জেএনইউ তাণ্ডবের ৩৬ ঘণ্টা পরও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না দিল্লি পুলিশ
ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টারও বেশ সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, তবে জেএনইউ-তে হামলাকারী কোনও দুষ্কৃতীকেই এখনও পর্যন্ত ধরতে পারেনি দিল্লি পুলিশ। উল্টে আজ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্র সংসদ সভাপতি ঐশী ঘোষ সহ ২০ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর দায়ে এফআইআর রুজু করেছে দিল্লি পুলিশ।
৩৪ জন ছাত্র ও শিক্ষক জখম হয়
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রবিবার সন্ধ্যায় হামলা চালায় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্র ও আক্রান্ত শিক্ষকদের অভিযোগর তির আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দিকে। রবিবারের হামলায় জেএনইউ ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ঐশী ঘোষ সহ ৩৪ জন ছাত্র বা শিক্ষক জখম হয়ে ভর্তি করা হয় দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকাল সায়েন্সে। পরে সোমবার সকালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ থেকে ঘটনার সূত্রপাত
হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে সম্প্রতি সরব হয়েছিল জেএনইউ। সেই রেশেই রবিবার সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেন জেএনইউএর টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেখানেই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। ঘটনার কথা জানিয়ে পুলিশকে ডাকা হলে ক্যাম্পাসে আসে প্রায় ৭০০ পুলিশকর্মী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। যদিও তাণ্ডব তখনও চলছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সামনে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙা হলেও পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। শুধু মাঝে মাঝে একজন দুজনকে পুলিশ আটকাচ্ছিল। তবে তারা কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি।
অজ্ঞাত পরিচয়দের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে দিল্লি পুলিশ
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার অজ্ঞাত পরিচয়দের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি তারা জানায় যে অভিযুক্ত দুষ্কৃতীদের বিভিন্ন ভিডিও দেখে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তারা। এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ডিসিপি দেবেন্দ্র আচার্য এই বিষয়ে বলেন, 'আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও খতিয়ে দেখে দোষীদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াশুরু করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে আমরা এফআইআর করেছি।'
এখনও কোনও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ
এদিকে এই পুরো ঘটনায় পুলিশের নীরব ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে ছাত্র সংসদের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, 'এই হামলা চালিয়ে এবিভিপি-র গুন্ডারা। তাদের নিশানায় সাধারণ ছাত্র ছাড়া শিক্ষকরাও ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে ঘুরে তাণ্ডব চালিয়েছে এবিভিপি-র মুখোশধারীরা। এই তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িয়ে রয়েছে পুলিশও। তারা সংঘ সমর্থক প্রফেসরদের কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেছে এবং তাণ্ডব করতে গুন্ডাদের সাহায্য করেছে।' তবে পুলিশ এখনও কোনও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় উঠছে আরও প্রশ্ন।