ওমিক্রন, আইনশৃঙ্খলা, পাঁচরাজ্যে ভোট করাতে বাধা কম নয় নির্বাচন কমিশনের
ওমিক্রন, আইনশৃঙ্খলা, পাঁচরাজ্যে ভোট করাতে বাধা কম নয় নির্বাচন কমিশনের
২০২২-র শুরু থেকেই বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে পাঁচটি রাজ্যে৷ পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মনিপুর, গোয়া-তে ভোট করানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলি৷ কিন্তু বাধ সাধছে একাধিক বিষয়৷ সারাদেশে দ্রুত গতিতে বাড়ছে করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্রনের সংক্রমণ৷ গোয়ার ভোটার তালিকা থেকে প্রকৃত ভোটারদের মুছে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ উঠছে! পঞ্জাবের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট সংবেদনশীল! এরকম অবস্থায় পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট করানো নিয়ে রীতিমতো চাপে রয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলি!
রাজ্য পরিদর্শনে EC!
নির্বাচন কমিশনের তরফে বিশেষ প্রতিনিধি দল রাজ্যগুলি পরিদর্শন করছে এবং বর্তমান পরিস্থিতি পরিমাপ করতে সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করছে। নির্বাচনের আগে করোনা কিংবা আইনশৃঙ্খলা ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সুবিধা ও অসুবিধাগুলি বুঝে নিতে চাইছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলি। রাজ্যগুলিতে কোভিড পরিস্থিতিরও পর্যালোচনা করছে EC, ২০২২ সালের প্রথম তিনমাসেই পাঁচটি রাজ্যে উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এবং গোয়াতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পঞ্জাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি!
সম্প্রতি
পঞ্জাবে,
আইন-শৃঙ্খলা
পরিস্থিতি
উদ্বেগজনক,
অমৃতসরের
স্বর্ণমন্দিরে
এক
ব্যক্তিকে
ধর্ম
অবমাননার
চেষ্টা
করার
অভিযোগে
পিটিয়ে
হত্যা
করা
হয়েছে,
যা
নিয়ে
সারাদেশে
রীতিমতো
হইচই
পড়ে
গিয়েছে৷
দেশের
প্রধান
নির্বাচন
কমিশনার
সুশীল
চন্দ্র
অন্য
নির্বাচন
কমিশনারদের
সঙ্গে
নিয়ে
পঞ্জাবের
রাজনৈতিক
দলগুলোর
প্রতিনিধিদের
সঙ্গে
দেখা
করেছেন।
যে
বৈঠকে
পঞ্জাবের
রাজনৈতিক
দলগুলো
আগামী
নির্বাচনে
আইনশৃঙ্খলা
পরিস্থিতি,
অর্থের
অপব্যবহার
এবং
মদ
ও
মাদক
বিতরণ
নিয়ে
উদ্বেগ
প্রকাশ
করেছে
বলে
সূত্র
মারফৎ
জানা
গিয়েছে!
অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের ভাবনা!
রাজনৈতিক দলগুলির উদ্বেগ প্রকাশের পরই নির্বাচন কমিশন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মূল্যায়ন শুরু করছে। পাশাপাশি নির্বাচন চলাকালীন সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স (সিএপিএফ) এর অতিরিক্ত মোতায়েন নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে৷
পঞ্জাবে বিশেষ ব্যবস্থা!
পঞ্জাবে নির্বাচন কমিশন বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা চিহ্নিত করেছে এবং সেখানে ভোটারদের প্রভাবিত বা ভয় দেখানো থেকে বিরত রাখতে পর্যাপ্ত সিএপিএফ মোতায়ে নিশ্চিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে ইসির পক্ষ থেকে৷ পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু জায়গাতে বর্তমান পরিস্থিতির কিছুটা সংবেদনশীলই কারণ কয়েকদিন আগে সরকার তিনটি কৃষি আইন ফিরিয়ে নেওয়ার পরে কৃষকরা বাড়ি ফিরে এসেছে! যারা
১০০ শতাংশ ভিভিপ্যাট ব্যবহারের দাবি!
