লাদাখের উত্তেজনা প্রশমনে এবার ময়দানে ডোভাল! চিনকে চাপে রেখে কোন লক্ষ্য স্থির ভারতের?
লাদাখের গালওয়ান উপত্তকায় ১৫ জুনের সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন সপ্তাহ। তাও লাদাখের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা কমার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। বরং বিভিন্ন এলাকায় ভারত-চিন সেনা এখন সম্মুখ সমরের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। তবে এরই মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া দিল্লি।
বিশেষ দল গঠন করতে চলেছে দিল্লি
ভারত-চিন মধ্য়কার এই পরিস্থিতি যাতে শান্ত হয়, এর লক্ষ্যে এক বিশেষ দল গঠন করতে চলেছে দিল্লি। এই দলের অন্যতম সদস্য হবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। জানা গিয়েছে ডোভাল লাদাখ ইস্যু নিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। পরিস্থিতি শান্ত করার রোডম্যাপ তৈরি করতে বেজিংকে চাপ দেবেন ডোভাল।
ময়দানে খোদ প্রধানমন্ত্রী
এর আগে কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি মেনে নিয়েছিল উভয় পক্ষই। তবে সেই পথে হাঁটছে না চিন। তবে সেটি অনিচ্ছাকৃতও হতে পারে বলে মত সেনার। কারণ গত কয়েকদিন ধরেই গালওয়ান উপত্তকার আবহাওয়া ভালো নয়। তাই সেনা সরাতেও অসুবিধা হচ্ছে। এদিকে একের পর এক সেনা স্তরের বৈঠকেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়ওয়ায় দিল্লি চিন্তিত। খোদ প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে অ্যাকটিভ হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী লেহ-তে পৌঁছে আহত সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন
নিজের বিভিন্ন কাজ দিয়ে দেশকে চমকে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তেমনই একটা দিন ছিল ৩ জুলাই৷ যখন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী লেহ-তে পৌঁছে আহত সেনাদের সঙ্গে কথা বলছেন৷ এবং তাঁদের উদ্বুদ্ধ করতে বক্তৃতা রাখছেন। পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং দুই দেশের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের আবহে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
লক্ষ্য স্থির করে এগোতে চলেছে দিল্লি
জানা গিয়েছে, আগামী দশ দিনের জন্য ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করে এগোতে চলেছে দিল্লি। দিল্লির কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এখন গালওয়ান উপত্যকা। এখানে পরিস্থিতি স্বভাবিক করতে আগামী দশ দিন ধরে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার রোডম্যাপ ইতিমধ্যেই তৈরি। এর আগে ডোকলামের উত্তেজনার সময়েও ময়দানে নেমেছিলেন ডোভাল।
গালওয়ান কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভারতের জন্য
এদিকে সংঘর্ষের এলাকার কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর থেকেই বোঝা যায় যে, সরকার এই বিষয়টাকে ঠিক কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশের একটা মহলের ধারণা ছিল যে, সরকার বিষয়টিকে একেবারেই সে ভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না৷ কারণ সরকার আশা করছে এই সমস্যার সমাধান দুই দেশের সেনা পর্যায়ের কথাবার্তাতেই মিটে যাবে। সরকারের সেই ধারণা ছিন্নভিন্ন হয় ১৫ জুন গলওয়ানের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের জের
সেনা পর্যায়ে দুই দেশের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়াকে ভারত যে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না, তারই প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর এই লাদাখ সফর। প্রধানমন্ত্রী খুব ভালো করেই জানতেন যে, তাঁর এই সফর নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে চিন। বাস্তব ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে। এবার দিল্লি নিজেদের প্ল্যান বাস্তবায়নের দিকে ঝুঁকেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর লেহ সফরের জের, নাকি নেপথ্যে অন্য মতলব? লাদাখে পিছু হটছে চিনা বাহিনী!