মুজাফ্ফরপুর হোম কাণ্ডে নাম জড়ানো 'বাতিল' মন্ত্রীকে টিকিট, নেপথ্যে নীতীশের কোন সমীকরণ
মুজাফ্ফরপুর হোম কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল স্বামী চন্দ্রশেখর ভর্মার। এরপরই বাধ্য হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল মঞ্জু ভর্মাকে। সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল, হোমের কিশোরীদের দিনের পর দিন যৌন হেনস্তার ঘটনায় মূল অভিযুক্তের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে দহরম মহরম রয়েছে মন্ত্রীর স্বামীর। পরে রাজনৈতিক ভাবে ডুবন্ত তরী বাঁচাতেই ইস্তফা দেওয়ানো হয়েছিল মঞ্জুকে। এরপর তদন্ত চলাকালীন তাঁর বাড়ি থেকে ৫০টি বুলেট পাওয়া গেলে অস্ত্র আইনের অধীনে ৬ মাস জেলও খাটেন মঞ্জু।
মঞ্জুকেই ফের চেরিয়া বারিয়ারপুর আসন থেকে টিকিট দেওযা হয়
এহেন মঞ্জুকেই ফের বেগুসারাইয়ের চেরিয়া বারিয়ারপুর আসন থেকে টিকিট দেওযা হল জেডিইউ-র তরফে। তবে নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে সদা চিন্তিত নীতীশ কেন একজন অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রীকে টিকিট দিলেন? উঠছে প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, আরএলএসপি এবং বিএসপি ইতিমধ্যেই একটি জোট গঠন করেছে বিহারে। সেই জোটের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী উপেন্দ্র কুশওয়াহা। তাই কুশওয়াহা ভোট খোয়ানোর ভয়ে রয়েছে জেডিইউ।
জেডিইউ-র ভোটে থাবা
তাছাড়া নীতীশের মূল প্রতিপক্ষ এবার লালু পুত্র তেজস্বী যাদব। এবং কুশওয়াহা এবং যাদবদের মধ্যে মনোমালিন্য লেগেই থাকে। তাই যাদব বিরোধী ভোট কেন্দ্রীভূত করতেও একজন কালিমালিপ্ত প্রাক্তন মন্ত্রীর উপর ভরসা রাখতে পারেন নীতীশ। কারণ যদি উপেন্দ্র-বিএসপি জোট জেডিইউ-র ভোটে থাবা বসায়, তবে আখেরে লাভবান হবে আরজেডি-কংগ্রেস জোট।
মুজাফ্ফরপুর হোম কাণ্ডের ঘটনা
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে মুজাফ্ফরপুর হোম কাণ্ডের ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে নীতীশ কুমার সরকার। তবে সেই ঘটনায় মঞ্জুদেবীকে বলির পাঠা বানানো হয়েছিল বলে অভিযোগ স্বয়ং প্রাক্তন মন্ত্রীর। তাছাড়া দলের উপরও তাঁকে একা ছেড়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিলেন মঞ্জু ভর্মা। সেই সময় মঞ্জুর দাবি ছিল এই ঘটনা সামনে এনেছেন তিনি নিজে। তার ফল স্বরূপ তাঁকেই সরতে হচ্ছে। সেই সময়ও যাদবদের ঘাড়ে এর দোষ চাপাতে চেয়েছিলেন তিনি।
হোমের অর্থ বরাদ্দ করত রাজ্য সরকার
বিহারের মুজফ্ফরপুর সরকারি হোমে যৌন কেলেঙ্কারি কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ব্রজেশ ঠাকুরের সঙ্গে অবশ্য মঞ্জুদেবীর স্বামীর ভালো সম্পর্ক ছিল। যার জেরে তাঁকে সরতে হয়েছিল। তাছাড়া অভিযোগ ছিল চন্দ্রশেখর ভর্মা নিজেও সেই হোমে জেতেন নিয়মিত। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চারতলা ওই হোমটি চলছিল। এবং সেই হোমের অর্থ বরাদ্দ করত মঞ্জুদেবীর মন্ত্রক।
এবছরই চার্জশিট করেছিল সিবিআই
২০১৮ সালের সেই ঘটনার চার্জশিট এবছরই জানুয়ারিতে পেশ করেছিল সিবিআই। তবে চন্দ্রশেখর এবং মঞ্জু ভর্মার নাম ছিল না সেই চার্জশিটে। প্রসঙ্গত, চন্দ্রশেখর নিজে বেগুসরাইতে এককালে প্রভাবশালী বামপন্থী নেতা ছিলেন। ২০১৮ সালে মঞ্জুদেবীর প্রথামিক সদস্যপদও বাতিল করেছিল জেডিইউ। তবে সেই মঞ্চুদেবীকেই এবার ফের টিকিট দেওয়া হল, যা নিয়ে চরমে রাজনৈতিক তরজা।
নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বাজতেই নীতীশ সাজাচ্ছে নিজের ঘুঁটি
জানা যায়, চলতি বছরের নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বাজতেই নীতীশের সঙ্গে নিজের প্রার্থীপদের দাবি জানাতে দেখা করতে যান মঞ্জুদেবী। তবে তাঁকে দেখেই অস্বস্তিতে পরেন নীতীশ। তবে স্বচ্ছভাবমূর্তির চিন্তা দূরে রেখে দুই বারের এই বিধায়ককে ফের টিকিট দেন তিনি। কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে আসন জেতাটা বেশি প্রয়োজনীয় বলে বোধ করছেন নীতীশ কুমার। তাছাড়া জেডিইউর বক্তব্য, মঞ্জু বা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি।
হাথরাস থেকে ইস্যু আমদানি, বিহারে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা পার্টনারশিপে বাজিমাত করতে চাইছে কংগ্রেস