স্কুলে হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক, কেন্দ্রের পদক্ষেপে সরব উত্তর–পূর্ব রাজ্যের একাধিক ছাত্র সংগঠন
স্কুলে হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক, কেন্দ্রের পদক্ষেপে সরব উত্তর–পূর্ব রাজ্যের একাধিক ছাত্র সংগঠন
উত্তর–পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে কেন্দ্র সরকার হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করায় এই রাজ্যগুলির একাধিক সংগঠন প্রতিবাদে মুখর হয়েছে। শুক্রবারই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ হিন্দিকে 'ভারতের ভাষা’ বলে অভিহিত করে জানিয়েছেন যে আঞ্চলিক স্কুলগুলিতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতমামূলক করা হবে। তিনি এও জানান যে উত্তর–পূর্ব রাজ্যগুলিতে হিন্দি শোখানোর জন্য ২২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
বাধ্যতামূলক হিন্দি ভাষা
কিন্তু উত্তর-পূর্বের স্কুলগুলিতে হিন্দি ভাষাকে বাধ্যতামূলক করায় একাধিক সংগঠন প্রতিবাদে সরব হয়েছে। উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনের চেয়ারপার্সন স্যামুয়েল বি. জিরওয়া বলেন, ‘হিন্দি ঐচ্ছিক ভাষা হলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই, কিন্তু এটা এক ধরনের চাপিয়ে দেওয়া।' তিনি জানান যে হিন্দি ঐচ্ছিক ভাষা হিসাবে থাক কিন্তু এভাবে চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে তাঁরা। তিনি এও জানান স্থানীয় ভাষার পাশাপাশি ইংরাজি শিক্ষার একটি পছন্দের মাধ্যম। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করব যে এই অঞ্চলে হিন্দিকে যেন বাধ্যতামূলক ভাষা হিসাবে না রাখা হয়।'
মেঘালয় ও মিজোরামেও নিন্দার ঝড় উঠেছে
মেঘালয়ের বহিষ্কৃত কংগ্রেস সাংসদ আম্পারিন লেংদো জানান যে খাসি ও গারো ভাষার রাজ্য কখনই হিন্দিকে এভাবে নিজেদের ওপর চাপাতে দেবে না। তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আমাদের যে কোনো ধরনের আরোপের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়।' মিজোরামের প্রভাবশালী তরুণ মিজো সংগঠন জানান যে এটা নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক হবে এবং কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টুলুংটিয়া বলেন, ‘এটা নিয়ে গুরুতর আলোচনা দরকার।'
প্রতিবাদে সামিল অসম
অসমে, কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি এই পদক্ষেপকে ‘গণতন্ত্র বিরোধী, সংবিধান বিরোধী' এবং দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে বলে নিন্দা করেছে। সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১৬ সাল থেকে অসম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা থেকে অসমিয়া পেপার সরিয়ে দেয় এবং এখন স্কুলের মাধ্যমগুলিতে হিন্দি চাপিয়ে দিয়ে অসমিয়া বিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সরকারের উচিত রাজ্যে অসমিয়া ভাষাকে বাধ্যতামূলক করা।' সমিতি এও জানিয়েছে যে যদি রাজ্য সরকার হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা না করতে পারে তবে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ২২ হাজার হিন্দি শিক্ষক স্থানীয় হতে হবে এবং তাঁরা যে কোনও ভাষার শিক্ষক হতে পারেন।
অমিত শাহের বক্তব্য
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার জানিয়েছিলেন, হিন্দি ভাষাকেই ইংরেজির বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষা থেকে শব্দ গ্রহণ করে হিন্দিকে নমনীয় না করে তুললে তার প্রসার হবে না। তিনি এও জানান, বিভিন্ন রাজ্যের লোকেদের একে অপরের সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলা উচিত, ইংরেজিতে নয়।
প্রতীকী ছবি
রাম নবমীর শুভ লগ্নে দেশের মানুষের জন্য সুখ প্রার্থনা মোদীর