নিপা ভাইরাসের আতঙ্ক সেবা থেকে বিরত করতে পারল না, এই নার্সের লেখা শেষ চিঠি চোখে জল আনবে
নিপা ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে নার্স লিনির। কোঝিকোড়ে আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে নিদেই আক্রান্ত হন। স্বামীর প্রতি তিনি শেষ বার্তা দিয়ে গেছেন।
'আমি চললাম, বাচ্চাদের দেখ' - এই ছিল স্বামীর প্রতি তাঁর শেষ বার্তা। তিনি লিনি পুথুস্সেরি। ৩১ বছরের এই নার্স, কেরলের নিপা আক্রান্ত রোগীদের সেবা করতে গিয়ে নিজেই আক্রান্ত হন। সোমবারই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের সঙ্গে শেষ দেখাটাও হয়নি, কারণ সংক্রমণ ঠেকাতে তাঁকে রাখা হয়েছিল আইসোলেটেড ইউনিটে। মৃত্যুর পর তাঁর দেহ থেকে যাতে সংক্রমণ না হয়, তার জন্য দ্রুত দাহও করা হয়।
লিনি রেখে গিয়েছেন দুই সন্তানকে। একজনের বয়স সাত, অন্যজন মাত্র দুই। কেরলে নিপা আক্রান্ত প্রথম ব্যক্তিদের আনা হয়েছিল পেরাম্ব্রা তালুক হাসপাতালে। সেখানে যে চিকিৎসা দলটি শুশ্রুসা করেছিল, লিনিও ছিলেন সেই দলে। আক্রান্তদের সেবা করতে করতে নিয়েই আক্রান্ত হন নিপা ভাইরাসে। হাসপাতালের আইসোলেটেড ওয়ার্ডে শুয়ে শুয়ে তিনি বুঝেছিলেন জীবনী শক্তি ফুরিয়ে আসছে। তাই স্বামীকে শেষ বার্তা দিয়ে যান তিনি। তিনি লেখেন, 'সাজি চেত্তা, আমার সময় প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। মনে হয় না আর তোমার সঙ্গে দেখা হবে। আমাদের ছোট্ট সন্তান, ওকে গাল্ফে নিয়ে যেও। আমাদের বাবাদের মতো তারা যেন একা না হয়ে যায়। অনেক ভালবাসা রইল...'
তাঁর এই হৃদয় বিদারক চিঠিটি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই পড়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। ডেইলিরাউন্ডস নামে ডাক্তারদের এক সংগঠনের চিফ এক্সিকিউটিভ ডাঃ দিপু সেবিন টুইট করে বলেছেন, 'নিপা ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধে লার্স লিনির মৃত্যু হয়েছে। নিপা আক্রান্ত রোগীদের সেবা করতে গিয়ে তিনি আক্রান্ত হন। মাত্র ৩১ বছর বয়স তাঁর, দুই সন্তানের মা। যদি তিনি শহিদ না হল, তবে জানি না কাকে শহিদ বলা উচিত। '
A nurse who took care of a #NIPHAVirus patients & succumbed to same. Her body was cremated with extreme urgency to prevent any possible spread and even her family could not pay due respect. Respect to Lini &a reminder that healthcare workers take immense personal risk to serve us pic.twitter.com/4kzESu6j4J
— Dr. Deepu Sebin (@deepusebin) May 21, 2018
লিনির এই আত্মত্যাগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। পেরাম্ব্রা তালুক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তাঁর পরিবারের অনুমতি নিয়েই সংক্রমণ ঠেকাতে তাঁর মৃত্যুর পরও পরিবারের কাউকে তাঁর কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। মৃত্যুর পরই দ্রুত তাঁর দেহ দাহ করা হয়।