১.৫ লক্ষ শ্রমিক ঢুকবেন বিহারে, রাজ্যের কাছে এখন এটাই বড় চ্যালেঞ্জ
১.৫ লক্ষ শ্রমিক ঢুকবেন বিহারে, রাজ্যের কাছে এখন এটাই বড় চ্যালেঞ্জ
ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের এই লকডাউনের সময় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ বাসের আয়োজন করেছেন যাতে শ্রমিকরা নিজের নিজের রাজ্যে ফিরতে পারেন। ১.৫ লক্ষেরও বেশি শ্রমিক সোমবার বিহারে পৌঁছাবেন এবং অভাবনীয় পরিস্থিতির মধ্যে এই রাজ্যকে ফেলবে।
বিহারে নীতীশ কুমারের উদ্যোগ
২৫ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণার পরই পায়ে হেঁটেই ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা তাঁদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই বিশেষ ট্রেনে করে ৫৮ হাজার শ্রমিক বিহারে পৌঁছে গিয়েছেন। বিহার যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল তা হল পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাব ছিল যা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রচেষ্টায় ১০০ কোটি টাকা ত্রাণের জন্য বরাদ্দ করা হয়। তবে বড় কাজ হল নতুন যে সব শ্রমিকরা রাজ্যে ঢুকবেন তাঁদের ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে রাখা। লকডাউন যাতে কোনওভাবেই লঙ্ঘন না করা হয় সেই কারণে যোগী আদিত্যনাথের পদক্ষেপের পাশাপাশি বিহারের মুখ্যমন্ত্রীও শ্রমিকদের জন্য বিশেষ বাস ও পরিবহনের ব্যবস্থা করেছেন। বিহার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশেষ বাসগুলিকে আটকানো হবে না। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে যে লকডাইন চলছে তার মধ্যে নীতীশ কুমারের এই পদক্ষেপ কেন্দ্রের কাছে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিহার বড় সমস্যার মুখোমুখি
বিহারের জল সম্পদ মন্ত্রী সঞ্জয় ঝা জানিয়েছেন যে নীতীশ কুমার শনিবার বলেছিলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির মুখে দিল্লিতে যারা গুরুত্বপূর্ণ এবং আসন্ন বিপদ সম্পর্কে তাঁদের অবহিত করেছিলেন, তারাই শ্রমিকদের দিল্লি থেকে ঠেলে বের করে দিয়ে বিহারের কাছে বড় সমস্যার সৃষ্টি করেছে।' সঞ্জয় ঝা আরও বলেন, ‘ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের বিশেষ বাসে করে পাঠানো বোকামির পদক্ষেপ। এটা এই রোগের সংক্রমণকে আরও ছড়িয়ে দিতে পারে এবং এটা মোকাবিলা বা পরীক্ষা যারা করছে তাদের কাছে কঠিন সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।' মন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বিহারে আসা শ্রমিকদের এই বাস থেকে নামানো হচ্ছে। আমরা সেখানে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা পরিচালনার সহায়তায় তাঁদের রাত কাটানোর জন্য সেখানে বিশেষ শিবিরের বন্দোবস্ত করেছি।'
ভারত–নেপাল সীমান্তে রয়েছেন শ্রমিকরা
বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা ভিন রাজ্যে।র শ্রমিকরা বিহারকে বিশাল সমস্যার মধ্যে ফেলেছে। উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকরা নেপালের পাশে থাকা বিহারের ৩৮টি জেলার মধ্যে ২২ টি জেলার সীমান্তে রয়েছেন। ১,৭৫১ কিমি লম্বা ও বিভিন্ন খোলা জায়গা সহ ভারত-নেপাল সীমান্তকে পরিচালনা করা এই মুহূর্তে আরও বড় একটি কাজ। এরই মধ্যে রবিবার ৪০ হাজার ভিন রাজ্যের শ্রমিক বিহারে পৌঁছে গিয়েছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের মুখ্য সচিব প্রত্যয়া অমৃত বলেন, ‘সীমান্তে বিশেষভাবে তৈরি হওয়া ত্রাণ শিবিরের জন্য আমরা খাবার ও আশ্রমের বন্দোবস্ত করেছি। চিকিৎসকরা প্রত্যেককে স্ক্রিন করেছেন। এরপর সব শ্রমিকদের রাজ্য সরকারের ব্যবস্থা করা বিশেষ বাসে করে নিজের নিজের গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হবে।' তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের সরকারি স্কুল ও পঞ্চায়েত ভবনে কোয়ারান্টাইনে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে এবং এই কাজ করেছেন ব্লক ও পঞ্চায়েতের আধিকারিকরা।'