ডিসেম্বরের আগেই ভারতে ঢুকেছে নয়া করোনা স্ট্রেন? এইমস অধিকর্তার কথায় বাড়ছে আশঙ্কা
দিন যত গড়াচ্ছে ব্রিটেনের নয়া করোনা স্ট্রেনে আগণে আতঙ্ক বাড়ছে গোটা দেশজুড়েই। এদিকে আগের থেকেও ৭০% অধিক সংক্রামক ব্রিটেনের এই নয়া করোনা স্ট্রেন। স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটেনের সাথে উড়ানপথে সমস্তরকমের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে মোদি সরকার। যদিও তাতে কাবু করা যায়নি নব স্ট্রেনকে। এখনও পর্যন্ত ভারতে ২০ জনের শরীরে মিলেছে বিবর্তিত করোনার স্ট্রেন। অন্যদিকে এইমসের অধিকর্তা ডঃ রণদীপ গুলেরিয়ার মতে, ডিসেম্বরের আগেই হয়তো ভারতে প্রবেশ করেছে ব্রিটেনের স্ট্রেন। ব্রিটেনে এই স্ট্রেন ধরা পড়ে সেপ্টেম্বরে, আর তাই স্বাভাবিকভাবেই ভারতে নভেম্বরের মধ্যেই যে অভিযোজিত ভাইরাসের ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল, তা জানালেন ডাঃ গুলেরিয়া।

ডিসেম্বরের আগেই ভারতে নতুন করোনা স্ট্রেন ?
কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, ভারতে সঠিক জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য ইতিমধ্যেই গঠিত হয়েছে এসএআরএস-সিওভি-২ জিনোম কনসর্টিয়া (আইএনএসএসিওজি)। ডঃ গুলেরিয়ার মতে, "আইএনএসএসিওজি নভেম্বরের নমুনাও খতিয়ে দেখছে। আশা রাখি, আমরা শীঘ্রই ফলাফল জানাতে পারব।" অন্যদিকে ব্রিটেনে নতুন স্ট্রেন ধরা পড়ার আগেই হল্যান্ডে ধরা পড়েছিল বহুরূপী ভাইরাস, ফলে স্বাভাবিকভাবে নভেম্বরেই ভারতে নবস্ট্রেনের প্রবেশের ধারণা বদ্ধমূল হচ্ছে করোনাবিদদের মনে।

সংক্রমণের গতি বৃদ্ধিই চিন্তার কারণ
ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, করোনার আগের রূপের থেকেও বীভৎস ব্রিটেনের নয়া স্ট্রেন, আর তাতেই বাড়ছে ভয়। গবেষকদের মতে, ডিএনএ সজ্জায় বদল করে আগের থেকেও অনেক দ্রুত সংক্রমণ ঘটাচ্ছে বিবর্তিত ভাইরাস। নব স্ট্রেনের ফলে মারাত্মক ক্ষতি বা হাসপাতালে ভর্তির মত ঘটনা না ঘটলেও সাবধান থাকাটাই বাঞ্ছনীয়, এমনটাই মত ডঃ গুলেরিয়ার। যদিও তাঁর মতে, "ভারতের কোভিড গ্রাফে স্পষ্ট যে নভেম্বরে প্রবেশ করলেও আক্রান্তের সংখ্যায় জোয়ার আনতে পারেনি এই নতুন স্ট্রেন!"

ভ্যাকসিন গবেষণায় প্রভাব ফেলবে না ব্রিটেনের স্ট্রেন
ভারতে এই মুহূর্তে সেভাবে চাঞ্চল্য না ছড়ালেও বাঁচতে গেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে, এমনটাই জানালেন এইমসের গবেষকরা। অন্যদিকে নতুন স্ট্রেনের ফলে যে ভ্যাকসিন গবেষণা কোনোভাবেই প্রভাবিত হবে না, সেকথাও জানালেন ডাঃ গুলেরিয়া। তাঁর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, "ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের খুব সামান্য অংশেরই অভিযোজন ঘটেছে। যদিও ভ্যাকসিন স্পাইক প্রোটিনের বিরুদ্ধে লড়লেও শরীরে টি-কোষ তৈরিতেও সহায়তা করে। ফলে একাধিক ক্ষেত্রে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ছে ভ্যাকসিন। আর তাই বলাই যায় যে নব স্ট্রেনের বিরুদ্ধেও কার্যকর হবে প্রতিষেধক।"

আদৌও কতটা নিরাপদ রয়েছে ভারত ?
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ডাঃ গুলেরিয়ার আরও বলেন, "গত ১০ মাসে ধরে যে ভাবে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে, এই স্ট্রেনও সেই কোভিডেরই অংশ। তাই আশা করি, ভ্যাকসিন নতুন স্ট্রেনকেও কাবু করতে সক্ষম হবে।" যদিও সংক্রমণের গতি বেড়ে যাওয়ার কারণে যে ভ্যাকসিন প্রস্তুতির গতিও বৃদ্ধি করতে হবে, সে বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। অন্যদিকে নয়া করোনা আতঙ্কের মাঝে ভারত এখন যথেষ্ট ভালো স্থানে রয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। এমনকী নবস্ট্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই আগাম কনসর্টিয়াম গঠনের সিদ্ধান্তের দ্রুত সুফল মিলবে বলে মত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের।
নিউ ইয়ার পার্টি নয়, বেঙ্গালুরুতেও জারি করা হল ১৪৪ ধারা