জাহাঙ্গীরপুরীর অবৈধ নির্মাণ সরাতে ৪০০ পুলিশ চাইল এনডিএমসি, স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
জাহাঙ্গীরপুরীর অবৈধ নির্মাণ সরাতে ৪০০ পুলিশ চাইল এনডিএমসি, স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের
দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পর এবার উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ( এনডিএমসি) ২০ ও ২১ এপ্রিল এলাকায় একটি 'বিশেষ যৌথ দখল অপসারণ কর্মসূচী' ঘোষণা করেছিল। এই কাজের জন্য নাগরিক সংস্থাটি ৪০০ পুলিশ কর্মী চেয়েছে দিল্লি পুলিশের কাছে আবেদনও করে৷ অবৈধ নির্মান সরানোর সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন করার আবেদন জানিয়েছিল উত্তর দিল্লি পুরসভা৷ দিল্লি বিজেপির প্রধান আদেশ গুপ্তা এনডিএমসি-র মেয়রকে একটি চিঠি লিখে অভিযোগ করেন যে জাহাঙ্গীরপুরী হিংসার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তরা এলাকায় অবৈধ নির্মাণ এবং দখলেও জড়িত রয়েছে। তিনি উত্তর দিল্লি এলাকার 'অবৈধ নির্মাণ'গুলি ভেঙে দেওয়ার দাবিও জানান।
কী বলল সুপ্রিম কোর্ট?
এরপরই, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে এই অবৈধ নির্মাণ সরানোর অভিযানের উপর বুধবার স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ যদিও সুপৃরিম কোর্টের এই নির্দেশ হাতে আসার আগে অবৈধ নির্মান সরানোর কাজ চালিয়ে গিয়েছে পুরসভা৷ উত্তর দিল্লির যে এলাকায় হিংসা ছড়িয়েছিল সেখানে অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে শুরু হওয়া কর্মসূচীটি দ্রুত থামেনি কারণ পুরসভার কর্মকর্তারা শীর্ষ আদালতের আদেশের কোনও কপি পাননি৷ দেশের সর্বোচ্চ আদালত পুরো কর্মসূচীতে স্থগিতাদেশ দেওয়ার এক ঘন্টারও বেশি সময় পরে এটি বন্ধ হয়। আগামীকাল সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে শুনানি করবে।
পুরসভাকে চিঠিতে কী লিখেছিলেন শর্মা?
শর্মা চিঠিতে লিখেছেন, 'আপনি জানেন, হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে জাহাঙ্গীরপুরীতে একটি শোভা যাত্রা বের হয়েছিল। এই শোভাযাত্রায় কিছু অসামাজিক হিংসাপ্রবণ লোক পাথর ছোঁড়ে৷ এই অসামাজিক দুষ্কৃতীদের স্থানীয় আপ বিধায়ক এবং কাউন্সিলরের সমর্থন রয়েছে যার ফলস্বরূপ এই অনুপ্রেবশকারীরা বড় আকারে দখল চালাচ্ছে। এই দাঙ্গাবাজদের তৈরি অবৈধ দখলগুলি চিহ্নিত করা উচিত এবং এর উপর বুলডোজার চালানো উচিত।' প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে, মধ্যপ্রদেশ সরকার রাম নবমীর মিছিলে খারগোনে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে জড়িত থাকা অভিযুক্তদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে।
পুরো ঘটনায় কী বলছে দিল্লি বিজেপির নেতারা?
কয়েকদিন আগে দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী এলাকায় শান্তি ফিরিয়ি আনতে 'আমন কমিটির বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে৷ যেখানে দিল্লির উত্তর-পশ্চিম জেলার পুলিশ আধিকারিকরা, পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসিপি) ঊষা রঙ্গনানি ও জাহাঙ্গীরপুরি এবং আদর্শনগরের নগরের আমন কমিটির সদস্য এবং বিজেপি কাউন্সিলর গরিমা গুপ্তা উপস্থিত ছিলেন৷ এলাকায় হিংসা সরিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এই শান্তি ফেরানোই ছিল এই বৈঠকের লক্ষ্য। যদিও বৈঠকে কোনও রকমের সমাধান মেলেনি৷ বৈঠকের শুরু থেকেই হিন্দু-মুসলিমরা দু'পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি এমন জায়গাতে পৌঁছয় যে বৈঠক থামাতে হয়৷ এই বৈঠকেই একজন বিজেপি কাউন্সিলর হনুমান জয়ন্তীতে হিংসার জন্য দিল্লির অবৈধ অভিবাসীদের দায়ী করেন৷ এরপরই দুই গোষ্ঠীর তর্কের কারণে মিটিং শেষ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন৷ দিল্লিতে সাম্প্রদায়িকহিংসা নিয়ে বিজেপি কাউন্সিলরের মতোই প্রায় একই সুর শোনা গেল দিল্লির বিজেপি নেতা আদেশ গুপ্তার গলায়।
জাহাঙ্গিরপুরীর দখলমুক্ত অভিযানে স্থগিতাদেশ সুপ্রিমকোর্টের