প্রথম পঞ্জিভুক্ত নাগরিক হবেন রাষ্ট্রপতি! দেশজুড়ে এনপিআর শুরুর তারিখ ঘোষণা
সিএএ-এনপিআর-এনআরসি নিয়ে দেশজুড়ে চলতে থাকা বিতর্কের মাঝেই শুরু হতে চলেছে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনপিআর-এর প্রক্রিয়া। জানা গিয়েছে এই পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়ায় দেশে প্রথম ব্যক্তি হিসাবে নথিভুক্ত হতে চলেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ১ এপ্রিল থেকেই এই প্রক্তিয়া চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এনপিআর-এ নাম উঠবে প্রধানমন্ত্রী মোদীরও
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নথিভুক্তির দিনই নাগরিকপঞ্জিতে নাম উঠবে উপ-রাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইড়ু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। জেশজুড়ে সংশোধনী আইন নিয়ে অশান্তি ও অনিয়শ্চতার মধ্যেই গতবছরের ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এনপিআর প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
কী এই এনপিআর?
এনপিআর বা জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি হল দেশে থাকা সকল বসবাসকারীদের একটি তালিকা। এদিকে ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী দেশে একটি নাগরিক পঞ্জি তৈরি করতে হবে। সেটি করার প্রক্রিয়া হল দেশে বসবাসকারী জনগণের মধ্যে থেকে নাগরিক ও বিদেশিদের আলাদ করা। প্রসঙ্গত, এই এনপিআরকেই বিরোধীরা এনআরসির প্রথম ধাপ হিসাবে দেখছে। ইতিমধ্যেই এই জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জির প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, কেরলের মতো রাজ্যগুলি।
এনপিআর প্রক্রিয়া কী করে হয়?
এই প্রক্রিয়া কী করে হয়? প্রথমেই জনসংখ্যা পঞ্জি তৈরি হলে সেখানে থাকা কোনও সন্দেভাজন লোককে স্থানীয় আধিকারিকরা তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য বলবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে একটি খসড়া তালিকা তৈরি হবে। এদিকে এই জনসংখ্যা পঞ্জি তৈরির প্রক্রিয়া চলাকালীন ভারতীয়দের গোপন তথ্য, এমন কী তাদের পাসপোর্টের তথ্যও নেওয়া হবে।
এনপিআর বন্ধ করেছে বেশ কয়েকটি রাজ্য
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে রাজ্যে এবং দেশে প্রবল বিক্ষোভের কারণে পশ্চিমবঙ্গের পর কেরলের সিপিএম নেতৃত্বাধীন সরকারও এনপিআর-এর কাজ স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করে। কেরলে এনপিআরের কাজ হওয়ার কথা ছিল সামনের বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে ২৯ মে-র মধ্যে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এনপিআর সাংবিধানিক মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুত। এছাড়াও বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনাধীন রয়েছে। এছাড়াও এনপিআর-এর বিরোধিতায় নেমেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারও। সিএএ নিয়ে শরিক বিজেপির পাশে দাঁড়ালেও এই ক্ষেত্রে শরিকদের বিপরীত মত পোষণ করছেন জেডিইউ প্রধান।
সুপ্রিম কোর্টে এনপিআর বিরোধী আবেদনকারীর দাবি
সুপ্রিম কোর্টে এনপিআর বিরোধী আবেদনকারীর কথায়, 'নাগরিকত্ব (নাগরিকদের নিবন্ধকরণ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র) বিধিমালা, ২০০৩-এর অধীনে যে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই আইনে তথ্যের অপব্যবহার থেকে কোনও সুরক্ষার গ্যারান্টি নেই। আধার বা আদমশুমারির সংগৃহীত তথ্যের তুলনায় এনপিআর-এ সংগৃহীত তথ্য পৃথক। এর মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের উপর অনুমোদনহীন নজরদারিও চালাতে পারে সরকার।'