চাকরি ছেড়ে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠা, জানুন ভারতের ধনীতম মহিলা নাইকার ফাল্গুনি নায়ারের সম্পত্তি কত
জানুন ভারতের ধনীতম মহিলা নাইকার ফাল্গুনি নায়ারের সম্পত্তি কত
শেয়ার বাজারে প্রবেশ করেই দারুণ ফল করে দেখাল প্রসাধনী ই–কমার্স জায়ান্ট নাইকা। নাইকার সিইও–প্রতিষ্ঠাতা ফাল্গুনি নায়ার বুধবার ভারতের সপ্তম ধনী মহিলা হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন। প্রসঙ্গত, প্রাথমিক পাবলিক অফার (আইপিও) এক সপ্তাহ শেষ হয়েছে। বুধবার দালাল স্ট্রীট খোলার পর দেখা গিয়েছে ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি মূলধন সংগ্রহ করে ফেলেছে এই ই–কমার্স সংস্থাটি। এখন নাইকার শেয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ প্রিমিয়াম সহ ২,০১৮ টাকায় লিস্টেড হয়েছে। জানা গিয়েছে, নাইকার মার্কেট ক্যাপ ইতিমধ্যে ব্রিটানিয়া, গোদরেজ এবং ইন্ডিগোর মতো পুরনো বড় সংস্থার সমান হয়ে গিয়েছে। মাত্র কয়েক বছর আগে শুরু হওয়া এই ব্যবসা আজ এই জায়গায় পৌঁছানোয় অনেকেই হতচকিত।
২০১২ সালে শুরু হয় নাইকা
ভারতের প্রথম ইউনিকর্ন স্টার্টআপ নাইকা, যার মাথায় রয়েছেন একজন মহিলা, ২০১২ সালে ফাল্গুনি নায়ারের হাত ধরে এই প্রসাধনী ই-কমার্স শুরু হয়। নাইকা মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রসাধনী ও ব্যক্তিগত যত্নের পণ্য বিক্রি করে থাকে। আট বছর পর ৫৮ বছরের নায়ার মাত্র ৬ জন ভারতীয় কোটিপতি মহিলার সঙ্গে যোগ দিয়ে আজকে তিনি স্ব-নির্মিত কোটিপতি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। লিস্টিং অনুষ্ঠানে এসে ফাল্গুনি নায়ার বলেন, 'আমি আশা করব নাইকার এই সফর, ভারতীয়-বংশোদ্ভুত, ভারতীয়-মালিকানাধীন ও ভারতীয়-পরিচালিত স্বপ্নকে সত্যি করেছে, যা একে-অপরকে অনুপ্রাণিত করবে।'
মহিলাদের কাছে জনপ্রিয় ই–কমার্স নাইকা
নাইকা (অভিনেত্রীর সংস্কৃত শব্দ) খুব দ্রুত প্রযুক্তিতে পারদর্শী ভারতীয় মহিলাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ফাল্গুনী দেখেন, মেয়েদের মেকআপ, সাজের জিনিস কিনতে সেই পাড়ার দোকানেই যেতে হয়। সেখানে অপশন সীমিত। বড় ব্র্যান্ড বা ট্রায়ালের সুযোগও নেই। বাজারে এই ফাঁকটাই ভরাট করার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে শুরু করেন তিনি। এই পথে সফলও হন। নাইকার সঙ্গে যুক্ত ৩০ বছরের এক গ্রাহক সানায়া বলেন, 'নাইকার সবচেয়ে সেরা বিষয়টি হল এখানে আন্তর্জাতিক প্রসাধনী সামগ্রীর সম্ভার রয়েছে, যা ভারতে আগে কখনও বিক্রি হয়নি।'
নাইকার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে
নাইকার সিইও-প্রতিষ্ঠাতা ফাল্গুনী নায়ার এই মুহূর্তে ভারতের ধনীতম মহিলাদের মধ্যে অন্যতম। ব্যবসা শুরুর আগে তিনি এক নামজাদা ভারতীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের শীর্ষ পদে ছিলেন। প্রচুর টাকা বেতন। চাইলেই আরও এক দশক চাকরি করে কাটাতে পারতেন। কিন্তু ৪৯ বছর বয়সেই অকল্পনীয় ঝুঁকি নেন ফাল্গুনী। নাইকার জনপ্রিয়তা যত বেড়েছে, ব্র্যান্ডের প্রচারে ক্যাটরিনা কাইফের মতো বলিউড তারকা সহ বহু সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জাররা এগিয়ে এসেছেন। এঁদের হাত ধরেই নাইকার টপ ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে আজকের প্রজন্মের তরুণীদের হাতে। শুধু তাই নয়, ২০১৫ সাল থেকে নাইকা নিজস্ব প্রসাধনী ব্যান্ড তৈরি করেছে এবং সম্প্রতি তারা পোশাক ও ঘরকন্নার জিনিসও বিক্রি করছে। ভারতের ৪০টি শহরে নাইকার ৮০টি বিপণন রয়েছে।
ভারতের ধনীতম মহিলা
নাইকার প্রায় অর্ধেক মালিকানা ফাল্গুনীর। এই মুহূর্তে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, তিনি ভারতের সবচেয়ে ধনী মহিলা বিলিয়নেয়ার হয়ে উঠেছেন। পুরোটাই নিজের স্থাপন করা ব্যবসায়।