প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম দীপাবলী জওয়ানদের সঙ্গে কনকনে সিয়াচেনে কাটালেন নরেন্দ্র মোদী
শ্রীনগর, ২৪ অক্টোবর : স্বাধীনতা দিবসের দিনই জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর পদ প্রধানমন্ত্রী হলেও তিনি আসলে দেশের "প্রধান সেবক"। সেই বক্তব্যেরই পুনরায় মনে করিয়ে এবং সেনা জওয়ানদের মনোবল বাড়াতে দুর্গম কনকনে সিয়াচেনে আচমকাই পৌঁছে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঘুরলেন দেখলেন কীভাবে আছেন আমাদের দেশের জওয়ানরা। কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। তাঁদের সঙ্গে কাটালেন দীপাবলীর দিনটা। প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে সামনে পাওয়া যাবে ভাবেননি জওয়ানরাও। তাই এবারে তাঁদের দীপাবলীটা কাটল অন্যরকম, মনে রাখার মতো।
১২০০০ ফুট উচ্চতার হিমবাহে ভারতীয় সেনা ঘাঁটি যা পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেন। সেখান থেকে নরেন্দ্র মোদী জওয়ানদের উদ্দেশ্যে বললেন, "এমন অবস্থার মধ্যে কেউ নিদের মাতৃভূমিকে এভাবে রক্ষা করার সুযোগ পায়নি। প্রধান সেবক হিসাবে আমি এই পরিস্থিতি আপনাদের সঙ্গে নিজের চোখে দেখতে পেলাম। অনুভব করলাম। আমার সঙ্গে ডাক্তার এসেছেন যিনি আমার শরীরের দিকে খেয়াল রাখছেন। আমার রক্তচাপ, অক্সিজেন নেওয়ার ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখছে। এতেই বোঝা যায় কত অমূল্য পরিস্থিতিতে আপনারা এখানে থাকছেন।"
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, "সেনাবাহিনীকে তাঁর আসার খবর না দেওয়ার জন্য। কারণ পরিবারের কাছে আসার জন্য একজনের পৌছনোর খবর আগে থেকে দেওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।"
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই ছিল মোদীর প্রথম দীপাবলী। মোদী বললেন, "আমি শুধু দীপাবলী আপনাদের সঙ্গে পালন করব বলেই এসেছি। আমি জানি পরিবারের সঙ্গে দীপাবলী পালনের আনন্দটাই আলাদা। কিন্তু মাতৃভূমির প্রতি আপনাদের এই নিষ্ঠার কারণে আপনারা পরিবারের সঙ্গে দীপাবলীতে থাকতে পারেন না। আপনার এখানে মাতৃভূমিকে আগলে রাখেন, আর অন্য কোথাও আপনার পরিবার দীপাবলী উদযাপন করে। আমার এখানে আসাটা আপনাদের জীবনের সেই শূন্যস্থান হয়তো পূর্ণ করতে পারবে না। কিন্তু ১২৫ কোটা ভারতবাসীর প্রতিনিধি হিসাবে বলতে পারি আমরা গর্বিত ও নিশ্চিন্ত।"
এদিন মোদী বলেন, আমাদের জওয়ানরা দেশের দুর্ম প্রান্তে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে যেভাবে মাতৃভূমিকে রক্ষা করছে, তাতে আমাদেরও দায়িত্ব তাঁদের স্বপ্ন আকাঙ্খা উপলব্ধি করা। জওয়ানদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "আপনাদের স্বপ্ন এবং দায়িত্ব আমাদের সকলের দায়িত্ব। এটা আমার কাছে একেবারেই গ্রহণীয় নয় যে বাহিনী থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আপনাদের কোনওকিছুর জন্য অন্যদের উপর ভরসা করে থাকতে হবে। এটা আমার কর্তব্য যে অবসরের পরও আপনারা আপনাদের পরিবারের সঙ্গে গর্ব ও সম্মান নিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জওয়ানদের আশ্বাস দিয়েছেন, এতদিন ধরে আটকে থাকা এক-পদ-এক-পেনসন-এ আশা পূর্ণ হবে। 'ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল'-এর প্রস্তুতিও শুরু হবে। সম্প্রতি কাশ্মীরে বন্যায় সেনা যেভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।