বড়দিনের জন-জোয়ারে ওমিক্রন আতঙ্ক, একাধিক রাজ্যে কঠোর হল বিধিনিষেধ
জারি নাইট কার্ফু
নতুন বছরের আগে শেষ রক্ষা আর করা গেল না। 'করোনা বিধির নিকুচি' বলে গোটা ভারতে প্রভু যীশুর জন্মদিনে যেভাবে জনসমুদ্রে গা ভাসালেন সবাই তাতে মনে হয়ছে ওমিক্রনই সোজা সমুদ্রে ডুব দিয়েছে। আসমুদ্রহিমাচলের আম জনতা ওমিক্রনকে 'অদৃশ্য শত্রুকে আবার ভয় কীসের' ভেবে থাকলেও এ দৃশ্য যে বিশেষজ্ঞ মহলের ঘুম উড়িয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এমনিতেই ওমিক্রনের সৌজন্যে পুনরায় দেশ জুড়ে গুটি গুটি পায়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা গ্রাফ। তার উপর বড়দিনের উৎসবের মরসুমে করনার হাতছানি নিয়ে রীতিমত 'শিয়রে শমন' দেখছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। 'ঝুঁকি নিয়ে লাভ নেই' পলিসি অবলম্বন করে তাই 'নাইট কার্ফু'র প্রতি আস্থা রাখল দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য।
রাজধানীতে নাইট কার্ফু
বাতাসে দূষণের সঙ্গে নিঃশ্বাসে করোনা ছড়ানোর ক্ষেত্রেও প্রথম থেকে 'ফার্স্ট ক্লাস' পেয়ে এসেছে দেশের রাজধানী। সর্বশেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী এই মুহূর্তে দিল্লিতে ২৯০ জন নতুন ভাবে করোনা আক্রান্ত হিয়েছেন। এবং একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে আছে ওমিক্রনের থাবা। তাই রবিবার নতুন নির্দেশিকা জারি করছে 'কেজরি-সরকার।' রাত্রি ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ। যা কার্যকর হতে চলেছে সোমবার থেকে।
কর্ণাটকে নাইট কার্ফু
২৫ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্ণাটকে নতুন ৭টি ওমিক্রন কেস সামনে এসছে। এই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে কর্ণাটকের মুখমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই সে রাজ্যে 'নাইট কার্ফু' জারি করেছেন। ২৮ ডিসেম্বর থেকে ১০ দিনের জন্যে রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা অবধি জারি করা হয়েছে কার্ফু। পাশাপাশি, নববর্ষের জমায়েত নিয়েও নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে কর্ণাটক সরকার। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। বোমাই বলেছেন, বাহ্যিক প্রাঙ্গনে কোনও অনুষ্ঠান, পার্টি করা যাবে না। বড় কোনও জমায়েত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যোগী রাজ্যে নাইট কার্ফু
ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে দিন কয়েক আগেই নির্দেশিকা জারি হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। ২৫ ডিসেম্বর থেকেই রাত ১১.০০টা থেকে ভোর ৫.০০টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করেছে যোগী সরকার। এছাড়াও জারি করা হয়েছে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা। যার মধ্যে সামিল বিয়ে বা কোনও অনুষ্ঠানে লোকসংখ্যা ২০০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধতা। এছাড়া সব রকম করোনা প্রোটকল কঠোর ভাবে মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
হরিয়ানায় নাইট কার্ফু
২৫ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত নাইট কার্ফু জারি করেছে হরিয়ানা সরকারও। রাত ১১.০০টা থেকে ভোর ৫.০০টা পর্যন্ত জারি কার্ফু। পাশাপাশি যেকোনো অনুষ্ঠানে ২০০ জনের বেশি লোকের জমায়েত করা যাবেনা বলেও জারি হয়েছে নির্দেশিকা।
মধ্যপ্রদেশে নাইট কার্ফু
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত রাজ্যে নাইট কার্ফু জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। সেইসঙ্গে প্রয়জনে আরও ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
গুজরাটে নাইট কার্ফু
গুজরাটের আহমেদাবাদ, সুরাট, রাজকোট, ভাদোদরা, জুনাগড়, জামনগর, ভাবনগর এবং গান্ধীনগর শহরে আরও ২ ঘণ্টা সময় বৃদ্ধি করা হল রাত্রিকালীন নিষেধাজ্ঞার। রাত ১.০০টার পরিবর্তে রাত ১১.০০টা থেকে সকাল ৫.০০ টা পর্যন্ত কার্যকর করা হল কার্ফু।
মহারাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা
করোনার থাবা সবথেকে বেশি যে রাজ্যে পড়েছে তা হল মহারাষ্ট্র। আর ওমিক্রনের লাগাতার বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। রাত ৯.০০টা থেকে সকাল ৬.০০ টা পর্যন্ত এক স্থানে ৫ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ, জিম, স্পা, হোটেল, থিয়েটার এবং সিনেমা হল ৫০% গ্রাহক নিয়ে খোলা রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। মূলত বড়দিন ও নতুন বছর উদযাপনের সম্ভাব্য ভিড়ের কথা বিবেচনা করে এই ব্যবস্থা নিয়েছে 'মহা-সরকার'।