মনিপুরে উত্তোলন করা হল নাগার জাতীয় পতাকা, পালন করা হল নাগা স্বাধীনতা দিবস
মনিপুরে উত্তোলন করা হল নাগার জাতীয় পতাকা, পালন করা হল নাগা স্বাধীনতা দিবস
একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হর ঘর তেরঙ্গা কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়েছেন। সমস্ত দেশবাসীকে পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানিয়েছেন। ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেল মনিপুরের একাধিক এলাকায়। মনিপুরের একাধিক গ্রামে নাগারা তাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় 'নাগা স্বাধীনতা দিবস' পালনের একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মনিপুরের পাশাপাশি নাগাল্যান্ডের একাধিক গ্রামে 'নাগা পতাকা' উত্তোলন করা হয়।
নাগাদের স্বাধীনতা দিবস পালন
মনিপুরের বিভিন্ন গ্রামে 'নাগা স্বাধীনতা দিবস' পালনের একাধিক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। মনিপুরে নাগাদের জনসংখ্যা বেশি। মনিপুরের উরখুল জেলায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিলের একাধিক শীর্ষনেতার জন্মস্থান। এনএসসিএন-আইএন এর সাধারন সম্পাদক থুইঙ্গালে মুইভা সহ গ্রামের মানুষরা 'নাগা জাতীয় পতাকা' উত্তোলন করে স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। কিছু নাগা সংগঠনের মনিপুরের একাধিক নাগা গ্রামে ১৪ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবেশী নাগাল্যান্ডের একাধিক নাগা গ্রামে ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়। বিদ্রোহী গোষ্ঠী শিবিরেও 'নাগা জাতীয় পাতাকা' উত্তোলন করা হয়। তবে মনিপুর ও নাগাল্যান্ডে নাগা জাতীয় পতাকার থেকে দেশের জাতীয় পাতাকা উত্তোলনের সংখ্যা অনেকটাই বেশি ছিল।
নাগা ছাত্রসংগঠনের দাবি
মনিপুরে অল নাগা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ১৫ অগস্ট জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নির্দেশের সমালোচনা করেছে। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে নাগাদের অনুভূতি ও ভাবাবেগে আঘাত করা হচ্ছে। উসকানি দেওয়া হচ্ছে। নাগাদের ছাত্র সংগঠনের তরফে প্রকাশ করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'নাগারা প্রথম থেকে ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে আসছে। আমরা আশা করব মনিপুর সরকার ইতিহাসের এই দিকটা বিবেচনা করবে। প্রধানমন্ত্রী স্তরে ইন্দো-নাগা শান্তি আলোচনা হচ্ছে। একটি রাজনৈতিক আলোচনাও চলছে। তারমধ্যে এই ধরনের আদেশ আলোচনার উৎসাহে আঘাত হানতে পারে। নাগাদের ভাবাবেগকে অস্বীকার করে মনিপুর সরকার এই নির্দেশ দিয়েছে। আমরা কোনও পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেব না।'
কেন্দ্রের সঙ্গে নাগা সংগঠনের বৈঠক
১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিলের চরমপন্থীরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। ভারতের থেকে পৃথক করে রাখার এটি একটি প্রচেষ্টা ছিল। কেন্দ্রের সঙ্গে সাতটি নাগা চরমপন্থী সংগঠনের ইতিমধ্যে শান্তি আলোচনা চলছে। কিন্তু সাত দশকের বেশি সময় ধরে চলা এই রাজনৈতিক আলোচনা শান্তিপূর্ণ সমাধান কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরমপন্থী সংগঠনগুলো নাগা জাতীয় পতাকা ও নাগা সংবিধানের স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে। যা কোনওভাবেই কেন্দ্র মেনে নিতে চাইছে না।