অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার পরীক্ষা আয়োজক সংস্থার, জবানবন্দি রেকর্ড নিগৃহিতা ছাত্রীর
অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার পরীক্ষা আয়োজক সংস্থার, জবানবন্দি রেকর্ড নিগৃহিতা ছাত্রীর
কেরলে নিট পরীক্ষায় টোকাটুকি রুখতে এক ছাত্রীকে অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেছেন, নিট পরীক্ষার্থীর ৯০ শতাংশ ছাত্রী নানাভাবে মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। কেরলের নিট পরীক্ষার একাধিক কেন্দ্রে ছাত্রীর সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিভাবকদের একাংশ অভিযোগ করেছে। যদিও সোমবার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পরীক্ষা আয়োজক সংস্থা এনটিএ বা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি।
অভিযোগ অস্বীকার ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সির
যে প্রতিষ্ঠানে নিগৃহিতার পরীক্ষার আসন পড়েছিল, তারা গোটা বিষয়টি থেকে নিজেদের দায় এড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরীক্ষা আয়োজক সংস্থা এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবে। সোমবার ছাত্রীকে অন্তর্বাস খোলাতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এনটিএ। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন এই ধরনের কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পরীক্ষার পরেও সংস্থার কাছে ইমেলে বা লিখিতভাবে এই ধরনের কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। সংবাদমাধ্যম মারফত এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এনটিএ দাবি করেছে, নিট পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট পোশাক বিধি চালু করা হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের জন্য। কোনও ধর্ম, লিঙ্গ বা সম্প্রদায়কে হেনস্তা করতে এনটিএ কোনও পোশাক বিধি চালু করেনি। পোশাক বিধি নিয়ে কোনও সমস্যা ছাত্রীর হতে পারে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা পরিচালনার জন্যই এই পোশাক বিধি চালু করা হয়েছিল বলে এনটিএ-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নিগৃহিতার পরিবারের পাল্টা অভিযোগ
ছাত্রীর বাবা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে এনটিএ-র সমস্ত দাবি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে পোশাক বিধি অনুসরণ করেই পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েছিলেন। পোশাক বিধিতে অন্তর্বাস সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশ ছিল না। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীকে অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করা হয়। তিন ঘণ্টা ওই ছাত্রী অন্তর্বাস ছাড়া পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ১৭ বছরের ওই পরীক্ষার্থী মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন বলে ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেছেন।
ছাত্রীর জবাব বন্দি রেকর্ড
মহিলা পুলিশের একটি দল ওই ছাত্রীর জবানবন্দি নিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এই বিষয়ে উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। জানানো হয়েছে, অভিযুক্তকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। রাজ্যের মহিলা কমিশন ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই ঘটনার রিপোর্ট পেশের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারা (নারী শালীনতার খর্ব করতে বলপ্রয়োগ) ৩০৫ ( কোনও মহিলার উদ্দেশে অশালীন ব্যবহার ও অঙ্গভঙ্গি)-র অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরীক্ষা দিতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা
তিরুবন্তপুরম থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৭ বছরের এক ছাত্রীকে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ১২টা নাগাদ পরীক্ষা শুরু হয়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের কাছ থেকে এসে একটি চাদর চেয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা দিয়ে মেয়ে বের হওয়ার পর জানতে পারি কী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে। একাধিক পরীক্ষাকেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। অন্যান্য অভিভাবকদের দাবি, অন্তর্বাসে ভিতর ধাতব কিছু পাওয়া গিয়েছিল। সেই কারণেই অন্তর্বাস খুলতে ওই ছাত্রীকে বাধ্য করা হয়েছিল। অন্যান্য অভিভাবকরা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছে।
প্রতীকী ছবি