এখন মনে হচ্ছে শাস্তি আমরা পাচ্ছি, মন্তব্য ক্ষুব্ধ নির্ভয়ার মায়ের
এখন মনে হচ্ছে শাস্তি আমরা পাচ্ছি, মন্তব্য ক্ষুব্ধ নির্ভয়ার মায়ের
২০১২ সালে জাতীয় রাজধানীতে ছ’জনের হাতে পাশবিকভাবে গণধর্ষণের শিকার হতে হয় প্যারামেডিক্যালের এক ছাত্রীকে। প্রায় সাত বছর পর সেই মামলায় দোষী চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হলেও কিছুতেই যেন তা কার্যকর হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার নির্ভয়ার মা স্পষ্টভাবে জানান যে দোষীরা আইনের কৌশল নিয়ে এই মামলাকে বিলম্ব করছে। এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি সরাসরি সরকার ও আদালতকে দায়ি করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডের দিন পিছিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ নির্ভয়ার পরিবার
নৃশংস এই ধর্ষণের পর নির্ভয়াকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। যেখানে মারা যান তিনি। এরকম পরিস্থিতিতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পদ্ধতি দেরি করে হওয়ায় বেশ ক্ষুব্ধ নির্ভয়ার মা আশা দেবী। তিনি জানিয়েছেন, সরকার ও আদালত আক্রান্তের পরিবারকে সাহায্য না করে, দোষীদেরকে করছে। বৃহস্পতিবার তিহার জেল কর্তৃপক্ষকে দিল্লি আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে শুক্রবারের মধ্যে চার সাজাপ্রাপ্তের মৃত্যুদণ্ডের স্থিতি সংক্রান্ত যথাযথ রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে। এই নির্দেশের পরই নির্ভয়ার মা এ ধরনের মন্তব্য করেন। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সতীশ কুমার অরোরা এই নির্দেশনা জারি করার পরে জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা দোষীদের ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জানুয়ারী নির্ধারিত ফাঁসির বিষয়ে দিল্লি সরকারকে চিঠি দিয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের স্থায়ী পরামর্শদাতা রাহুল মেহরা বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছিলেন যে শুনানি আদালতের ঠিক করা তারিখ অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি ফাঁসি হচ্ছে না, কারণ দোষী সাব্যস্তের একজন মুকেশ কুমার সিং রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেছে।
শাস্তি পাচ্ছি আমরা, জানান নির্ভয়ার মা
আশা দেবী বলেন, ‘এসবের জন্যই মামলায় এত দেরি হচ্ছে। আমাদের প্রতিদিনই এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ছুটতে হচ্ছে। এখন এমন মনে হচ্ছে যে যারা এই অপরাধ করেছে, তারা নয়, বরং আমাদেরকেই শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এখন তো শুধু মুকেশ, বাকি রয়েছে আরও তিনজন (বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিং ও পবন গুপ্তা)। কেউ তাদেরকে নিয়ে কথা বলছে না। সরকার, আইনজীবী কেউই আদালতে এই তিনজনের বিষয়ে কথা বলছে না। তাদের সরকীর ও আদালত সাহায্য করছে।' প্রসঙ্গত, আদালত এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির মধ্যে মুকেশের আবেদনের শুনানি করছিল, যে কারণে রাষ্ট্রপতির কাছে তার করুণার আবেদন মুলতুবি ছিল। যার জন্য তার মৃত্যুদণ্ডের তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়।
নির্ভয়ার বাবার প্রতিক্রিয়া
নির্ভয়ার বাবা জানান, দোষী সাব্যস্তকারীরা আইন প্রয়োগের সমস্ত কৌশল অবলম্বন করেও ফাঁসি থেকে বাঁচতে পারবে না। তিনি জানান শুক্রবারের পদক্ষেপই এই মামলার ভবিষ্যত বলবে। নির্ভয়ার বাবা বলেন, ‘আমরা আশা ছাড়িনি। আক্রান্তের পরিবারের জন্য কোনও আইন নেই কিন্তু সাজাপ্রাপ্তদের জন্য আইনি পদ্ধতি রয়েছে, সেই জন্যই সমস্যাগুলি ঘনীভূত হচ্ছে। আমরা আশা ছাড়ব না, বিচারের জন্য এই লড়াই চলবে।' নির্ভয়ার বাবা বলেন, ‘ন্যায়বিচার খুব বেশি দূরে নয় এবং তাদের ফাঁসির দিনও খুব কাছে। তাদের ফাঁসির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করা উচিত। তারা এটি বিলম্ব করতে পারে, তবে তা ঘটবেই।'
নির্ভয়াকাণ্ডে বিজেপি-আপ দোষারোপের পালা চলছে শুধু! দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়ে কোন দাবি মায়ের