'ম্যাজিক ফিগার' থেকে ৩৯ আসন কম পাবে এনডিএ, দাবি সমীক্ষায়
ভোটের মুখে এই সমীক্ষাটি চালিয়েছিল এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেন। সারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তারা এই সমীক্ষা চালায়। হরিয়ানা থেকে তামিলনাড়ু, গুজরাত থেকে বাংলা, সর্বত্রই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রবল হাওয়া। হিন্দি বলয়, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রে বিজেপি ঝেঁটিয়ে কংগ্রেসকে সাফ করে দেবে, বোঝাই যাচ্ছে। আর যেখানে বিজেপি ততটা শক্তি ধরছে না, যেমন বাংলা কিংবা তামিলনাড়ু, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস বা এআইএডিএমকে-র পক্ষে রয়েছে জনমত।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বিজেপি একাই পাবে ২০৯টি আসন। রাজস্থান, গুজরাত, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, বিহার ইত্যাদি জায়গায় ভালো ফল করবে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশেও তাদের ফল ভালো হবে। লক্ষণীয়, গত কয়েক বছর ধরে সমাজবাদী পার্টি বা বহুজন সমাজ পার্টির একাধিপত্য ঘুরিয়ে ফিরেয়ে দেখেছে উত্তরপ্রদেশ। কিন্তু এবার জাতীয় দল বিজেপি সেখানে অর্ধেকেরও বেশি আসন পেতে চলেছে। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে লোকসভা আসন হল ৮০টি। বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি ৪০টির বেশি আসন পেতে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ কেন্দ্রে সরকার গড়ার ক্ষেত্রে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে বিজেপি কেন্দ্রে সরকার গড়েছিল, কারণ এই রাজ্যে তারা ভালো ফল করেছিল। এবারও তার পুনরাবৃত্তি হবে বলে আশা।
সমীক্ষা অনুযায়ী,এনডিএ ২৩৩ আসন পেতে পারে যার মধ্যে বিজেপি পেতে পারে ২০৯টি আসন
এ তো গেল শুধু জেপি-র কথা। আর তাদের বাকি শরিক, যেমন মহারাষ্ট্রের শিবসেনা বা পাঞ্জাবের অকালি দল ইত্যাদি ধরলে এনডিএ-র আসন দাঁড়াচ্ছে ২৩৩টি।
পাশাপাশি কংগ্রেসের অবস্থা তথৈবচ। রাহুল গান্ধী বা কংগ্রেস নেতারা যতই এমন প্রাক্-নির্বাচনী সমীক্ষাকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন, তাঁরা লোকসভা ভোটে ৯১টি আসন পাবেন বলে দাবি করা হয়েছে। এবিপি নিউজ-এসি নিয়েলসেনের সমীক্ষায় দাবি, ইউপিএ পেতে চলেছে ১১৯টি আসন। কংগ্রেসের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হবে কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলোতেই!
প্রশ্ন হল, সরকার গড়তে দরকার ২৭২টি আসন। এনডিএ সত্যিই যদি ২৩৩টি পায়, তা হলে কম পড়ছে ৩৯টি আসন। এই ঘাটতি পূরণ হবে কী করে? কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়ললিতার দল ভালো করবে বলে ওই সমীক্ষায় দাবি করা হলেও তাঁরা নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে হাত মেলাবেন না। ফলে প্রয়োজনীয় গরিষ্ঠতা কীভাবে পাবে বিজেপি? উপায় দুটো। এক, নতুন নতুন শরিক খুঁজে বের করা। মন্ত্রিত্বের টোপ দিয়ে নতুন শরিক জোগাড় করতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। অথবা ভাঙিয়ে আনতে হবে সাংসদ। বিজেপি কোনটা করে, সেটাই দেখতে হবে।
পাশাপাশি, ওই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, ৫৪ শতাংশ মানুষ চাইছেন নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হোন। মাস তিনেক আগেও এই সংখ্যাটা ৪৫-৪৮ শতাংশ ছিল। অন্যদিকে, রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চান ১৮ শতাংশ মানুষ। পছন্দের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিন মাস আগেও ১৭-১৮ শতাংশ লোক চাইছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। সেখানে এখন মাত্র তিন শতাংশ মানুষ চাইছেন, প্রধানমন্ত্রী হোন তিনি। পরিষ্কার, হু-হু করে কমেছে তাঁর জনপ্রিয়তা।
আর একটি বিষয় উল্লেখ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হল, তৃণমূল কংগ্রেসের সাফল্য। মমতার দল একাই ২৮টি আসন পাবে বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তা ছিল ১৯টি। বামেরা যেখানে গতবার ১৫টি আসন পেয়েছিল, সেখানে তারা এবার পেতে পারে ১০টি আসন। বাম তথা সিপিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যতই প্রচার করুক, মানুষ যে তাতে কান দিতে রাজি নয়, তা বোঝা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে বামেদের পাশাপাশি খারাপ অবস্থা হবে কংগ্রেসেরও। তারা গতবার ৬টি আসন পেয়েছিল। এবার তা কমবে বলে দাবি করা হয়েছে।