নির্ভয়া দোষীদের ফাঁসি দিতে তিহার জেলে এলেন পবন জল্লাদ, এদিকে আটকে গেল ফাঁসি
নির্ভয়া–কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়া চার জনের ফাঁসির আদেশ কার্যকর করতে বৃহস্পতিবার মেরঠ থেকে তিহার জেলে এসে পৌঁছেছেন পবন জল্লাদ। ১ ফেব্রুয়ারি নির্ভয়া দোষীদের ফাঁসি দেওয়ার কথা ছিল। সেইমতো শুক্রবার জেলে ফাঁসির মহড়াও দেন পবন। তবে এদিন বিকেলে আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে শনিবার ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে না।

পবন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে নির্ভয়া মামলায় দোষী চার জনকে ফাঁসি দিতে তিনি প্রস্তুত ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'যখন ওই দোষীদের ফাঁসি হবে তখন আমি তো বটেই, নির্ভয়ার মা–বাবা এবং দেশের প্রতিটি মানুষই তৃপ্ত হবেন। এই ধরনের লোকজনের ফাঁসিই হওয়া উচিত।’ দিল্লির আদালত ওই চার জনের নামে নতুন করে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি সেই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছিল। দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হল বিনয়, অক্ষয়, পবন ও মুকেশ। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে একটি বাসের মধ্যে ২৩ বছরের এক তরুণীকে গণধর্ষণ ও নৃশংস ভাবে খুনে অভিযুক্ত এই চার জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
গত বছর ১০ ডিসেম্বর বক্সার থেকে দশটি ফাঁসির দড়ি আনা হয় তিহার জেলে। ওই চার অপরাধীর গলার মাপও নেওয়া হয়ে গিয়েছে। গত ২২ জানুয়ারি সেখানে ফাঁসির মহড়াও হয়ে যায়। মহড়ার জন্য চারটি বস্তা নেওয়া হয়েছিল। চারটি বস্তায় পাথর–বালি প্রভৃতি ভরা হয়। এক একটি বস্তার ওজন নির্দিষ্ট করা হয় এক এক জন অপরাধীর ওজনের সমান করে। তারপরে সেগুলিতে 'ফাঁসি’ দেওয়া হয়। জেলের মধ্যে ওই চার জন অপরাধীকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ রাখার চেষ্টা করছেন জেল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা নিয়মিত ভাবে ওই অপরাধীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। দোষীরাও আইনের ফাঁক গলে নানা ভাবে সময় কিনতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্টে তাদের সব আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে তারা এখন একে একে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষার আবেদন করে চলেছে।
এতে অবশ্য সারা দেশের মানুষের পাশাপাশিই বিরক্ত ও হতাশ নির্ভয়ার মা। তাঁর প্রশ্ন, সাত বছর ধরে এই টানাপড়েন চলছে, এখনও কেন কার্যকর হল না ফাঁসির সিদ্ধান্ত। তাঁর অভিযোগ, ফাঁসি পিছোনোর জন্যই রোজ নিত্য নতুন বাহানা তৈরি করে একের পর এক আবেদন করে চলেছে অপরাধীরা। এই বিষয়টি নিয়ে তিহার জেলও ভাবনাচিন্তা করছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, একসঙ্গে সকলকে ফাঁসি দেওয়ার বদলে এক এক করে দেওয়া হবে অপরাধীদের ফাঁসি। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে এক জন অপরাধী প্রাণভিক্ষার আর্জি জানালেই বাকিদের ফাঁসিও পিছিয়ে যাচ্ছে।