হিরোদের মৃত্যু হয় না, তারা চিরকাল বেঁচে থাকে আমাদের মনে
স্বাধীনতা দিবসে সিআরপিএফ সেলাম জানালো শহীদ প্রমোদ কুমারকে । ২ বছর আগে এই দিনেই কাশ্মীরের শ্রীনগরে, তিনি সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন।
স্বাধীনতা দিবসের দিন, শহীদ প্রমোদ কুমারকে স্মরণ করলো সিআরপিএফ। এক টুইট বার্তায় সিআরপিএফ তাঁর সম্পর্কে বলেছে, 'হিরোদের কখনও মৃত্যু হয় না, তাঁরা আমাদের মনে জীবিত থাকে চিরকাল'। ২০১৬ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিনই কাশ্মীরে জঙ্গীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শহীদ হয়েছিলেন কমান্ড্যান্ট প্রমোদ কুমার।
২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট ৭০ তম স্বাধীনতা দিবসে যখন জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন সেই সময়ই শ্রীনগরের অন্য প্রান্তে জঙ্গীদের সঙ্গে প্রবল গুলির লড়াই বাধে। দুই জঙ্গীকে খতম করলেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি সিআরপিএফ কমান্ড্যান্ট প্রমোদ কুমার।
(আরও পড়ুন - স্বাধীনতা দিবসে অমিতাভ-রণবীরদের শুভেচ্ছাবার্তায় ভাসল টুইটার)
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে গোটা কাশ্মীরকেই মুড়ে ফেলা হয়েছিল কড়া নিরাপত্তার চাদরে। তার মধ্যেই শ্রীনগরের নওহাট্টা এলাকায় ঐতিহাসিক জামা মসজিদের কাছে, হঠাত বেশ কিছু সন্ত্রাসবাদীর একটি দল নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে।
প্রমোদের নেতৃত্বে সিআরপিএফ-এর ৪৯তম ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা পাল্টা জবাব দেয়। সেদিন নিজেদের প্রাণ তুচ্ছ করে দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিলেন তাঁরা। ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন নক্কারজনক জঙ্গী আক্রমণ। কিন্তু জঙ্গীদের ছোড়া একটি গুলি এসে লাগে বাংলার ছেলে প্রমোদ কুমারের ঘাড়ে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।
On this occasion of #IndependenceDay2018 let us salute the bravery of Shaheed Pramod Kumar, Commandant, Kirti Chakra (Posthumous) who, 02 years ago on this very day, made the Supreme sacrifice in the service of the nation. Heroes never die, they live in our hearts forever. pic.twitter.com/W3jWx9no24
— CRPF (@crpfindia) August 15, 2018
দেশের নিরাপত্তার খাতিরে বিপদের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়াটা প্রমোদের বরাবরের চারিত্রিক বৈশিষ্ট। তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন ওই ঘটনার আগেও একাধিকবার দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ নিয়েছেন তিনি। সেনাও বহু সম্মান জানিয়েছে তাঁকে। ২০১৪ সালে পেয়েছিলেন 'হাইয়েস্ট অপারেশনাল অ্যাকুমেন'-এর সম্মান। ২০১৫-য় পান ডিরেক্টর জেনারেল্স কমেন্ডেশন ডিস্ক। আর ২০১৬-য় শহিদ হওয়ার পর পেয়েছেন মরণোত্তর কৃতী চক্র।
জম্মু, শ্রীনগর, ত্রিপুরা, আসাম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ - দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন জায়িত্ব সামলেছিলেন প্রমোদ কুমার। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্সেশাল প্রোটেকশন গ্রুপের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বাধীনতা দিবসের দিন যখন সারা দেশ আনন্দে মেতে ওঠে, তখন পশ্চিমবঙ্গে প্রমোদের বাড়িতে তাঁর গর্বে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে প্রমোদের স্ত্রী, শিশু কন্যা ও বৃদ্ধ বাবার মুখ।