
সম্পত্তির জন্য মাকে ত্যাগ, ভোটের মুখে নভজ্যোৎ সিধুকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ বড় বোনের
পাঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচন রীতিমতো জমজমাট। হটসিট হয়ে উঠতে চলছে অমৃতসর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রটি। কারণ এই কেন্দ্রে জোট প্রার্থী হচ্ছেন শিরোমণি অকালি দলের বিক্রম সিং মাজিথিয়া। তাঁর বিপক্ষে রয়েছেন কংগ্রেসের পাঞ্জাবের প্রধান নভজ্যোৎ সিং সিধু। তবে নির্বাচনের মুখে বিপাকে পড়লেন সিধু। তাও আবার নিজের বড় বোনের জন্য।

মাকে তাড়িয়ে দেন সিধু
পাঞ্জাব কংগ্রেস প্রধান নভজ্যোৎ সিং সিধুর বড় বোন সুমন তুর তাঁর ওপর অভিযোগ তুলে জানান যে বৃদ্ধ বয়সে সিধু তাঁর মাকে শুধুমাত্র অর্থের জন্য ত্যাগ করেন। আমেরিকায় বসবাসকারী সুমন তুর তাঁর ভাই সিধুকে 'নিষ্ঠুর ব্যক্তি' বলে অভিহীত করেছেন। বর্তমানে সুমন তুর চণ্ডীগড়ে রয়েছেন, যেখানে তিনি সংবাদিক সম্মেলন করেন শুক্রবার। সাংবাদিকদের সামনেই তিনি সিধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানিয়েছেন যে সিধু তাঁকে ও তাঁদের মাকে ১৯৮৬ সালে তাঁদের বাবা মারা যাওয়ার পর তাড়িয়ে দেন। সুমন এও দাবি করেছেন যে তাঁদের মা ১৯৮৯ সালে রেল স্টেশনে মারা যান। সুমন তুর বলেন, 'আমরা খুব কঠিন সময় দেখেছি। আমার মা চারমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমি যা দাবি করছি তার তথ্যগত প্রমাণ রয়েছে।'

সম্পত্তির জন্য সম্পর্ক ত্যাগ দিদি–মায়ের সঙ্গে
সুমন তুর অভিযোগ এও করেন যে সম্পত্তির জন্য সিধু তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন। তিনি বলেন, 'আমার বাবা মৃত্যুর আগে বাড়ি ও জমি সহ পেনশন রেখে যান।' নভজ্যোৎ সিং সিধু শুধু টাকার জন্যই তাঁদের মাকে ত্যাগ করেন। তুর জানান যে সিধুর থেকে তাঁদের কোনও টাকার দরকার নেই। নভজ্যোৎ সিধুকে 'নিষ্ঠুর ব্যক্তি' বলে অ্যাখা দিয়ে সুমন তুর দাবি করেছেন যে ১৯৮৭ সালে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সিধু তাঁর অভিভাবকদের বিচ্ছেদ নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছিলেন। তুর বলেন, 'নভজ্যোৎ সিং সিধু আমাদের অভিভাবক নিয়ে যেটা দাবি করেছেন তা মিথ্যা।' সুমন তুর তাঁর ভাইয়ের থেকে তাঁদের মা-বাবার বিচ্ছেদ সংক্রান্ত প্রমাণের দাবি করেন। তুর বলেন, 'আমার মা-বাবার আইনত বিচ্ছেদ হয়েছে এই দাবির পর মা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।'

সিধু ব্লক করেছেন দিদিকে
সুমন তুর আরও বিস্ফোরক দাবি করে জানান যে ২০ জানুয়ারি তিনি সিধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কিন্তু সিধু তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাননি এবং বাড়ির দরজাও খোলেননি। সুমন তুর বলেছেন, 'নভজ্যোৎ সিং সিধুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরে আমি এই সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য করতে বাধ্য হয়েছি। সিধু তাঁর ফোন থেকে আমায় ব্লক করে রেখেছে। তাঁর পরিচারকও দরজা খোলেনি। আমি আমার মায়ের জন্য ন্যায় চাই।' তিনি বলেন, 'আমি ৭০ বছরের এবং নিজের পরিবার নিয়ে এ ধরনের কথা সামনে নিয়ে আসা খুবই কঠিন ব্যাপার।'

২০ ফেব্রুয়ারি ভোট পাঞ্জাবে
পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে ৫৮ বছরের কংগ্রেস নেতা যখন রাজ্যে প্রচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, ঠিক সেই সময়ই তাঁরই পরিবারের সদস্যের কাছ থেকে এই কাদা ছোঁড়ার ঘটনাটি ঘটল। এর প্রভাব সিধুর নির্বাচনের ফলের ওপর পড়বে কিনা তা সময় বলে দেবে। ২০ ফেব্রুয়ারি পাঞ্জাবের ১১৭টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন রয়েছে।