কাসভ ও ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির সাক্ষী, কী হয়েছিল সেদিন, জানালেন এই মহিলা আইপিএস
মীরন চাড্ডা বোরওয়াঙ্কার হাতে গোনা কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে একজন যিনি আজমল কাসভ ও ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি সামনে দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছেন
দু-দুটি হাইপ্রোফাইল ফাঁসির সাক্ষী তিনি। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন আইজি (কারা), মীরন চাড্ডা বোরওয়াঙ্কার হাতে গোনা কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে একজন যিনি আজমল কাসভ ও ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি সামনে দাঁড়িয়ে থেকে দেখেছেন। তবে দুটি ঘটনাই একে অপরের থেকে একেবারে আলাদা ছিল বলে জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত এই মহিলা আইপিএস। কাসভের ক্ষেত্রে যেমন গোপনীয়তরক্ষাই প্রথম শর্ত ছিল, ইয়াকুব মেমনের ক্ষেত্রে আবার সারাদেশই এই ফাঁসির ওপর নজর রাখছিল।
অবসরগ্রহণের পর একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কাসভকে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে আইটিবিপি-র হেফাজতে রাখা হয়েছিল। ফাঁসির জন্য তাকে পুনের ইয়েরওয়াড়া জেলে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু পথেই তার ওপর হামলা চালিয়ে কাসভকে খতম করার আশঙ্কাও পুরোমাত্রায় ছিল। সেকারণেই ক্রাইম ব্রাঞ্চের একটি দলকে মোতায়েন করা হয় কাসভকে মুম্বই থেকে পুনে নিয়ে যাওয়ার কাজে। মুম্বই- পুনে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়েই কাসভকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল,তাই হাইওয়ে প্যাট্রোলিং টিমকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল।
বোরওয়াঙ্কার জানিয়েছেন, পুনের ইয়েরওয়াড়া জেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরাও সময়ের অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। গোটা বিষয়টি গোপন রাখতে তাঁরা সরকারি গাড়িও ব্য়বহার করেননি। গোটা বিষয়টি সম্পর্কে কোনও সংবাদমাধ্যম যাতে ঘুনাক্ষরেও কিছু টের না পায়, সেদিকেও নজর রাখা হয়েছিল। অবশ্য লুকোচুরির মধ্যেও একজন সাংবাদিক কিছুটা আঁচ করেই ফেলেছিলেন বলে জানিয়েছেন বোরওয়াঙ্কার। তবে এত কিছু যে কাসাবকে ফাঁসি দেওয়ার জন্যই তা হয়ত ওই সাংবাদিক বুঝতে পারেননি।
তবে কাসভের শেষ সময়ের বক্তব্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে যা লেখালেখি হয়েছে, তা সবই গুজব বলেই জানিয়েছেন তিনি। বোরওয়াঙ্কার বলেন, কাসভ একটা ঘোরের মধ্যে ছিল, কী হচ্ছে তাই বুঝে উঠতে পারেনি সে। ২০১২ সালের ২১শে নভেম্বর ভোরে কাসভের ফাঁসি হয়।
অপরদিকে ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি ছিল একেবারেই আলাদা। সেক্ষেত্রে তার পরিবার খুবই সক্রিয় ছিল তার ফাঁসির সাজা মকুব করাতে। মেমনের ক্ষেত্রে মুম্বই পুলিশের একই টিম কাজ করেছে। কিন্তু ফাঁসির পর মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে একটি ফোন পেয়ে তিনি অবাক হয়ে যান। ফোন করে তাঁকে বলা হয়, ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির একটি ভিডিও ক্লিপিং লিক হয়ে গিয়েছে। পরে অবশ্য দেখা যায়, সেটা একটি হিন্দি ছবির দৃশ্য।
সরকার যখন তাঁকে এই দুই হাইপ্রোফাইল ফাঁসির দায়িত্ব দেয়, তখন পিছু হঠার কোনও প্রশ্নই ছিল না বলে জানিয়েছেন বোরওয়াঙ্কার। তখন পিছু হঠলে সারাজীবন তাঁকে এটাই শুনতে হত যে মহিলা বলেই তিনি ফাঁসি দেখতে পারেননি।