শীঘ্রই আসতে চলেছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন, নাগপুর সহ দেশের চার শহরে ট্রায়াল শুরু ভারত বায়োটেকের
শীঘ্রই আসতে চলেছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন
আগামী ১৩ জানুয়ারি ভারতে শুরু হতে পারে টিকাকরণ। ইতিমধ্যেই দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি দু’টি ভ্যাকসিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এরই মধ্যে আরও একটি সুখবর সামনে আসল। এবার দেশে ভারত বায়োটেকের হাত ধরে আসতে চলেছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন। যা খুব শীঘ্রই প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে নাগপুরের গিলুরকর মাল্টি স্পেশালিটিতে।
ন্যাজাল ভ্যাকসিন শ্রেষ্ঠ
ভারত বায়োটেকের প্রধান ডাঃ কৃষ্ণা ইল্লা বৃহস্পতিবার বলেন, 'আমরা ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ওপর কাজ করছি এবং এর জন্য আমরা ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের সঙ্গে জোট বেঁধেছি। দুই ডোজের নিষ্ক্রিয় ডোজের বদলে আমরা একক ডোজ নিয়ে কাজ করছি। গবেষণায় এটা প্রমাণিত যে ন্যাজাল ভ্যাকসিন শ্রেষ্ঠ। কারণ নাকের মাধ্যমেই করোনা ভাইরাস আক্রমণ করে।' ডাঃ চন্দ্রশেখর গিলুরকর বলেন, 'পরবর্তী দু'সপ্তাহের মধ্যে আমরা ন্যাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করে দেব। পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণে উঠে এসেছে যে ইঞ্জেকশনের চেয়ে নাকের মাধ্যমে যদি টিকাকরণ করা হয় তবে তা বেশি কার্যকর হয়। ডিসিজিআইয়ের কাছে ভারত বায়োটেক এ সংক্রান্ত প্রস্তাব শীঘ্রই পাঠাবে।'
চার শহরে ট্রায়াল হবে
এই ট্রায়ালের জন্য কমপক্ষে ৩০-৪৫ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন, যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হবে এবং ভুবনেশ্বর, পুনে, নাগপুর ও হায়দরাবাদ দেশের এই চার শহরে এই ট্রায়াল হবে। সম্প্রতি ভারত বায়োটেক দু'টি ইন্ট্রান্যাজাল টিকা নিয়ে কাজ করছে৷ একটি ভ্যাকসিনের জন্য ভারত বায়োটেক মার্কিন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক ফ্লুজেন এবং উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করেছে এবং দ্বিতীয়টি ওয়াশিংটন স্কুল অফ মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের এই ন্যাজাল রূপ, যা বর্তমানে আমেরিকায় ট্রায়াল চলছে, তা যদি সফল হয়, তবে তা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
ন্যাজাল ভ্যাকসিন কী
অন্যান্য কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনগুলির মতো এটা নয়। এই ভ্যাকসিন পেশির বদলে নাকের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে, যা মানুষের মধ্যে সংক্রমণের প্রাথমিক প্রবেশপথ। ওয়াশিংটন স্কুল অফ মেডিসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে নাকের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেহে প্রবেশ করলে গোটা শরীরে জোরালো ইমিউন সিস্টেম তৈরি করে, তবে এটি নাক এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর, দেহে সংক্রমণ বাসা বাধতে বাধা দেয়।
ইঞ্জেকশনের চেয়ে কার্যকর কি ন্যাজাল ভ্যাকসিন?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে নতুন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মধ্যে খেলা বদলে দেওয়ার সেই যোগ্যতা রয়েছে, কারণ ভ্যাকসিন ইন্ট্রাম্যাসকুলারি ইঞ্জেকশন শুধু ফুসফুসের নিম্নভাগকে রক্ষা করবে। কিন্তু ন্যাজাল ভ্যাকসিন ফুসফুসের ওপর-নীচকে রক্ষা করার পাশাপাশি তা সংক্রমণ থেকেই সুরক্ষা দেবে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের সিনিয়র এপিডেমিওলজিস্ট ডাঃ সমীরণ পান্ডা বলেন, 'ন্যাজাল ভ্যাকসিন দ্রুত শোষণ, পরিমাণে অল্প এবং সিরিঞ্জ ব্যবহার না করার মতো সুবিধা প্রদান করে।'
কেবল কোভিড ১৯ টিকাতেই ১০০ শতাংশ সুরক্ষা ভাবলে ভুল হবে! মত বিশেষজ্ঞের