পাক চক্রান্তেই কাশ্মীর অশান্ত! বিস্ফোরক দাবি লস্কর জঙ্গির
বন্দী এলইটি জঙ্গির দাবি পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রে সন্ত্রাসবাদের পথে পা বাড়াচ্ছে কাশ্মীরের যুবকরা। সে জঙ্গিদের কাছে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসার আহ্বানও জানায়।
কাশ্মীরে জঙ্গিরা ভুল পথে চলছে। ভারতীয় সেনারা তাদের মারতে নয়, বাঁচাতে চান। কিন্তু সন্ত্রাসবাদের পথে যেসব কাশ্মীরীরা পা বাড়াচ্ছেন, তাদের ভুল বোঝাচ্ছে পাকিস্তান। এরকমই বিস্ফোরক সব দাবি করলেন এক আটক লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি।
আইজাজ গুজরিকে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়। তার আগে গত ৩০-এ এপ্রিল তিনি বারামুলায় তিনজন অসামরিক লোককে হত্যা করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ হেফাজতে রেকর্ড করা এক স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন আটকের সময় সেনাবাহিনী তাকে হত্যা করতে পারত। কিন্তু পরিবর্তে সেনা তার জীবন বাঁচিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে কাশ্মীরের 'ভুল রাস্তায়' চলা অন্যান্য সন্ত্রাসবাদীদের তাদের বাড়ি ও পরিবারে ফিরে যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন এই 'প্রাক্তন' লস্কর জঙ্গি।
ভিডিওতে তিনি বলেন, অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার মানে বাড়িঘর ও জীবন, সব হারিয়ে ফেলা। তাঁর মতে এতে পরিবারের লোকজনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। তিনি আবেদন জানান, জঙ্গিরা জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসুক। তাঁর মুখে উঠে এসেছে এক সন্ত্রাসবাদী নাসির আমিনের নাম। তাকে উদ্দেশ্য করে গুজরি বলেন, 'নাসির আমিনকে জানাতে চাই, তার মা খুব অসুস্থ। তার মায়ের কাছে ফিরে আসা উচিত।'
কিন্তু
কি
এমন
হল,
যে
গুজরি
পুরো
ঘুরে
গেলেন?
৩০
এপ্রিল
তো
খুব
দূরের
ঘটনা
নয়।
গুজরি
জানিয়েছে,
ভারতীয়
সেনা
সম্পর্কে
তাদের
অন্যরকম
ধারণা
ছিল।
কিন্তু
গ্রেফতারের
সময়
থেকে
তার
সেই
ভুল
ভেঙেছে।
আর
তাইই
তিনি
অন্যান্য
কাশ্মীরী
জঙ্গিদের
ভুলটাও
ভাঙাতে
সক্রিয়
হয়েছেন।
কি
ঘটেছিল
তার
গ্রেফতারির
দিনে?
গুজরি
স্বীকার
করেছেন,
লস্কর-ই-তৈবা
সন্ত্রাসবাদীরাই
সেদিন
সেনাকে
লক্ষ্য
করে
গুলি
বর্ষণ
শুরু
করেছিল।
কিন্তু
বাহিনী
তার
প্রত্যুত্তর
দেয়নি।
সে
বলেছে,
'আমি
একটি
ঝোপে
লুকিয়েছিলাম।
সেখান
থেকেই
আমাকে
গ্রেফতার
করা
হয়।
চাইলে
সেনাবাহিনী
আমাকে
মেরে
ফেলতে
পারত।
কিন্তু
বদলে
তারা
আমার
জীবন
রক্ষা
করে।'
পাশাপাশি কাশ্মীরীদের ভুল পথে চালনা করার পিছনে পাকিস্তানের বড় ভূমিকা আছে বলেও সে দাবি করেছে। গত ৩০-এ এপ্রিল উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে বড় সাফল্য পেয়েছিল ভারতীয় সেনা। সংঘর্ষে খতম হয়েছিল হিজবুল মুজাহিদীনের দুই বড় চাঁই সমীর টাইগার ও আকিব খান। গুজরির দাবি, এরপরই পাকিস্তান থেকে নির্দেশ এসেছিল জম্মু-কাশ্মীরের শান্তি বিঘ্নিত করার। সে বলে, 'যেদিন আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো, সেদিন পাকিস্তান থেকে আমাদেরকে উপত্যকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য বলা হয়েছিল। আমাদের বোঝানো হয়েছিল যে ভারতীয় সেনাবাহিনী উপত্যকায় নৃশংস আচরণ করছে। অথচ এটা সত্যি নয়। এটা পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র।'
গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলার খানপোরার ইকবাল মার্কেট এলাকায় চার সন্ত্রাসবাদীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মহম্মদ আসগর, আসিফ আহমদ শেখ ও হাসিব আহমদ খান। প্রত্যেকেই বারামুলার কক্কর হামাম-এর বাসিন্দা। ওই গুলিচালনার ঘটনাতেই জড়িত ছিলেন গুজরি। তাঁর এই ভিডিয়ো বার্তা কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে পুলিশ হেফাজতে দেওয়া স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে এর আগে বহুবার চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গুজরির মন-পরিবর্তনের পেছনেও সেই চাপ থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।