বিহারেও দিল্লির কাঁটা! ২০১৯-এর নিরিখে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও বিরোধীরা সঙ্ঘবদ্ধ
দিল্লির পর এবার বিধানসভা নির্বাচন বিহারে। এখনও বাকি আট মাস। তবু এখন থেকেই বিহারকে পাখির চোখ করে শুরু হয়ে গেল অঙ্ককষা। রাজনীতিবিদরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে, বিভিন্ন সমীকরণ নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া।

২০১৯-এর নিরিখে বিজেপি অনেক এগিয়ে
২০১৯ সালে বিহারে জেডিইউ, বিজেপি এবং এলজেপির জোট রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৯টিতে জিতেছে এবং ২৪৩টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ৯০ শতাংশ আসনে তারা এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু, দিল্লির নির্বাচন যেমন দেখিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনগুলি হ'ল সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে লোকসভার অঙ্ক কাজ করবে না।

বিরোধীরা সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছে বিহারে
সাম্প্রতিক রাজ্য নির্বাচনে বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিতে সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছে বিরোধী দলগুলি। সিপিআই নেতা কানহাইয়া কুমার রাজ্যব্যাপী জনগণমন যাত্রা শুরু করেছেন। তেজস্বী যাদব শুরু করেছেন বেরোজগাড়ি হটাও যাত্রা। এমনকী ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরও ১০০ দিনের প্রচার অভিযান চালাবে শাসক জেডিইউ-এর বিজেপি সখ্যতার বিরুদ্ধে। কংগ্রেসও বিরোধী জোটকে এক জায়গায় আনতে তৎপর।

প্রশান্ত কিশোরের অপসারণও বিরুদ্ধে
প্রশান্ত কিশোর সম্প্রতি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডিইউ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। এখনও তিনি বিরোধী কোনও দলে যোগ দেননি। তাঁর রাজনৈতিক ভিত্তি বা দলবদ্ধ ক্ষমতাও নেই। তবুও তার নির্বাচনী পরামর্শদাতা সংস্থা আই-প্যাকের বেশ কয়েকটি সফল নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল তাঁকে বিরোধীরূপে একটা মর্যাদা দেবে।

প্রশান্তের সঙ্গে সাফল্যের নজির
২০১২ সালের গুজরাট এবং ২০১৪ সালের বিজেপি লোকসভার বিজয় থেকে শুরু করে তিনি আজ অরবিন্দ কেজরিওয়াল, জগনমোহন রেড্ডি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এমকে স্টালিনের মতো পছন্দের কৌশলবিদ হয়ে সাফল্য এনেছেন। তাই তাঁর একটা গুরুত্ব থাকবেই।

নীতীশকে জবাব দিতে হবে
মঙ্গলবার প্রশান্ত কিশোর বলেছিলেন, তিনি নীতীশের কাছে জবাব চাইবেন, কেন বিহার তিনি ১৫ বছর শাসন চালানো সত্ত্বেও ভারতের গরিবতম রাজ্য। যে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করে বিহারে ক্ষমতায় এসেছিল জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেসের জোট, সেই বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে তিনি জোট ত্যাগ করেছেন। জনমতকে তিনি গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপির হাত ধরে পাঁচ বছর ক্ষমতা বলবৎ রেখেছেন। তাই তাঁকে সেই জবাবদিহি করতেই হবে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি
বিহারের রাজ্য নির্বাচনের আগে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা উচিত। গত অক্টোবরের শুরুতেই অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, নীতীশ কুমার বিহারে এনডিএর নেতৃত্ব দেবেন।স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের একটা বড় অংশ নীতীশকে মানতে নারাজ। বিজেপি নেতৃত্বে এ ব্যাপারে এক বার্তা দিয়েছে। ফলে শাসক-জোটে কিন্তু ক্ষত রয়েইছে।

‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ছাপ আর বিজেপির জোট
‘ধর্মনিরপেক্ষ' নীতীশ কুমার আর রামবিলাস পাসোয়ানের মতো নেতাদের কিংবা তাদের দলের বিজেপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থেকে ভোট লড়াই করা খুবই সংকট। সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যুও বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে নীতীশ কুমারের। এনআরসি, সিএএ-সহ একাধিক ইস্যুতে মতবিরোধ চলছে বিজেপি ও তাদের শরিকদের সঙ্গে। এই অবস্থা নীতীশ কার্যত চাপে বিহার নির্বাচনের আগে।