খুনি কে? চিনিয়ে দিল টিয়াপাখি!
উসনে মারা, উসনে মারা!
টিয়াপাখিই বলে দিল মালকিনের খুনি কে! যে খুনের ঘটনার সমাধানে পুলিশ থই খুঁজে পাচ্ছিল না, সেই ঘটনা এক মুহূর্তে দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেল।
ব্যাপারটা কী?
আগ্রায় থাকেন বিজয় শর্মা। স্ত্রী নীলম ছাড়াও সংসারে ছিল একটি কুকুর এবং একটি টিয়া। কিছুদিন আগে নৃশংসভাবে খুন করা হয় নীলমকে। নীলমের শবের পাশে মৃত অবস্থায় পড়েছিল কুকুরটিও। পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু সূত্র পায়নি। স্ত্রীয়ের খুনিদের সন্ধান করতে না পেরে মুষড়ে পড়েছিলেন বিজয় শর্মা।
এর পরই ঘটনায় নাটকীয় মোড়। খাঁচাবন্দি টিয়াপাখিটি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। নীলম নিজে হাতে খেতে দিত পাখিটিকে। মালকিন মারা যাওয়া সে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়। গুম মেরে বসে থাকত খাঁচায়। হঠাৎ একদিন বাড়িতে এল বিজয়বাবুর ভাইপো আশু। কাকা কেমন আছে, খোঁজখবর নিতে। আশুর গলার আওয়াজ শুনেই ডানা ঝটপট শুরু করল টিয়া। দ্র্রুত খাঁচার ভিতর চক্কর কাটতে লাগল। আশু খাঁচার কাছে আসতেই চিৎকার শুরু করে দিল।
প্রথমে ততটা খেয়াল করেননি বিজয় শর্মা। কিন্তু এর পর যতবার আশু আসে, একই আচরণ করে পাখিটি। হঠাৎ বিজয় শর্মার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায়। বাড়িতে যে যে পরিচিতরা সাধারণত আসে, তাদের নাম এক-এক করে বলতে থাকলেন তিনি। নাম শোনে আর ঘাড় বেঁকিয়ে টিয়া তাকায়। দু'বার 'আশু আশু' বলতে শুরু হল টিয়ার ডানা ঝটপট আর খাঁচার ভিতর চক্কর কাটা। সন্দেহের সেই দানা বাঁধা শুরু।
আবার যথারীতি আশু এল। পোষা টিয়াকে জিজ্ঞাসা করলেন বিজয়, "কিসনে মারা, কিসনে মারা?"
টিয়ার পাখি নিজের ভাষায় জবাব দিল, "উসনে মারা, উসনে মারা।"
ব্যস, আর যায় কোথায়? বিজয় শর্মার চিৎকার-চেঁচামেচিতে জুটে গেল পাড়ার লোক। খবর গেল পুলিশে। পুলিশ এসে দু'ঘা দিতেই সব গড়গড় করে বলে দিল আশু। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশেই সে দলবল নিয়ে খুন করেছে নীলমকে। কুকুরটা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মালকিনকে বাঁচাতে। রাগের চোটে কুকুরটাকেও তাই মেরে ফেলেছে। মরার আগে কুকুরটি এক কামড়ে আশুর হাত থেকে মাংস তুলে নিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, সেই দগদগে ঘা এখনও সারেনি।
কাকীমাকে খুনের দায়ে এখন জেলে আশু। আর টিয়াপাখির স্মৃতিশক্তি দেখে অবাক পুলিশ।