আমাদের বন্ধুত্ব মেনে নেয়নি, পরিবারই মেরেছে তরুণীকে, বিস্ফোরক দাবি হাথরাসের অভিযুক্তের
উত্তরপ্রদেশের হাথরাস কাণ্ডে এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এল। ১৯ বছরের দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ ও নির্মম অত্যাচার করা প্রধান অভিযুক্ত দাবি করেছে যে সে এবং অন্য তিন অভিযুক্তকে আক্রান্তের পরিবার ফাঁসিয়েছে কারণ ওই পরিবার তাদের সঙ্গে তরুণীর বন্ধুত্ব পছন্দ করত না।

পুলিশকে চিঠি প্রধান অভিযুক্তের
উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে লেখা এক চিঠিতে সন্দীপ ঠাকুর দাবি করেছে যে সে এবং ওই তরুণী একে-অপরের বন্ধু ছিল এবং মাঝে মাঝে তারা ফোনে কথা বলত। অভিযুক্ত সন্দীপ এও জানিয়েছে যে তরুণীর মা ও ভাই তাঁর ওপর অত্যাচার করত। ওই চিঠিতে চার অভিযুক্তের আঙুলের ছাপও রয়েছে।

তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পছন্দ ছিল না তাঁর পরিবারের
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ঘটনার দিন আমি তার সঙ্গে দেখা করতে ক্ষেতে গিয়েছিলাম। সেখানে তার মা ও ভাইও উপস্থিত ছিলেন। ও আমায় বাড়ি ফিরে আসতে বলে। আমি বাড়ি ফিরে গরুদের খাওয়াচ্ছিলাম। এরপর আমি পরে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পাই যে আমাদের বন্ধুত্বের কারণে ওকে বেধড়ক মারধর করে তরুণীর মা ও ভাই। যার জন্য গুরুতর আহত হয়ে পড়ে সে। আমি ওকে মারধর বা ওর সঙ্গে খারাপ কোনও কাজ করিনি। তরুণীর মা ও ভাই আমাকে ও আরও তিনজনকে মিথ্যাভাবে ফাঁসাচ্ছে এবং জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা নিরাপরাধ। আমরা অনুরোধ করব যে দয়া করে এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করা হোক এবং আমাদের বিচার দেওয়া হোক।' অভিযুক্ত জানিয়েছে যে তার সঙ্গে দেখা করার কারণেই তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলত সে।

বিজেপি নেতা–মন্ত্রীদের সমর্থন অভিযুক্তদের
হিন্দিতে এই চিঠি লেখা হয়েছে। এর একদিন আগেই বারাবাঁকির বিজেপি নেতা রঞ্জিত বাহাদুর শ্রীবাস্তব দাবি করেন যে উচ্চবর্ণের ওই চার ব্যক্তি নির্দোষ এবং দলিত তরুণী চরিত্রহীন। গত ২ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী অজিত সিং পাল এই গণধর্ষণ ও তরুণীর মৃত্যুকে ছোট ঘটনা বলে অ্যাখা দেন এবং এও জানিয়েছেন যে ওই তরুণীকে আদৌও গণধর্ষণ করা হয়নি। রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে হাথরাসের তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়নি।'

১০৪ বার ফোনে কথা
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এর আগেই জানিয়েছিলেন যে তরুণীর ভাই ও অভিযুক্ত সন্দীপের মধ্যে যোগাযোগ ছিল এবং তাদের মধ্যে ফোনে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত ১০৪ বার কথা হয়েছে। যদিও আক্রান্তের বাবা সব অভিযোগ খারিজ করে বলেছেন, ‘আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছি। আর এখন তারা আমাদেরকেই বদনাম করছে। আমরা ভয় পাই না। সব অভিযোগ মিথ্যা। আমরা কোনও ক্ষতিপূরণ বা টাকা চাই না। আমরা শুধু বিচার চাই।' প্রসঙ্গত, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯ বছরের দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করার পর নির্মমভাবে মারধর করে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে পালায় উচ্চবর্ণের চারজন ব্যক্তি। গত মঙ্গলবার দিল্লির হাসপাতালে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
'বিবেকানন্দের ছবি বাড়িতে টাঙানো থাকলে বিজেপি সরকার আরও ৩০-৩৫ বছর থাকবে', ফের খবরে বিপ্লব দেব