নির্ভয়ার দোষীদের ফাঁসিতে ঝোলানোর পুরস্কার দিয়ে মেয়ের বিয়ে দেবেন পবন জল্লাদ
মঙ্গলবারই দিল্লি আদালতের পক্ষ থেকে নির্ভয়া গণধর্ষণ ও খুনেরর চার সাজাপ্রাপ্তদের মৃত্যু পরোয়না জারি করা হয়েছে। আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় তাদের ফাঁসি দেওয়া হবে। এরপর থেকেই তিহারে শুরু হয়েছে তোড়জোর। তিহার কর্তৃপক্ষ ফাঁসুড়ে চেয়ে মেরঠে চিঠি পাঠিয়েছিল। সেই চিঠির প্রেক্ষিতেই উত্তরপ্রদেশের জেল কতৃপক্ষ বেছে নেয় পবন জল্লাদকে। আর এই কাজের জন্য তাঁকে নিযুক্ত করায় বেশ খুশি পবন।
পবনের বক্তব্য
পবন এই বিষয়ে বলেন, 'আমি বর্তমানে প্রায় নিঃস্ব। আমি যদি তিহারে ওই চার দোষীকে ফআঁসিতে ঝৌলাই কবে সরকার আমাকে এক লক্ষ টাকা দেবে। আমার এই টাকাটা খুবই প্রয়োজন কারণ আমার মেয়ের বিয়ে আসন্ন।' ৫৭ বছর বয়সী পবন আরও বলেন, 'আমি বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে এই সুযোগটার অপেক্ষায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত ভগবান আমার প্রার্থনা শুনলেন।'
তৈরি রয়েছেন পবন
পবন বলেন, 'আমি নিজেকে ২২ জানুয়ারির জন্যে তৈরি রাখছি। আমাকে আধিকারিকরা নির্দেশ দিয়েছে যাতে আমি যে এর মধ্যে যে কোনও দিন আমাকে তারা তিহারে নিয়ে যাবেন। আমাকে সেখানে আগেভাগে যেতে হবে কারণ অনেক অনুশীলন প্রয়োজন। ফাঁসির দিন যাতে সব ঠিক ভাবে হয় সেটা সুনিশ্চিত করতে হবে।'
বর্তমানে আর্থিক অবস্থা ভালো নয় পবনের
এরপর নিজের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে পবন বলেন, 'আমি মাসে মাত্র ৫০০০ টাকা করে পাই। শুধু ফাঁসি দিয়েই আমার জীবনযাপন করতে হয়। আমার মেয়ে বড় হয়েছে, তার বিয়ে দিতে হবে। আমার পৈত্রিক বাড়ির অবস্থাও খুব শোচনীয়। সেটার মেরামতির জন্যেও আমার টাকা চাই। এই ফাঁসি দিয়ে যেই এক লক্ষ টাকা আমি পাব তা আমাকে নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে সাহায্য করবে।'
তোড়জোর শুরু তিহারে
জানা গিয়েছে, তিহারের জেল নম্বর ৩ এ সম্পন্ন করা হবে ৪ দোষীর ফাঁসির সাজা। সেখানেই ৪ জন দোষীকে একসঙ্গে ফাঁসিকে সাজা দেওয়া হবে , বলে জানিয়েছে তিহারের সূত্র। জানা গিয়েছে, জেলে ফাঁসির ফ্রেম ও দড়ির সঙ্গে আনা হয়েছে জেসিবি। যার দ্বারা মনে করা হচ্ছে ফাঁসির প্রক্রিয়া খুব শিগগিরিই সম্পন্ন হবে। অন্যদিকে, তিহারের সুড়ঙ্গ নিয়েও কাজ চলছে। প্রসঙ্গত, এই সুড়ঙ্গ দিয়েই মৃতদেহ ফাঁসির পর তোলা হয়।
৭ বছর কেটে গিয়েছে
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানী দিল্লির সড়কে একটি বাসের মধ্যে নারকীয় গণধর্ষণ চালানো হয় এক তরুণীর উপর। বাসে বছর তেইশের নির্ভয়াকে গণধর্ষণ, ভয়াবহ মারধর এবং যৌন অত্যাচার করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল ছ'জন। এরপর বহুদিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ার পরে অবশেষে সেই বছরই ২৮শে ডিসেম্বর মৃত্যু হয় নির্ভয়ার। আর গোটা দেশ তাঁকে 'নির্ভয়া ' নামের পরিচিতি দেয়। সেই নির্ভয়াকাণ্ডের ৭ বছর কেটে গিয়েছে। অভিযুক্ত ওই ছয়জন কে যৌন নিপীড়ন ও হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন নাবালক, এবং অন্য একজন তিহার জেলেই আত্মহত্যা করেন।