কোভিড টেস্টের ভয়ে স্টেশন থেকে দৌড়ে পালাচ্ছেন শ্রমিকরা, দৃশ্য ধরা পড়ল বিহারের স্টেশনে
কোভিড টেস্টের ভয়ে স্টেশন থেকে দৌড়ে পালাচ্ছেন শ্রমিকরা
করোনা পরিস্থিতিতে দেশে লকডাউন ঘোষণা না হলেও বেশ কিছু রাজ্যে লকডাউনের মতো অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছে। যার ফলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা এখন নিজের রাজ্যে ফেরা শুরু করে দিয়েছে। সেরকমই দৃশ্য দেখা গেল বিহারের বক্সারে। বহু মানুষ শিশু সহ রেল স্টেশন থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরোনোর চেষ্টা করছেন বৃহস্পতিবার। স্টেশন জুড়ে যেন অসম্ভব দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছেয। স্টেশন থেকে বেরোতো পারলেই যেন সকলে বাঁচেন। কিন্তু এর পেছনে কারণটা কি? দৌড়ের কারণ, স্টেশনে করোনা পরীক্ষা।
স্টেশনে করোনা টেস্ট
এক ব্যক্তি তাড়াহুড়ো করে স্টেশনে পৌঁছানো মাত্রই এক স্বাস্থ্য কর্মী তাঁকে আটকান এবং স্টেশন ছাড়ার আগে কোভিড টেস্ট করতে বলেন। এরপরই ওই ব্যক্তির মুখে সংশয় দেখা যায়। আসলে এই দৃশ্য প্রায় প্রতিদিনকার। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ঘোষণা করেছেন যে বিহারের সব রেল স্টেশনে কোভিড টেস্টের বন্দোবস্ত করতে হবে কারণ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ রাজ্যের বাসিন্দারা ফিরে আসছেন। তাঁদের জন্যই মূলত এই পরীক্ষা। তাঁদের মাধ্যমে যাতে বিহারে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেয় বিহার প্রশাসন।
সরকারি উদ্যোগে ফল মিলছে না
তবে ফল খুব একটা পাওয়া যায়নি। কারণ অনেকেই টেস্ট না করিয়েই রাজ্যে প্রবেশ করছেন। সরকারি এক আধিকারিক এ প্রসঙ্গে বলেন, 'এটা এখন প্রত্যেকদিনকার নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।' বক্সারের স্থানীয় কাউন্সিলর জয় তিওয়ারিনবলেন, 'আমরা যখন তাঁদের স্টেশন ছাড়ার আগে আটকাই, তখন তাঁরা তর্ক-ঝগড়া শুরু করে দেন। এই ঘটনার সময় স্টেশনে কোনও পুলিশ কর্মীও থাকেন না। পরে এখ মহিলা পুলিশ কর্মী আসেন এবং জানান যে তিনি একা বলে অসহায়।'
বিহারে ফিরছেন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য থেকে
চাকরি হারিয়ে বা লকডাউনের আতঙ্কে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মুম্বই, পুনে ও দিল্লি থেকে প্রতিদিন ট্রেনে করে এ রাজ্যে ফিরছেন। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের রেকর্ড কেস বৃদ্ধির মাঝেই মুম্বই, পুনে ও দিল্লি নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। গত বছরই করোনা মহামারির জন্য দেশ সাক্ষী থেকেছিল বহু পরিযায়ী শ্রমিক বড় বড় শহর থেকে নিজেদের গ্রামে ফিরেছেন পায়ে হেঁটেই, কারণ কয়েক ঘণ্টার নোটিশে মার্চের শেষ সপ্তাহে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক
শুক্রবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকেন এবং সেখানে দৈনিক ভিত্তিতে যেভাবে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ হচ্ছে তা দমন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬,২৫৩ জন এবং ১৩ জন মারা গিয়েছে বৃহস্পতিবার। বিহারে এখনও পর্যন্ত মোট করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৩ লক্ষ।
প্রতীকী ছবি