লাদাখ ইস্যুতে মোদী-ডোভাল হাইভোল্টেজ বৈঠক দিল্লিতে! কী হতে চলেছে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ?
লাদাখ ইস্যুতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বলে সূত্রের খবর। বিগত চার মাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ১৫ জুনের সংঘর্ষের পর থেকেই গত কয়েক দশকের মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ভারত-চিন সম্পর্ক।
ডোভাল-মোদী বৈঠকের ফোকাসে লাদাখ ইস্যু
জানা গিয়েছে এর আগে এদিনই লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিতে সেনা প্রধান ও অজিত ডোভালদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। লাদাখকে শান্ত করতে চিন ও ভারত দুই দেশই এক ৫ পয়েন্টের সমঝোতা সূত্রে এসেছে। সেখানে ডিসএনগেজমেন্ট সম্পর্কে কথা উঠতেই দিল্লিতে জরুরি বৈঠকে রাজনাথ। সেই বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা নিয়েই ডোভাল-মোদী বৈঠক বলে জানা গিয়েছে।
বৈঠকের দিকে নজর রেখেছে বেজিংও
এদিন সকালেই ভারতের সেনার তিন প্রধান, সিডিএস বিপিন রাওয়াত ও ভারতের তাবড় কূটনীতিবিদ তথা জাতীয় উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন রাজনাথ সিং। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বৈঠক লাদাখ পরিস্থিতির উপর ফোকাস করেই হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। মস্কোয় ভারত-চিন বৈঠকের পর দিল্লিতে লাদাখ ইস্যুতে হচ্ছে একের পর এক বৈঠক। আর এই সব বৈঠকের দিকে নজর রেখেছে বেজিংও।
জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকে সুরাহার ইঙ্গিত
পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াই গতকাল রাতে মস্কোয় মুখোমুখি বৈঠকে বসেন। বৃহস্পতিবার সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিয়ে জয়শঙ্কর ও ওয়াং ওয়াই লাদাখ ইস্যুতে বিস্তারে আলোচনা করেন বলে জানা যায়। তারপরই দিল্লিতে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে।
গ্রিন টপের উপর থেকে চিনা সেনা দখলদারি সরাতে চাইছে না
চিনা সেনা ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮-এর মধ্যে ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও। লাদাখের প্যাংগং হ্রদের কাছে গ্রিন টপের উপর থেকে চিনা সেনা দখলদারি সরাতে না চাওয়াতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও তিক্ত হচ্ছে চিনের। প্যাংগং সোতে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে।
সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সহমত প্রকাশ
জানা গিয়েছে, ভারত-চিন দুই দেশ এই বিষয়টিতে সহমত প্রকাশ করেছে যে লালফৌজের সঙ্গে লাদাখে ভারতীয় সেনাকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পাশপাাশি, দুই দেশই মানছে, বর্তমানে সীমান্তে এখন যা পরিস্থিতি তাতে কোনও দেশেরই মঙ্গল হচ্ছে না। ফলে দুই দেশেরই উচিত আলোচনার রাস্তা খোলা রাখা, ও আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। এর সঙ্গে ভারত জানিয়ে দিয়েছে যে, সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জায়গা থেকে সরে আসবে না দিল্লি।
প্যাংগং দখলে রাখতে মরিয়া চিন
তবে এত কিছুর মাঝেও প্যাংগংয়ে সেনা মোতায়েন করতে শুরু করে চিনা সেনা। এই মুহূর্তে উভয় পক্ষের সেনা একে অপরের থেকে খুব কাছাকাছি আবস্থান করছে৷ ভারতীয় সেনা চিনের কর্মকাণ্ডে গভীর নজর রাখছে৷ চিনের তরফে অন্তত ২০ থেকে ৩০টি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়েছে প্যাংগং এলাকায়।
চিনের নজরে গুরুত্বপূর্ণ চূড়াগুলি
এছাড়া জানা গিয়েছে চিন প্যাংগং এলাকায় নিজেদের ৫ থেকে ৬ হাজার সৈন্য মোতায়েন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে। ভারতীয় সেনার অধীনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ চূড়াগুলি দখলের উদ্দেশ্যেই সেখানে সৈন্য বহর বাড়াচ্ছে পিএলএ। তাছাড়া ট্যাঙ্ক স্কোয়াড্রনও মোতায়েন করেছে চিন। পুরদস্তুর যুদ্ধের জন্যে তৈরি হচ্ছে তারা। তবে বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকের পর পরিস্থিতি শান্ত হয় কি না এখন সেদিকেই চোখ সবার।
লাদাখ সীমান্তে শান্তি ফিরবে জয়শঙ্কর-ওয়াং বৈঠকের পর? নির্ভর করছে একজনের উপর!