উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে নয়া পদক্ষেপ, অরুণাচল প্রদেশে বিমান বন্দরের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে নয়া পদক্ষেপ, অরুণাচল প্রদেশে বিমান বন্দরের উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা আর উন্নত করতে কেন্দ্র সরকারের নয়া পদক্ষেপ। শনিবার অরুণাচল প্রদেশের ডানি পোলা বিমান বন্দরের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৬৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে এই বিমানবন্দরটি তৈরি করা হয়েছে। বিমানবন্দরটি অরুণাচল প্রদেশের পর্যটন শিল্প ও বাণিজ্যকে বাড়াতে সাহায্য করবে।
উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী
বিমান বন্দর উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু। তিনি বিমানবন্দরে দ্য গ্রেট হর্নবিল গেট কে স্থাপত্যের বিস্ময় বলে অবিহিত করেছেন। অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং জেলার এক স্থপতি এই ফটকটি তৈরি করেছেন। বুধবার পেমা খান্ডু এই ফটকটির উদ্বোধন করেন। অরুণাচল প্রদেশের ডানিপোলা বিমান বন্দরের আগে তিনটি বিমানবন্দর ছিল। পূর্ব সিয়াং জেলার পাসিঘাট, লোহিত জেলার তেজু এবং লোয়ার সুবানসিরি জেলার জিরো। তবে লোয়ার জেলার সুবানসিরি বিমানবন্দরটি গত মাসে বন্ধ হয়ে যায়।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি
অরুণাচল প্রদেশের ডানিপোলা বিমানবন্দরের ফলে উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জানা গিয়েছে, এই ডানিপোলা বিমান বন্দরে সর্বাধিক ২০০ জন থাকতে পারবে। আটটি চেক ইন কাউন্টার রয়েছে। এই বিমান বন্দরটি অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী ইটানগর থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত। এই বিমান বন্দরে বোয়িং ৭৪৭ এর মতো বড় বিমান উড়তে বা অবতরণ করতে পারবে বলে জানা গিয়েছে। অরুণাচল সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আগে ইটানগর বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিমানবন্দর তৈরির পরিস্থিতি ছিল না। তবে বর্তমানে ইটানগরে বিমানবন্দর তৈরির উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা দৃঢ় হলে পর্যটন ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নতি হয় বলেই অরুণাচল প্রদেশের সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
বাড়বে নিরাপত্তা
অরুণাচল প্রদেশের তিন দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। রাজ্যের উত্তর ও উত্তরপূর্বে চিন, পশ্চিমে ভুটান ও পূর্বে মায়ানমার রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজন। বাণিজ্য বা পর্যটনের পাশাপাশি নিরাপত্তার প্রয়োজন অরুণাচল প্রদেশের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন। ইন্ডিগো ২৮ নভেম্বর থেকে পরিষেবা চালু করবে। বুধবার ছাড়া প্রতিদিন কলকাতা, মুম্বই সহ দেশের একাধিক শহরের সঙ্গে বিমানে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে।
বিমান বন্দরের নাম করণের তাৎপর্য
জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালে বিমানবন্দরটি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৯ সালে বিমানবন্দরটি তৈরির জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিমানবন্দরটির কাজ শেষ হয়। প্রথমে বিমান বন্দরটির নাম অন্য ছিল। পরে রাজ্যের প্রধান উপজাতির বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন করা হয়। উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যটিকে ব্রহ্মপুত্র নদী বিচ্ছিন্ন করে রাখে। স্বাধীনতার পর কয়েক দশক ধরে এই রাজ্যটি সশস্ত্র সংঘাত, রাজনৈতিক সংঘাত ও বিদ্রোহের মুখে পড়ে। সরকার বিচ্ছিন্ন সংগঠনগুলির সঙ্গে বার বার বৈঠক করে চুক্তির মাধ্যে বিদ্রোহ ও সশস্ত্র সংগ্রামে নিয়ন্ত্রণে আনে। অরুণাচল প্রদেশের একাধিক সশস্ত্র বাহিনী মূলধারার রাজনীতিতে যোগ দেয়। সেখানের নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ধীরে ধীরে অরুণাচল প্রদেশের শান্ত হয়ে যায়।
ফের মোদী-মমতা বৈঠক, রাজ্যের বকেয়া নিয়ে বৈঠকের সম্ভাবনা দিল্লি সফরে