয়ান]
প্রাক্তন আইপিএস কর্তাদের একাংশের মতে, এটা নিশ্চিত নয় যে মুম্বই পুলিশ পিটারকে রক্ষা করার চেষ্টা করছিল, তবে এটা অবশ্যই স্পষ্ট যে তদন্তের ক্ষেত্রে পিটার মুখার্জী সন্দেভাজন হলেও যে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল তা নেওয়া হয়নি। মুম্বই পুলিশকে এর জন্য অবশ্যই জবাব দিতে হবে। [ শিনাকে খুন করে শাড়ি পরিয়ে, ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে গাড়িতে নিয়ে যান ইন্দ্রাণী]
পিটারের কৌশুলি নিয়ে দ্বন্দ্ব
বৃহস্পতিবার রাতে পিটারকে গ্রেফতারের পর, আজ, শুক্রবার পিটারকে আদালতে তোলা হবে। কিন্তু আদালতে পিটারের কৌশুলি কে হবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
পিটারের আইনজীবী মহেশ জেঠমালানি জানান পিটারের গ্রেফতারের ঘটনায় তিনি আশ্চর্য। তিনি মেসেজের মাধ্যমে পিটারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সন্ধ্যায়। তখন পিটার বলেন পরে তিনি তার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। [ শিনা বোরা হত্যাকাণ্ড : সব জেনেও চুপ ছিলেন পিটার মুখার্জী?]
কিন্তু জেঠমালানির কথায়, পরে পিটারের বোন রাতের দিকে তাকে পিটারের গ্রেফতার হওয়ার খবর জানান। "আমি পিটার মুখার্জীর মামলা লড়ছি না। জানি না আদালতে ওর পক্ষে কে সওয়াল করবেন। "