'হাজার গাছের মা'র পদ্মশ্রী-প্রাপ্তিতে উঠে এল শাশ্বত ভারতবর্ষ! খালি পায়ে আদিবাসী পোশাকে মঞ্চে তুলসি
হাজার গাছের মা' তুলসী গোড়া পেলেন পদ্মশ্রী
তাঁর কাজ কোনও সীমানা মানে না, গোটাবিশ্বের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি। বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত, গ্লাসগোয় বিশ্বের তাবড় জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে বসছেন। গত ছ'দশকেরও বেশি সময় ধরে গাছের চারা লাগিয়ে চলেছেন তিনি। এবার এই কাজের জন্যই ২০২০ সালের পদ্মশ্রী পুরষ্কার পেলেন 'অরণ্যের এনসাইক্লোপিডিয়া' নামে খ্যাত তুলসী গৌড়া।
তুলসীর জন্ম কর্নাটকের হান্নালি গ্রামে। আজ থেকে সাত দশক আগে জাতপাতের সমস্যা আরও প্রকট ছিল দ্রাবিড়ভূমে। হাল্লিকি নামক এক উপজাতির অন্তর্গত এক পরিবারে জন্ম হয়েছিল তুলসীর। মাত্র দু'বছর বয়সে হারিয়েছিলেন নিজের বাবাকে। তারপর থেকেই মায়ের সঙ্গে পরিশ্রমের জীবন শুরু। সংসার চালাতে মায়ের সঙ্গেই একটি নার্সারিতে কাজ করতেন তিনি। ছোট ছোট গাছদের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল জীবন। সবুজকে ভালবেসে ফেলেছিলেন তুলসী। আর সেই ভালোবাসার টানেই কিনা গত ছ'দশকে লাগিয়ে ফেলেছেন ৩০ হাজারেরও বেশি চারাগাছ। এই মুহূর্তে ৭৬ বছর বয়স তাঁর। তবে এখনও থামেননি। একাধিক পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
বলাই বাহুল্য, ছোটবেলা থেকে নার্সারিতে কাজ করার দরুণ প্রথাগত শিক্ষালাভ হয়ে ওঠেনি তাঁর। তবে কাজ করতে করতে হেন কোনও গাছগাছালি নেই, যাঁর সম্পর্কে জানেন না তুলসী। তাঁকে 'অরণ্যের এনসাইক্লোপিডিয়া'ও বলেন অনেকে৷ ২০২০ সালের পদ্মশ্রী পুরষ্কারে পুরস্কৃত হলেন তিনি। তুলসীর নাম ঘোষণা হওয়ামাত্রই হাততালিতে ফেটে পড়ল গোটা হলঘর। ধীরপায়ে হেঁটে প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নমষ্কার করেন তিনি। প্রত্যুত্তরে হাতজোড় করলেন মোদীও। তারপর তিনি হেঁটে এগিয়ে গিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে নিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার।