'দেশের অর্থনীতির বেহাল দশার মধ্যেই পাকিস্তান নিয়ে চিন্তিত প্রধানমন্ত্রী', কটাক্ষ কপিল সিব্বলের
কেরলের কোঝিকোড়েতে সিএএ বিরোধী এক জনসভায় বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দেশের অর্থনীতি ও চাকরির অভাব নিয়ে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। শনিবারের এই সভা থেকে কপিল সিব্বল প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, দেশ যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সেগুলি সমাধান করার পরিবর্তে পাকিস্তান সম্পর্কে আলোচনা ও স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
'জনগণকে আক্রমণ করছে কেন্দ্র'
কোঝিকোড়ের সিএএ বিরোধী সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় সিব্বল বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার নিজের জনগণকে রক্ষা করার পরিবর্তে তাদের 'আক্রমণ' করছে।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেন। তিনি ঘুম থেকে উঠে পাকিস্তানের কথা বলেন। সংসদে আলোচনার সময় তিনি পাকিস্তানের কথা বলেন। তিনি ভারত সম্পর্কে পুরোপুরি ভুলে গেছেন। আমাদের দেশ অনেকগুলি সমস্যায় পড়েছে। চাকরি নেই, বৃদ্ধির হার কমেছে, কৃষকরা সংকটের সম্মুখীন। তবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান নিয়ে চিন্তিত।'
'কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে সত্যি বলছেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী'
কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার বিষয়ে কেন্দ্রের নিন্দা করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে এই কথাটি সত্যি না। স্বাধীনতা অর্জনের সময় থেকেই যাখন যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা কোনও বক্তব্য রেখেছেন, দেশের জনগণ তাঁদের বিশ্বাস করেছেন। তবে ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রীর বক্তব্যই আমরা বিশ্বাস করতে পারি না। যখন সিএএ সংসদে পাস হয়েছিল, এই সরকার এই সম্পর্কে এত মিথ্যা কথা বলেছিল'
এনআরসির সমালোচনা
এদিকে কেন্দ্রের প্রস্তাবিত এনআরসির সমালোচনা করে সিব্বল বলেন, 'এনআরসি শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে নয়। এনআরসি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে। আমি আপনাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে সিএএ-র বিরোধ করব। এই সরকার মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে। এটি একটি দীর্ঘ লড়াই। তবে আমরা আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করব। কংগ্রেস একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে আমরা আইনটির বিরুদ্ধে লড়াই করব এবং পরাজিত করব।'
আরিফ মোহাম্মদকে সংবিধান পড়ার পরামর্শ
তিনি কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মোহাম্মদ খানেরও সমালোচনা করেন। প্রসঙ্গত, বাম-শাসিত রাজ্য সরকারের সাথে সিএএ বিরোধী রেজোলিউশন পাশ করাকে অসাংবিধানিক বলেছিলেন তিনি। আরিফ খানকে সংবিধান পড়ার পরামর্শ দিয়ে সিব্বল বলেন, 'তারা এখানে একজন রাজ্যপালকে পাঠিয়েছে। তারা কি ভাবছিল? আরিফ খান আমার পুরানো বন্ধু। আমি তাঁকে সংবিধানটি পড়ার পরামর্শ দিতে চাই। এবং যদি সে বুঝতে অক্ষম হয় তবে আমি তাঁকে এটি বুঝতে সাহায্য করব।'
নোট বাতিল নিয়ে মোদীকে আক্রমণ
এরপর প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করে সিব্বল বলেন, 'আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, আমি তাঁকে কোথায় কখন ফোন করব? নোট বাতিলের পর তিনি ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে যদি তিনি ভুল প্রমাণিত হন তবে দেশের জনগণ তাঁকে যে কোনও জায়গায় ডেকে তাঁকে যে কোনও শাস্তি দিতে পারেন। তবে তিনি সেদিনের পরে একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি এই বিষয়ে। বিজেপি কেবল লাভ জিহাদ, ট্রিপল তালাক সম্পর্কে কথা বলে। দেখে মনে হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ তালাক পাচ্ছে না। তারা কেবল একটি সম্প্রদায়কে টার্গেট করছে। একটি জাতিকে যখন টার্গেট করা হচ্ছে, তখন পুরো দেশের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।'