এনআরসির প্রভাব! প্রায় ৫০ হাজার সংসার ভাঙার পথে
অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণের খসড়ায় নিজের নাম থাকলেও নেই স্ত্রীর নাম। এমন ঘটনা ভুঁড়ি ভুড়ি। চূড়ান্ত তালিকায় যেসব নাম বাদ পড়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ৪৮, ৪৫৬ জন বিবাহিত মহিলার।
অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণের খসড়ায় নিজের নাম থাকলেও নেই স্ত্রীর নাম। এমন ঘটনা অনেক। চূড়ান্ত তালিকায় যেসব নাম বাদ পড়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ৪৮, ৪৫৬ জন বিবাহিত মহিলার। অনেকেই দাবি করছেন, পর্যাপ্ত নথি জমা দিয়েছেন। আবার অনেকের কাছেই নথি নেই, বিয়ের পর স্বামীর কাছে থাকলেও, বিয়ের আগে ছিলেন কোথায়, সেই সংক্রান্ত তথ্য।
সফল ব্যবসায়ী তথা রাজনীতিবিদ ইলিম উদ্দিন মধ্য বয়সী। ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। এহেন এই ব্যক্তির অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী মমতাজ দেওয়ানকে বাংলাদেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। ফরেনার্স ট্রাইবুনালের মাধ্যমে ২০১৬-তে ভারতীয় নাগরিকত্ব ফিরে পান তিনি। অভিযোগ, লোকাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন রেজিস্টার ফরেনার্স ট্রাইবুনালের আদেশের কপি গ্রহণ করতে নারাজ।
এনআরসি কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যদি বিদেশি কিংবা সন্দেহজনক ভোটার বলে অভিযুক্ত হওয়া ভোটার ফরেনার্স ট্রাইবুনাল থেকে ছাড় পান, তবে তাকে এনআরসির অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদিও এক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
এতো গেল নির্দিষ্ট একজনের তথ্য। এমন অনেকেই আছেন, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে অনেক মেয়েরাই স্কুলে যায়নি। অন্যদিকে প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম হওয়ায় পাওয়া যায়নি জন্মের শংসাপত্রও। ফলে স্থানীয় পঞ্চায়েতের দেওয়া শংসাপত্র জমা দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। জন্মের নথি না থাকায় বাবার সঙ্গে সম্পর্কেও প্রমাণ করতে পারেননি অনেকেই। কারও বাবা-মা মারা গিয়েছেন। কারও বা বছরের বন্যায় ভেসে গিয়েছে কাগজপত্র। চরে থাকা অনেকেই জমি দখলে রাখলেও পাট্টা নেই।
ইলিম উদ্দিনের স্ত্রীর মতো আশঙ্কায় তালিকায় নাম না থাকা ওই ৪৮, ৪৫৬ জন বিবাহিত মহিলার। কেননা স্বামীদের নাম তালিকায় থাকায় আর নিজেদের নাম সেখানে না থাকায় স্ত্রীরা বিদেশি বলেই গণ্য হবেন।
এছাড়াও বৃদ্ধা কিংবা বিধবারাও রয়েছেন তালিকায়। যাঁদের মধ্যে অনেকেই পর্যাপ্ত নথি জমা করতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে।