নির্ভয়ার মতোই আরও এক নৃশংস ধর্ষণ আর হত্যার কাহিনি, যা শিউরে দেবে
২০১২ সালের ডিসেম্বরে দেশের সামনে এসেছিল নির্ভয়াকাণ্ড। নারী অত্যাচারের নৃশংসতা কোন পর্যায়ে যেতে পারে তা দেখিয়েছিল এই ঘটনা। এমনকী বাংলার বুকে হওয়া কামদুনিকাণ্ড নৃশংতার সবমাত্রাকেই যেন ছাপিয়ে গিয়েছিল।
নারী অত্যাচারের মানসিকতা কোন পর্যায়ে যেতে পারে তা দেখিয়েছিল নির্ভয়াকাণ্ড। এমনকী এই বাংলার বুকেই ঘটেছিল কামদুনিকাণ্ড। গণধর্ষণের পর নিগৃহীতা এগারো ক্লাসের ছাত্রীর পা-ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল দুষ্কৃতীদের দল। কিছুদিন আগেই নির্ভয়াকাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির সাজাই বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু, নারী অত্যাচারে সমাজের মানসিকতা যে এখন ঘৃণ্য নৃশংসতায় ভরপুর তার প্রমাণ ফের মিলল। এবার দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ফেলে দিল হরিয়ানার রোহতাকের একটি ঘটনা।
রোহতাকে এক যুবতীকে আটকে রেখে একাধিকবার গণধর্ষণই শুধু করা হয়নি, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে অভিযুক্তরা যে পন্থা অবলম্বন করেছে তা হাড় হিম করে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের। জানা গিয়েছে, সোনিপাতের বাসিন্দা সুমিত কুমারের প্রতিবেশী ওই যুবতী। ২২ বছরের ওই যুবতী বিবাহ বিচ্ছিন্না। সুমিত ওই যুবতীকে পুনঃবিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু, যুবতী তাতে না করে দেয়। এতে সুমিতের সন্দেহ ছিল ওই যুবতীর সঙ্গে হয়তো অন্য কারোর সম্পর্ক আছে।
মঙ্গলবার সুমিত এবং তার এক বন্ধু বিকাশ ওই যুবতীর কর্মস্থলে যায়। ঝিল দেখানোর নাম করে সুমিত ও বিকাশ ওই যুবতীকে রোহতাকে নিয়ে যায়। সুমিত ও বিকাশকে পরে পুলিশ জেরা করে জেনেছে, যুবতীকে তারা একটি হোটেলে নিয়ে আসে। সেখানে নেশার ওষুধ মেশানো পানীয় খাওয়ানো হয় যুবতীকে। এরপর ওই যুবতী আচ্ছন্ন হয়ে পড়েল সুমিত এবং বিকাশ দিনভর তাঁকে ধর্ষণ করে। জ্ঞান ফিরলে ওই যুবতী সুমিত ও বিকাশকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ক্ষিপ্ত সুমিত ও বিকাশ ফের নারকীয় অত্য়াচারের মাধ্যমে ওই যুবতীকে ফের ধর্ষণ করে।
হোটেল থেকে ওই যুবতীকে নিয়ে সুমিত ও বিকাশ রোহতাকের ইন্ডাস্ট্রিয়াল মডেল টাউনের এক নির্জন জায়গায় নিয়ে আসে। সেখানে যুবতীর গোপনাঙ্গে ধারাল অস্ত্র ঢুকিয়ে দেয় সুমিতরা। এরপর ফের সুমিত ও বিকাশ একাধিকবার রক্তাক্ত যুবতীকে ওই অবস্থায় ধর্ষণ করে। পরে ইট দিয়ে যুবতীর মুখ থেঁতলে দেয় এবং গোপনাঙ্গে ইট দিয়ে আঘাত করে তারা।
বৃহস্পতিবার রোহতাকের ওই এলাকায় একটি দেহ নিয়ে কুকুরের দলকে মারামারি করতে দেখা যায়। এরপরই পুলিশ খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধাচর করে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি বহু জায়গার মাংস খুবলে খেয়ে নিয়েছিল কুকুরের দল। দেহটির ময়নাতদন্ত করা পণ্ডিত ভগবত দয়াল শর্মা পোস্ট গ্র্যাডুয়েট ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়ান্সেসের চিকিৎসক এস কে ধাত্তাওয়াল জানিয়েছেন, 'যেভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে তা এককথায় নৃশংস এবং ধর্ষকরা যে অস্বাভাবিক যৌন সংসর্গ করেছে তার একাধিক প্রমাণ মিলেছে।'
তদন্তে নেমে পুলিশ সোনিপাতের এক যুবতীর নিখোঁজ থাকার কথা জানতে পারে। হাতে আসে সিসিটিভি ফুটেজ। সেই ফুটেজের ভিত্তিতে ধরা হয় সুমিত ও বিকাশকে। পুলিশি জেরার আসল সত্যটা জানিয়ে দেয় তারা। উদ্ধার হওয়া যুবতীর দেহের ভিসেরাও করা হয়েছে।