পাকিস্তানের ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হল, এটি আসলে কী
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার মাসুল গুনতে হল পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের কাছে থেকে কেড়ে নেওয়া হল মোস্ট ফেভারড নেশনের মর্যাদা।
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার মাসুল গুনতে হল পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের কাছে থেকে কেড়ে নেওয়া হল মোস্ট ফেভারড নেশনের মর্যাদা। কামানের গোলায় নয়, পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবেই জবাব দেওয়ার পথেই হাঁটল ভারত। কিন্তু এই মোস্ট ফেভারড নেশন স্ট্যাটাস কী? এক কথায় এটি হল এক অগ্রাধিকার, যা তিনটি চুক্তির দ্বারা আবদ্ধ।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অধীনস্থ দেশগুলি সাধারণত তাদের ব্যবসায়িক অংশীদারদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না। কাউকে বিশেষ সুবিধা না দিয়ে সমস্ত সদস্য দেশকে একই কাজ করতে হবে। এই নীতি অর্থাৎ মোস্ট ফেভারড নেশন সংক্ষেপে এমএফএন-এর মাধ্যমে কোনও দেশকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।
সেইমতো বাণিজ্য পরিচালনার জন্য শুল্ক ও বাণিজ্য (জিএটিটি) সংক্রান্ত সাধারণ চুক্তি, এমএফএন ও ট্রেড ইন জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্রেড অ্যান্ড সার্ভিসেস (জিএটিএস) এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অধিকারের বাণিজ্য সংক্রান্ত দিকগুলির চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এই তিনটি মিলিত চুক্তির উপর বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়।
সেইমতো ১৯৯৬ সালে পাকিস্তানকে বিশেষ মর্যাদা দান করে ভারত। কিন্তু প্রতিবেশী পাকিস্তান সেই মর্যাদা রাখেনি। ভারতের সঙ্গে বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে, পাকি-মদতে জঙ্গি হামলার ঘটনা তো একছার। তাই উরি হামলার পরেই এই এমএফএন মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু পুলওয়ামা হামলার পর আর দেরি করল না কেন্দ্রীয় সরকার। কালবিলম্ব না করে পাকিস্তানের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে কূটনৈতিকভাবে বার্তা দিল, রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পাকিস্তানকে দেওয়া স্ট্যাটাস প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে। পাকিস্তানকে মোস্ট ফেভারড নেশনের তকমা দেওয়া হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। ২৩ বছর পর সেই স্ট্যাটাস ফিরিয়ে নেওয়া হল।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার পদক্ষেপ নিচ্ছে বিদেশমন্ত্রক। পাকিস্তান হামলাকারী ও জঙ্গি হামলার মদতকারীদের সমর্থন করছে। তার ফল তো ভুগতেই হবে। পকিস্তান এবার বুঝবে ভারতে হিংসা ছড়ানোর ফল কী হয়। এছাড়া তিনি জানান, শহিদ জওয়ানদের পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
উল্লখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশে সন্ত্রাসের থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ জন সিআরপিএফ জওয়ান। এরপরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে কেন্দ্র। এদিন সকালে দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক একটি বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। সেই বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি প্রমুখ।