গুরু-শিষ্য থেকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, একনজরে মোদী-কেশুভাই সম্পর্ক
প্রয়াত গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই প্যাটেল। সেপ্টেম্বরে কোরোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন তিনি। তবে তিনি উপসর্গহীন ছিলেন। আজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। প্রথমে নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত ছিলেন কেশুভাই। পরে মোদীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে রাজনৈতিক ময়দানে নামতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদী।
সকালে মৃত্যু হয় কেশুভাই প্যাটেলের
এদিন সকালে অচেতন অবস্থায় আহমেদাবাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কেশুভাই প্যাটেলকে। হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়াতেই তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রবীণসকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে ওঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। হাসপাতালের তরফে জানাো হয়, উনি করোনায় মারা যাননি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়।
দুই বার গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন কেশুভাই
১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ এবং ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব সামলান তিনি। ছয়বার গুজরাতের বিধানসভার সদস্যপদে নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে বিজেপি ছাড়েন কেশুভাই। গুজরাত পরিবর্তন পার্টি নামে নিজের দল গড়ে তোলেন। শেষপর্যন্ত আবার বিজেপিতেই ফিরে গিয়েছিলেন কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০১৪ সালে ইস্তফা দেন।
মোদী-কেশুভাই সম্পর্ক
১৯৯০ সালে গুজরাতে বিজেপি দুই শীর্ষ নেতার অন্যতম ছিলেন কেশুভাই প্যাটেল। অপরজন ছিলেন ভাগেলা। দুই নেতা একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সেই সময় রাজনৈতিক ময়দানে ধীরে ধীরে নিজের পায়ের চিহ্ন ফেলতে শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদী। এই মোদীর সাহায্যেই ভাগেলাকে উপরে উঠতে দেননি কেশুভাই প্যাটেল। ১৯৯৫ সালে ভাগেলাকে পাশে রেখে কেশুভাই প্যাটেল মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর নরেন্দ্র মোদীকে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে পাঠিয়ে দেন কেশুভাই।
২০০১ সালে পালা বদল
এরপর অবশ্য ২০০১ সালে ভূজের ভূমিকম্পের পর ত্রাণ কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠতে থাকায় কেশুভাইকে সরিয়ে দেয় বিজেপি। তাঁরই স্থানে মুখ্যমন্ত্রিত্বের গদিতে বসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এর আগে পর্যন্ত কেশুভাই প্যাটেল মোদীকে গুজরাতে ফেরা থেকে বিরত রাখতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন দলের অভ্যন্তরেই। তবে প্রতিবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কেশুভআইয়ের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা করতেন মোদী।
মোদীর উপর কেশুভাইয়ের 'নিষেধাজ্ঞা'
যদিও ২০০১ সালের আগে নরেন্দ্র মোদী নিজের রাজ্য গুজরাতেই একজন অপরিচিত ব্যক্তি হয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৯৫ সাল থেকে ৬ বছর রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক কার্যক্রমেই যোগ দিতে পারেননি মোদী। শুধু তাই নয়, গুজরাতের কোনও সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা করার উপর মোদীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছিলেন কেশুভাই। পরে অবশ্য এই মোদী একদশকের উপরে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর হয়ে যান দেশের প্রধানমন্ত্রী।
কেশুভাইয়ের মৃত্যুতে মোদীর টুইট
এদিন এহেন নেতার মৃত্যুতে দীর্ঘ টুইট বার্তায় প্রধামন্ত্রী মোদী এদিন লেখেন, আমাদের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় কেশুভাই প্রয়াত হয়েছেন। আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি এক দুর্দান্ত নেতা ছিলেন। তিনি সমাজের প্রতিটি স্তরের জন্য ভাবতেন। তিনি তাঁর জীবন গুজরাতের উন্নয়ন ও প্রত্যেক গুজরাটির ক্ষমতায়নের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। কেশুভাই গুজরাতের প্রতিটি প্রান্তে ঘুরেছিলেন জনসংঘ ও বিজেপির শক্তি বাড়াতে। এমার্জেন্সির সময় আপ্রাণ লড়াই করেছিলেন। বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী, সব পদে থাকাকালীনই তিনি কৃষকদের জন্য বহু কল্যাণকর পদক্ষেপ করেছেন।'
মোদীর জনপ্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ তেজস্বীর, বিহারের 'জঙ্গল রাজ' নিয়ে 'যুবরাজ'-এর স্টেপআউট