অন্য দিকে রাজনৈতিক দলগুলি ভোটকেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ভিভিপ্যাট ব্যবহার এবং ১০০ শতাংশ ওয়েবকাস্টিং করার দাবি তুলেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে সীমান্ত এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলি বাদে যেগুলি সংবেদনশীল বুথের আওতায় আসে সেই সমস্ত ভোটকেন্দ্রে ওয়েবকাস্টিং থাকবে। নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক, অন্যান্য নোডাল অফিসারদের সঙ্গে একটি বৈঠক করে নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন৷
ভোটে মদ, মাদক, অর্থের ব্যবহার রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা!
আবগারি দফতর ও আরবিআইএর আধিকারিকরাও ভোটে মদ, মাদক ও অর্থের ব্যবহার রুখতে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁরা এ বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের দিয়েছেন৷ এবং পাশাপাশি নির্বাচন কমিশের আধিকারিকরাও নিজেদের মতো নজরদারি চালাবেন ভোটে, মদ, মাদক ও অর্থের ব্যবহার রুখতে! প্রসঙ্গত পঞ্জাব বিধানসভার মেয়াদ ২৭ মার্চ, ২০২২-এ শেষ হতে চলেছে৷ ভোটার তালিকায় ২.২ কোটি ভোটার রয়েছে এবং পঞ্জাবে মোট ২৯৬৮৯টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে৷
গোয়ায় তালিকা ভোটারদের নাম মোছার অভিযোগ!
পাঞ্জাবের পরে, নির্বাচন কমিশনের পরবর্তী লক্ষ্য হল গোয়া। যেখানে কারচুপি করে ভোটার তালিকা থেকে প্রকৃত ভোটারদের মুছে ফেলার অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সুশীল চন্দ্র নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের গোয়ায় ভোটারদের নাম মুছে ফেলা এবং সংযোজনের জন্য সমস্ত আবেদন সাবধানতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করতে বলেছেন।
গোয়ায় ভোটারতালিকায় নাম তোলা ও মোছার ক্ষেত্রে কড়া হচ্ছে নিয়ম!
নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের আশ্বস্ত করেছে যে তথ্য ছাড়া ভোটার তালিকা থেকে কোনো নাম মুছে যাবে না। বুথ স্তরের কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সমস্ত আবেদন যাচাই করবেন বলে জানানো হয়েছে! গোয়ার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কুনাল নাম অন্তর্ভুক্ত এবং মুছে ফেলার জন্য বেশ কয়েকটি আবেদন পেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন সমস্ত আবেদন নিবিড়ভাবে যাচাই করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পর বাড়বাড়ি জায়গাতে পৌঁছেছিল করোনা সংক্রমণ!
চলতি বছরের শুরুর দিকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পরে দেশ জুড়ে দ্বিতীয় ওয়েভ আছড়ে পড়ে৷ মৃতের স্তুপে পরিণত নয় খোদ কলকাতা ও বঙ্গের একাধিক জায়গা! এরপরই কলকাতা হাইকোর্ট দ্বিতীয় কোভিড তরঙ্গের সময় নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ভৎর্সণা করে। আদালত পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে নির্বাচনী সমাবেশগুলি যাতে সুপার-স্প্রেডার ইভেন্টে পরিণত না হয় সেজন্য কিছুই করেনি EC।
ওমিক্রন রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা!
এ কথা মাথায় রেখে এবারের নির্বাচন কমিশনের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রনকে মোকাবেলা করা। ভোট হতে চলা পাঁচটি রাজ্য থেকে নির্বাচন কমিশন কোভিডের সাপ্তাহিক আপডেট নিচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচনের কাজে জনবল বাড়ানো এবং সমস্ত আধিকারিকদের টিকা দেওয়া এবং ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর জন্য কাজ করছে।