করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে মুখে কুলুপ সরকারের, অথচ ওড়িশায় বাড়ছে শ্মশান সংখ্যা
করোনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে মুখে কুলুপ সরকারের
প্রতিদিন গড়ে ওড়িশাতে ২০ জন করে কোভি সংক্রান্ত মৃত্যু হচ্ছে বলে রিপোর্ট হলেও রাজ্যজুড়ে শ্মশানের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে বহু করোনা মৃত্যুই সরকারি তালিকায় ঠাঁই পাচ্ছে না।
করোনায় প্রয়াত কংগ্রেস সাংসদ রাজীব সাতাব, টুইটারে শোকপ্রকাশ রাহুল সহ একাধিক কংগ্রেস নেতার
সরকারের মুখে কুলুপ
যদিও ওড়িশাতে দৈনিক করোনা কেস গড়ে হাজারের বেশি রিপোর্ট হলেও দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ২০-তে রয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরের অংশ খোরদা জেলায় দৈনিক করোনায় ৪ জন করে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। অধিকাংশ দেহই পোড়ানো হচ্ছে সত্য নগর শ্মশানে। অথচ নবীন পট্টনায়েকের সরকার কোভিড-১৯ চিকিৎসা করাতে গিয়ে কতজনের মৃত্যু হচ্ছে সে বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে তবে এটা স্বীকার করেছে যে সত্য নগর শ্মশান এত মৃতদেহের চাপ নিতে পারছে না। এই শ্মশানে দেহ পোড়ানোর জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে।
নতুন শ্মশানঘাট তৈরি
নতুন নিয়োজিত ভুবনেশ্বর মিউনিসিপ্যাল কমিশনার তাঁর অধীনস্ত কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন যে ২৫ মে-এর মধ্যে পাতিয়ার কাছে আরও একটি শ্মশান তৈরি করে ফেলা হোক। এই শ্মশানে দেহ পোড়ানোর কাজ চটজলদি করতে এলপিজি দিয়ে পরিচালনা করা হবে। কমিশনার এও জানিয়েছেন যে পাতিয়া শ্মশান কোভিড-১৯-এ মৃতদের পোড়ানোর জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। পুরীর স্বর্গদ্বার শ্মশানে কোভিড দেহ পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞার কারণেই সত্য নগর শ্মশানে এত ভিড় হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিশনার। কর্পোরেশন ভারতপুরেও একটি শ্মশান তৈরি করছে যেখানে কোভিড দেহ পোড়ানো যেতে পারে।
বাড়ানো হচ্ছে শ্মশানের সংখ্যা
সম্বলপুরে যেখানে একটি শ্মশানে করোনার দেহ পোড়ানোর কাজ চলছিল এখন সেখানে চারটে নতুন জায়গায় (একটি সম্বলপুর ও তিনটে বুরলাতে) করোনা রোগীর দেহ পোড়ানো হচ্ছে। সম্বলপুরের রাজঘাট শ্মশান এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেওনঝার জেলা থেকে প্রকৃত ও সরকারি মৃতের সংখ্যার মধ্যে অমিল রয়েছে। গত বছর এই জেলা থেকে ৪৬ জনের মৃত্যু হয় বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কেওনঝার শ্মশানে কর্মরত সিদ্ধেশ্বর নায়েক জানিয়েছেন যে গত বছর থেকে তিনি নিজে ১৫০টি দেহ পোড়ানোর চিতা সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, 'কতগুলি দেহ পুড়ছে সে বিষয়ে আমায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল মুখ বন্ধ রাখতে। গত একমাসে প্রতিদিন শ্মশানে গড়ে ১২ থেকে ১৩টি দেহ আসে ফোড়ানোর জন্য। প্রত্যেক দেহ পিপিই কিট পরে হাসপাতালের কর্মীরা নিয়ে আসেন।'
জেলায় জেলায় বাড়ছে মৃত্যু
নুয়াপাড়াতেও সরকারি মৃতের সংখ্যা সঠিকভাবে জানা যায়নি। সরকারের বুলেটিনে বলা হয়েছে গত বছর থেকে এখানে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের কিন্তু রিপোর্ট অনুযায়ী নুয়াপাড়ার কোভিড-১৯ হাসপাতালে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে ৭০ জনের বেশি মৃ।ত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে বিধ্বস্ত আরও একটি জেলা সুন্দরগড়, করোনায় মৃতদের সমাধিস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের কাছে পাঠানো হয়। কারণ একটি বিশাল জনগোষ্ঠী খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। যদিও কোভিড মৃতদেহ পোড়ানোর জন্য সুন্দরগড় ও রাউরকেল্লায় শ্মশানের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
অনেক করোনা রোগীর মৃত্যু বাড়িতে
বিভিন্ন জেলা থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, বাড়িতে আইসোলেশনে থাকাকালিন অনেক করোনা রোগীই এই মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্যরা দেহ পোড়ানোর কাজে সহায়তা করছে না দেখে পুর কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের মৃতদেহ বহনকারী যান দিয়ে পাঠাচ্ছে দেহ শ্মশানে পৌঁছানোর জন্য। অনেক আক্রান্তকেই গ্রামের শ্মশানেই পোড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশ্চিম ওড়িশার বালানগির শহরে পরিত্যক্ত একটি শ্মশানকে সম্প্রতি করোনা দেহ পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।