জটিলতার কারণে মাঝরাত থেকে কার্যকর নয় বর্ধিত রেলভাড়া, হবে ২৫ জুন থেকে
গতকালই এসি থেকে স্লিপার ক্লাস মায় সাধারণ শ্রেণীতেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১৪.২ শতাংশ হারে। বিকেলে রেলের তরফে খবর মিলেছিল, মাঝরাত থেকে কার্যকর হচ্ছে বর্ধিত ভাড়া। অর্থাৎ শনিবার থেকে যাঁরা টিকিট কাটতেন, তাঁদের ওই ভাড়া দিতে হত। কিন্তু বেঁকে বসেন রেলকর্তাদেরই একাংশ। তাঁরা রেলওয়ে বোর্ডকে জানান, এত তাড়াতাড়ি বর্ধিত ভাড়া কার্যকর করা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: লজঝড়ে রেল চাই নাকি বিশ্বমানের পরিষেবা, ঠিক করুক দেশ: অরুণ জেটলি
প্রথমত, সব স্টেশনে ভাড়ার তালিকা পাঠাতে হয় রেলকে। স্টেশনে টাঙানো থাকে সেই তালিকা। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় নতুন তালিকা প্রস্তুত করে তা দেশের সব স্টেশনে কীভাবে পাঠানো যাবে, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। দ্বিতীয়ত, পুরনো ভাড়ার তালিকা স্টেশনে স্টেশনে থাকা সত্ত্বেও বর্ধিত হারে ভাড়া নেওয়া হলে বিভ্রান্তি বাড়বে স্বাভাবিকভাবেই। তাতে রেলকর্মীদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা বাধবে। এর ফলে বড় গণ্ডগোল বেধে যেতে পারে। তৃতীয়ত, ইন্টারনেটেও নতুন ভাড়ার তালিকা আপলোড করতে হবে। প্রতিটি ট্রেন ধরে ধরে সেটা করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কয়েক ঘণ্টায় তা করা যাবে না বলেই মত দেন রেল ভবনের অফিসাররা। এই মতামত তাঁরা জানান রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান অরুণেন্দ্র কুমারকে। তিনি নিজেও বুঝতে পারেন কয়েক ঘণ্টায় বিষয়টি বাস্তবায়িত করা কত শক্ত! তাই রেলমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়ার সঙ্গে আলোচনা করে তিনি ঠিক করেন, ২৫ জুন থেকে বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হচ্ছে।
রেল জানিয়েছে, ২৫ জুনের আগে যাঁরা টিকিট কাটবেন, তাঁদের ওই তারিখের পর যাত্রার সময় অতিরিক্ত টাকা টিকিট পরীক্ষককে গুনে দিতে হবে। রেলে ভাড়া বাড়ায় মহার্ঘ হচ্ছে মান্থলিও। এর ফলে শহরতলির যাত্রীদের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে। দূরপাল্লার ট্রেনে ১৪.২ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়লেও লোকাল ট্রেনে মাসিক টিকিট তার চেয়েও দামি হচ্ছে। কারণ আগে ১৫টি সফরের হিসাব ধরে ভাড়া নেওয়া হত, এখন ৩০টি সফরের হিসাব ধরে ভাড়া নেওয়া হবে।
ভাড়া বাড়ায় হাওড়া-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসে এসি থ্রি-টিয়ারে ভাড়া পড়বে ২১৮৬ টাকা। আগে তা ছিল ১৯১৫ টাকা। টু-টিয়ারে ভাড়া হবে ৩০০৯ টাকা। আগে ছিল ২৬৩৫ টাকা। এসি ফার্স্ট ক্লাসে ভাড়া ছিল ৪৩৯০ টাকা। বেড়ে হল ৫০১৩ টাকা।
বলা ভালো, ১৪.২ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গত ১৬ মে ঘোষণা করেছিল বিদায়ী ইউপিএ সরকার। কিন্তু বিরোধীরা হইচই শুরু করায় সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহৃত হয়েছিল। এ বার এনডিএ সরকার পূর্বসূরীদের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিল।