নির্ভয়া কাণ্ড : যে কারণে নাবালক ধর্ষককে মুক্তির সিদ্ধান্ত আদালতের
নয়াদিল্লি, ২০ ডিসেম্বর : দিল্লিতে নির্ভয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের নাবালক ধর্ষক মুক্তি নিয়ে রাজধানীতে তো বটেই, বলতে গেলে সারা দেশেই চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। যে নৃশংসতার সঙ্গে ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২-তে নিগৃহীতাকে শুধু ধর্ষণ নয়, বর্বর অত্যাচর করা হয়েছিল, তাতে সারা দেশ গর্জে উঠেছিল।
ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে তিন বছর। ঘটনার সময়ে নাবালক ওই ধর্ষকের বয়স ছিল সতেরো। এখন সে কুড়ি বছরের যুবক। তিন বছরের সাজা কাটিয়ে রবিবার মুক্তি পেয়েছে নাবালক ধর্ষক। আর সেটা আটকাতে সমাজের নানা দিক থেকে প্রতিরোধের ঢেউ আছড়ে পড়েছে।
নাবালক ধর্ষকের মুক্তি আটকাতে ইতিমধ্যেই দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করা হলেও তা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এরপর শনিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন মামলা করেছেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল।
নির্ভয়ার মা আশা দেবী হতাশ কণ্ঠ জানিয়েছেন, তিন বছরের তাদের লড়াই এক মুহূর্তে শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকী অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা হয়নি। অন্যদিকে সাজা কাটিয়ে নাবালক ধর্ষক এখন মুক্তিও পেয়ে গেল।
সুপ্রিম কোর্টে যে মুক্তির বিরুদ্ধে যে আবেদন করা হয়েছে, সেটা শুনে সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করলেও সোমবার এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছে। অথচ রবিবার বিকেলেই মুক্তি পেল নাবালক ধর্ষক।
কিন্তু কেন এত প্রতিরোধ সত্ত্বেও মুক্তি পেল ওই নাবালক ধর্ষক। আইনজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এর পিছনে রয়েছে শুধুমাত্র আইনের মারপ্যাঁচ। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের আইন অনুযায়ী কোনও অপরাধী খুন, ধর্ষণ সহ একাধিক বড় বড় অপরাধ করলেও তার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে মাত্র তিন বছরই। এর বেশি কোনওভাবেই নয়।
আর তাছাড়া আইন তৈরির কাজ সংসদের। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের কিছু করার নেই। কোনও আইন থাকলে সেটার উপযুক্ত প্রয়োগ করে সর্বোচ্চ আদালত। তারা আইন তৈরি করতে পারে না। ফলে নাবালকের বয়স বদলানো হোক বা সাজার মেয়াদ বাড়ানো, সবক্ষেত্রেই তা সংসদে পাশ করে তবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে আসে।
আগামিদিনে আইন বদলানো হলে, সেই দিন থেকে আসা মামলার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে। পুরনো মামলায় ক্ষেত্রে নয়। আর এই আইনের জন্যই সব প্রতিরোধ সত্ত্বেও মুক্তি পেয়েছে দিল্লি গণধর্ষণ মামলার নাবালক ধর্ষক।